v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
লিসবন চুক্তি কার্যকর হচ্ছে
2009-10-06 17:58:11
     অক্টোবর আয়ারল্যান্ডের গণভোটে অপ্রত্যাশিতভাবে সর্বাধিক ভোটে "লিসবন চুক্তি" গৃহীত হয়েছে । এভাবে ইউরোপের একীকরণের পথে বৃহত্তম বাধা দূর হলো । যদি চেক ও পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টগণ তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিগ্গিরই এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং বৃটেনের রক্ষণশীল শক্তি আর প্রবিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে , তাহলে বহু বছরের প্রচেষ্টার পর আগামী ১ জানুয়ারী ইইউ'র এ নতুন শাসনতন্ত্র কার্যকর হবে । এর মধ্য দিয়ে ইইউ ইউরোপের একীকরণের পথে একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ।

    এ বলিষ্ঠ পদক্ষেপের প্রধানত তিনটি দিক রয়েছে । প্রথমত "লিসবন চুক্তি" কার্যকর হওয়ার পর ইইউ'র তিনটি প্রধান সংস্থা অর্থাত ইইউ' পরিষদ , ইইউ' কমিটি ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ক্ষমতা সম্প্রসারণ করা হবে । তার মানে ইইউ'র সদস্য দেশগুলোর কিছু ক্ষমতা ইউরোপের এ তিনটি প্রধান সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে । পাশাপাশি ইইউ'র তিনটি প্রধান সংস্থার কার্যকারিতা বহুলাংশে বাড়ানো হবে । লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ইইউ'র নীতি নির্ধারণের প্রক্রিয়া বিপুলমাত্রায় সহজতর করা হবে । কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি দেশের বিরোধিতার কারণে একটি নীতি বাস্তবায়িত না হওয়ার বিব্রতকর অবস্থার অবসান ঘটবে ।

    দ্বিতীয়ত লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি নতুন চেহারা নিয়ে আবির্ভূত হবে এবং একটি আওয়াজ দিয়ে তার বক্তব্য রাখবে । এভাবে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মঞ্চে ইইউ'র প্রভাব অনেক বাড়বে । লিসবন চুক্তি অনুসারে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইইউ'র প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী – এ দুটি পদ রাখা হবে । ইইউ'র প্রেসিডেন্ট অর্থাত ইইউ পরিষদের চেয়ারম্যান বর্তমান ইইউ'র পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানের সমমর্যাদার । বহু বছর ধরে ইইউ' পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরই পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানরা নিযুক্ত হন । আধা বছর পর পর তারা এ পদে নিযুক্ত হয়ে থাকেন । প্রতিটি সদস্য দেশ দশ বারো বছরের মধ্যে একবার এ পদে নিযুক্ত হতে পারে । এভাবে পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশের নেতাদের পক্ষে ইইউ'র পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের প্রভাব খাটানো কষ্টকর ছিল । লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর এ পালাক্রমিক ব্যবস্থার অবসান ঘটবে । ইইউ'র বিভিন্ন দেশের নেতাদের ভোটের মাধ্যমে ইইউ' পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হবে । তার কার্যমেয়াদ আড়াই বছর স্থায়ী হবে এবং একটানা দুবার নির্বাচন করা যাবে ।

    তৃতীয়ত ইইউ'র পূর্ব সম্প্রসারণের উদ্যোগ আবার শুরু করা হবে এবং ইইউ'র মানচিত্র আরো সম্প্রাসিরত হবে । ২০০৪ সালে ব্যাপকভাবে ইইউ'র সম্প্রসারণের পর ইইউ কেবল ২০০৭ সালে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়াকে তার সদস্য দেশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেছে । তারপর ইইউ'র পূর্ব সম্প্রসারণের পদক্ষেপ প্রায় বন্ধ রয়েছে । লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ইইউ'র নীতি নির্ধারণ ও পরিচালনা ব্যবস্থার কার্যকারিতা অনেক বাড়বে । এটি ইইউ'র পূর্ব সম্প্রসারণের জন্যে বলিষ্ঠ ভিত্তি স্থাপন করবে । এ চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ক্রোয়েশিয়া ও আইসল্যান্ড অল্প দিনের মধ্যে ইইউতে অন্তর্ভূক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে । এভাবে নিরন্তর সম্প্রসারিত ও একীকরণের পথে অগ্রসর হওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিসন্দেহে নতুন বিশ্বের কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ মেরুতে পরিণত হবে ।

    ইইউ এ মাসের শেষ দিকে শরত্কালীন শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবে । এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইইউ'র বিভিন্ন দেশ এখন থেকে নানা ক্ষেত্রে নতুন দফা লড়াই শুরু করেছে , যাতে ইইউ'র প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং ইইউ কমিটি নতুন সদস্যদের নানা পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজ নিজ সর্বাধিক স্বার্থ হাসিল করা যায় । লিসবন চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর বিভিন্ দেশ ইউরোপের একীকরণের আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যত সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছে বলে তারা নিজেরাই ইইউ'র নতুন চেহারার প্রতিনিধিত্ব করতে চায় ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China