v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
চীনের সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার প্রস্তাব বিশ্বের সুন্দর নীল নক্সা বর্ণনা করেছে
2009-09-29 18:41:35
    সুষম বিশ্ব – প্রাচ্যের বুদ্ধিসম্পন্ন এ শব্দ ঘন ঘন বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শোনা যাচ্ছে । বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যকার সম্পর্কের ধারণা ক্রমেই আরো বেশি দেশের স্বীকৃতি পাচ্ছে ।

    ২০০৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ভাষণ দেয়ার সময় সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার প্রস্তাব পেশ করেছেন । তিনি বলেছেন , আমাদের উচিত বিভিন্ন দেশের নিজের সামাজিক ব্যবস্থা ও উন্নয়ন পথ বেছে নেয়ার অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন তরান্বিত করা , সমতার ভিত্তিতে সভ্যতার রকমারিতা রক্ষা করা , ভিন্ন সভ্যতার দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ ও বিনিময় বাড়ানো এবং মিলিতভাবে সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা চালানো । প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের এ বক্তব্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন ও দায়িত্ববোধ সম্পন্ন দেশ হিসেবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ , সমৃদ্ধ ও সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার আকাংখা প্রকাশ করেছে ।

    চীনের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইন্সটিটিউটের উপমহাপরিচালক চিং ছান রোন বলেন , সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার ধারণা চীনের ঐতিহ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত । এতে চীনাদের চিন্তাভাবনা ও সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে । সুষম সম্পর্ক বজায় রাখা প্রাচ্য দেশগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য । নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতি ও চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের নীতিতে চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি প্রতিফলিত হয়েছে ।

    চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীর বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতি গবেষণাগারের উপপ্রধান ওয়াং ই চৌ বলেন , গত ৬০ বছরে পঞ্চাশের দশকে চীনের পেশ করা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতি , ষাট ও সত্তরের দশকে তিনটি বিশ্বের তত্ব আর পুরনো আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে । চীনের পেশ করা সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার তত্ব আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ । নতুন শতাব্দীতে প্রবেশের পর গোটা পৃথিবী বড় পরিবর্তনের পর্যায়ে রয়েছে । অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন ও বহুমুখীকরণের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আগের চেয়ে আরো পারস্পরিক নির্ভরশীল হচ্ছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীল ও অনির্দিষ্ট উপাদানগুলো বিশ্ব শান্ত ও উন্নয়নের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে । কাজেই শান্তি ও উন্নয়ন মানব সমাজ উন্নয়নের প্রধান প্রবণতায় পরিণত হয়েছে।

    ঠিক এ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে চীন জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণের ভিত্তিতে সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার প্রস্তাব পেশ করেছে এবং দৃষ্টান্ত হিসেবে দ্বিপক্ষীয় বা বহু পক্ষীয় বিনিময়ে সহযোগিতা বাড়ানো বা সংঘর্ষ নিরসনে চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুষম সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছে । এতে চীনের দায়িত্বশীল দেশের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । চীনের বাস্তব পদক্ষেপ আরো বেশি দেশের সমর্থন ও সমঝোতা পেয়েছে ।

    চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান ইউয়ে ইয়ু ছেন বলেন , প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার প্রস্তাব পেশ করার পর চার বছর পার হয়ে গেছে , এ সময়েবিশ্বে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে । বিশেষ করে এ বছর আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট প্রমান করেছে যে বিশ্বে শান্তি , স্থিতিশীলতা ও সুষম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন । আর্থিক সংকট ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন , জ্বালানী ও খাদ্য নিরাপত্তা এবং গুরুতর সংক্রামক রোগ প্রতিরোধসহ বিভিন্ন সমস্যা বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা ছাড়া সমাধান সম্ভব হবে না ।

    ২০০৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আরেকবার বলেছেন , সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত মিলিতভাবে স্থায়ী শান্তি ও অভিন্ন সমৃদ্ধি বাস্তবায়নের জন্য সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China