v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
গত ৬০ বছরে চীন নানা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঔজ্জ্বল্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে
2009-09-24 18:41:12

গত সপ্তাহে চীনের বিখ্যাত লেখক ওয়াং মেং " পিপলস ডেইলী" পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে ৬০ বছরে নয়া চীনের পরিবর্তনের কথা স্বরণ করে বলেছেন , চীনের আজকের সাফল্য সহজে আসেনি । স্বচোখে ১৯৪৯ সালে নয়া চীনের প্রতিষ্ঠা এবং গত ৬০ বছরে চীনা সমাজের বিরাট অগ্রগতি দেখেছেন বলে ৭৫ বছর বয়সী ওয়াং মেং এ মন্তব্য করেছেন ।

এর আগে রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে , চীন অনেক বেশি দুর্দশায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং কখনো বিপদে পড়ে যায় নি । মিঃ ওয়াং মেং হোক বা রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম হোক সবাই একমত হয়েছে যে, চীনা জাতির লাখ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিলিতভাবে অসুবিধা কাটিয়ে উঠেছে । চীনা জাতির এই মনোবল চীনা জাতির কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসে এবং গত ৬০ বছরের নয়া চীনের ইতিহাসে বিস্তার করে যাচ্ছে ।

বহু চীনা মানুষের পক্ষে এটা যেন গতরাতের দুঃস্বপ্ন । ২০০৮ সালের ১২ মে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায়এক লাখ চীনা লোক প্রাণ হারিয়েছে । পরিচিত ওয়েনছুয়ান জেলা মুহুর্তে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে । আকস্মিক দুর্দশা সারা চীনকে অলিম্পিক গেমসের আনন্দ ও আবেগ থেকে ভূমিকম্পের দুঃখ ও মনের ব্যথায় ফেলে দিয়েছে । তাসত্ত্বেও আগের বিপদের সম্মূখীন হওয়ার মতোই এবারের ভূমিকম্পের মুহুর্তে ১৩০ কোটি চীনারা মিলিত হয়ে দুঃখকে পুনর্গঠন ও পুনর্জীবিত থাকার শক্তিতে পরিনত করেছে ।

আমি বিশ্বাস করি , যে কোনো অসুবিধা বীর চীনা জনগণকে ভয় দেখাতে পারবে না । চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও দুর্গত এলাকায় এ কথা বলেছেন । ভূমিকম্প পাহাড়কে সরাতে পারে, নদীর স্রোতে বাধা দিতে পারে । তবে আমাদের জনগণের মনোবল নড়াতে পারবে না । ভূমিকম্প আমাদের পরিবার আমাদের পরিবারপরিজনদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বটে । কিন্তু বেঁচে থাকা লোকদের উচিত অব্যাহতভাবে জীবিত থাকা এবং আগের চাইতে আরও ভাল করে থাকা । এক বছর পর এক পুরোপুরি নতুন ওয়েনছুয়ান সবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে ।

মানবজাতির ইতিহাস উন্নয়নের প্রকিয়ায় চীনা জাতি নানা অসুবিধা ও কষ্ট কাটিয়ে বিরামহীনভাবে অগ্রসর হয়েছে । নয়া চীনের ৬০ বছরের গতিধারা একটি প্রশংসনীয় ইতিহাস । এ সময়পর্বে চীন নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছিল । বিংশশতাব্দীর ৫০ ও ৬০-এর দশকের প্রথম দিকের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ১৯৭৬ সালের থাংশান ভয়াবহ ভূমিকম্প, ১৯৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যা এবং ২০০৩ সালের সার্সসহ চীন বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে । এ সময়পর্বে একটি অনুন্নত দেশ হিসেবে চীন পাশ্চাত্যের অবরোধ ও নিঃসংগতার সম্মুখীন হয়েছিল এবং ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত একটানা ১০ বছর ধরে " মহা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের" আঁকাবাঁকা পথে চলেছিল। কিন্তু চীনারা কখনো নিজের পথ হারায়নি । ১৯৭৮ সালে চীনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ শুরু হয়েছে । এর পরের ৩১ বছরে চীনে ব্যাপকঅগ্রগতি হয়েছে । এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ছিন সিয়াওইং বলেন , সে সময় আমি চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীতে কাজ করি । আমাদের শ্লোগান হল, দশ বছরের যে সময় নষ্ট হয়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যেই তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করো" । প্রয়াত নেতা তেন সিয়াওপিংসহ চীনা জনগণ দিন রাত কাজ করেছেন । আমাদের প্রবল আশাআকাঙ্ক্ষা হল, যততাড়াতাড়িসম্ভব চীনে আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করা ।

তিনি বলেন, চীনা জনগণের মিলিত প্রচেষ্টায় চীন একটি অত্যাচারিত জাতি থেকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র দেশে এবং অনুন্নত আর্থ-সামাজিক অবস্থা থেকে প্রাথমিক সমৃদ্ধিশালী ও স্বচ্ছল সমাজে পরিণত হয়েছে ।

আমরা স্পষ্টভাবে জানি যে , গত ৬০ বছরে চীনের যে অগ্রগতি হয়েছে তা সহজে আসেনি । তাই আমাদের উচিত তাকে মূল্যবান করে মনে করা । চীন এখন একটি ১৩০ কোটি লোকসংখ্যাসম্পন্ন দেশ । অসুবিধা যত বড় হোক না কেন ১৩০ কোটি লোকসংখ্যার সামনে তা নগন্য হয়ে যাবে । লাখ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে নয়া চীনের ৬০ বছরের সাফল্য অর্জন করেছে । চীনা জনগণের এই মনোবল নয়া চীনের পরবর্তীকালের উন্নয়নে অব্যাহতভাবে ভূমিকা পালন করবে ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China