v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যায় ভারত চাপের মুখে পড়ছে
2009-09-24 13:34:41
     যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গে অনুষ্ঠেয় জি ২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য ভারতের প্রধান মন্ত্রী মনোমহন সিং ২৩ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয় হবে এবারের বার্ষিক সম্মেলনের অন্যতম আলোচ্য বিষয় । মনোমহন সিং রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে ভারত নিজের মৌলিক অবস্থান ব্যক্ত করবে। জনমত অনুযায়ী, অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের দেশ হিসেবে ভারত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বড় চাপের মুখে পড়েছে।

     সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে ভারতের ওপর পাশ্চাত্য দেশগুলোর চাপ কোন দিন থামেনি। তারা ভারতকে বিষাক্ত গ্যাস নিগর্মনের ব্যাপারে আরও বেশী দায়িত্ববান হওয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু ভারত মনে করে , একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এ ক্ষেত্রে ভারতের কোন দায়িত্ব বহন করা উচিত নয় বরং উন্নত দেশগুলোর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় সরাসরি শুদ্ধ জ্বালানী প্রযুক্তি ব্যবহৃত পর্যায়ে রুপান্তরিত হওয়া উচিত।

     ক্ষমতাসীন পাটি—ভারতের কংগ্রেস ভালভাবে জানে যে, বতর্মানে ভারতের সম্মুখীন হওয়া সবচেয়ে বড় সমস্যা হল অর্থনৈতিক উন্নয়ন। অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ছাড়া ভারতের সম্মুখীন হওয়া সকল সমস্যার সমাধান অসম্ভব। সুতরাং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতের অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধি বজায় রাখা কংগ্রেস পাটির নেতৃত্বাধীন সরকারের সবচেয়ে জরুরী কাজ। কিন্তু ভারতের ভিত্তিগত শিল্প বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত বেশী কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদানযোগ্য নির্মান শিল্পের উন্নয়নের গতি খুব মন্থর । গত শতাব্দীর নব্বই দশক থেকে ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কার শুর হয়। যার মাধ্যমে অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এখন পযর্ন্ত ৭০ শতাংশেরও বেশী লোক দরিদ্র এবং তারা অধিকাংশই গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে। অনেক লোক দারিদ্র সীমার নীচে জীবনযাপন করছে। তাদের জন্য পানীয় জল ও বিদ্যুত সরবরাহ পাওয়া কঠিন। শিল্পায়ন ছাড়া বিশেষ করে ব্যাপকভাবে ভিত্তিগত ও নির্মান শিল্প বিকশিত না করা হয় ভারত বতর্মানের কঠিন কর্মসংস্থান সমস্যা মোকাবিলা করতে পারে না। অথচ অর্থনৈতিক উন্নয়ন জ্বালানী ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে নিবিড় সংযুক্ত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে কয়লা ও তেলের ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি গ্রীন হাউস গ্যাসের নিগর্মনও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভারত স্বদেশের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করেছে।

    ভারত এ সব দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি করতে পারে কী না, এ প্রসঙ্গে ভারতের বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে মনে করেন যে, যদিও ভারতের পযার্প্ত পানি ও বিদ্যুত সম্পদ আছে, তবুও ভারত নতুন জ্বালানী সম্পদের অনুপাত বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু ভারতের শিল্পের ভিত্তি দুর্বল বলে অদুর ভবিষ্যতে ভারতের জন্য শুদ্ধ জ্বালানী প্রযুক্তি ব্যবহার পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। সুতরাং, ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত উচ্চ পরিমাণে জ্বালানী ব্যবহারকারি নির্মান শিল্প বিকশিত করতে বাধ্য হবে। আসলে এই পর্যায় ভারত এড়াতে পারবে না।

     অন্য দিকে কোনো কোনো বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিষাক্ত গ্যাস নিগর্মনের ব্যাপারে যদি ভারত অব্যাহতভাবে পাশ্চাত্য দেশগুলোর সঙ্গে মন কষাকষি করে থাকে তাহলে চলতি বছরের শেষের দিকে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে ভারত প্রতিকুল অবস্থায় থাকবে। এর সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের পারমাণবিক জ্বালানী সহযোহিতা প্রভাবিত হবে।

     ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী নয়া দিল্লিতে বলেছেন, বিষাক্ত গ্যাস নিগর্মনের ব্যাপারে ভারত সম্ভাবত আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপ নেবে। জলবায়ু পরিবর্তন অস্থানে ভারত নিজস্ব উন্নয়নের অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কেমন করে দেশের অবস্থান পুনরুদ্ধার করবে তা পযর্বেক্ষনসাপেক্ষ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China