v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
চীনে বর্তমানে সমুদ্রের মধ্যে যে সেতু রয়েছে এর নাম কি?
2009-09-17 17:17:47
বাংলাদেশের ফরিদপুরের ডুমাইন বেতার শ্রোতা ক্লাবের সভাপতি ফরহাদ হোসেন জানতে চান, চীনে বর্তমানে সমুদ্রের মধ্যে যে সেতু রয়েছে এর নাম কি? চীনে এখন সমুদ্রের মধ্যে মোট ৫টি সেতু রয়েছে। এ ৫টি সেতু হল সিয়াচাং অন্তঃসমুদ্র সেতু, হাংচৌ উপসাগর অন্তঃসমুদ্র সেতু, ছিংতাও অন্তঃসমুদ্র সেতু, সাংহাই অন্তঃসমুদ্র সেতু ও চৌশান অন্তঃসমুদ্র সেতু। এর মধ্যে হাংচৌ উপসাগর অন্তঃসমুদ্র সেতু হল বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ও নির্মাণ সবচেয়ে কঠিন অন্তঃসমুদ্র সেতু। চৌশান অন্তঃসমুদ্র সেতু হাইওয়ের মান অনুযায়ী নির্মিত হয়।

বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগন্ঞ্জ জেলার বরেন্দ্র বেতার শ্রোতা সংঘ ক্লাবের মাস্টার আব্দুল মান্নান জানতে চেয়েছেন যে, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে যে হাইওয়ে আছে তার নাম কি? প্রশ্নের জবাব হচ্ছে চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে এখনো কোনো হাইওয়ে নেই। তিনি আরেকটি প্রশ্ন করেছেন যে, ছোট বড় সব মিলিয়ে চীনে নদীর সংখ্যা কত? আপনার এ প্রশ্নের জবাব বলছি, চীনের নদী ছোট বড় সব মিলিয়ে অসংখ্য। কোনো কোনো নদী সমুদ্রে প্রবেশ করেছে। যেমন, চীনের মাতৃ নদী হোয়াংহো নদী, ইয়াংসি নদী, হোলংচিয়াং নদী, চুচিয়াং নদী, হাইহো নদী, হুয়াইহো নদী ও ছিয়ানথাংচিয়াং নদী। এছাড়া কোনো কোনো নদী অভ্যন্তরীণ হ্রদে প্রবেশ এবং মরু ভূমিতে গিয়ে শেষ হয়েছে। যেমন সিনচিয়াংয়ের তালিমু নদী।

বাংলাদেশের পাবনা জেলার পাছশুয়াইল রেডিও শ্রোতা ক্লাবের এস,এম,এ, হান্নান পাঁচটি প্রশ্ন করেছেন। আপনার প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, চীনা সংবিধানের লেখকের নাম কি? জবাব হচ্ছে চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেস চীনা সংবিধান প্রণয়ন করে। দুই: চীনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলোর মধ্যে ভয়াবহ কোনটি? অন্যান্য দেশের মত চীনে ভয়াবহ দুর্যোগ রয়েছে। যেমন ভূমিকম্প, টাইফুন, ঝড় ইত্যাদি। এসব দুর্যোগ হল সারা বিশ্বের সম্মুখীন চ্যালেন্ঞ্জ। আমরা দুর্যোগ বন্ধ করতে পারি না, কিন্তু আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে আসছি। তিন: চীনে সবচেয়ে উচ্চ ফলনশীল ধান কোনটি? জবাব হচ্ছে চীনের বিখ্যাত্ কৃষিবিদ ইউয়ান লংফিং সঙ্গ ধানের বাবা বলে পরিচিত। তাঁর গবেষণা করা সুপার সংঙ্গ ধান চীনের সবচেয়ে উচ্চ ফলনশীল ধান। চার: চীনের রাজনৈতিক দল বা পার্টি কয়টি এবং বিরোধী দল কয়টি? শ্রোতা বন্ধু আপনার এ প্রশ্নের জবাব বলছি, চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন বহুদলীয় সহযোগিতা ও রাজনৈতিক পরামর্শ ব্যবস্থা চীনের একটি মৌলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা । চীনে একাধিক রাজনৈতিক দল আছে । ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি ছাড়া আরো আটটি গণতান্ত্রিক দল আছে । এই সব গণতান্ত্রিক দল গণ প্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , কমিউনিষ্ট পার্টির সংগে দীর্ঘদিন সহযোগিতা করা আর মিলিতভাবে সংগ্রামের প্রক্রিয়ায় তারা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্ব সমর্থন করার অধিষ্ঠান বেছে নিয়েছে । চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দলকে সংবিধানকে তাদের মূল কর্মসুচী হিসেবে মেনে নিতে হবে । সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দল স্বাধীন । তারা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন এবং সমান আইনগত অধিকার পায়। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দলের সংগে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সহযোগিতার মৌলিক নীতি হলো দীর্ঘদিন সহাবস্থান করা , পরস্পরকে তত্ত্বাবধান ও বিশ্বাস করা আর সুখ - দুঃখের সমভাগী হওয়া । বন্ধু আপনার পঞ্চম প্রশ্ন হচ্ছে, চীনে মহাপ্রচীরের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। জবাব বলছি'বিশ্বের সাতটি বিম্ময়ের অন্যতম' হিসেবে আখ্যয়িত মহা প্রাচীর হচ্ছে বিশ্বের এমন একটি প্রাচীন কালের সামরিক প্রতিরক্ষা প্রকল্প যার নিমার্নের ইতিহাস সবচেয়ে দীর্ঘ এবং আকার সবচেয়ে বিশাল। এই সুমহান প্রাচীর চীনের ভূখন্ডে ৭ হাজার কিলোমিটারেরও বেশী বিস্তৃত হয়েছে। ১৯৮৭ সালে মহা প্রাচীর বিশ্ব উত্তরাধিকারের তালিকায় অন্তর্ভুর্ক্ত হয়। মহা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ খৃষ্টপূর্ব নবম শতাব্দী থেকে শুরু হয়। তখন মধ্য চীনের প্রশাসন উত্তরাঞ্চলের জাতির আক্রমন প্রতিরোধ করার জন্যে দেওয়াল দিয়ে সীমান্তে নির্মিত প্রহরা টাওয়ারগুলোকেঘেরাও করে। চীনের বসন্ত ও শরত যুগ আর যুদ্ধমান রাজ্যসমূহের যুগে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে অসংখ্যবার লড়াই হয়। বড় রাজ্যগুলোর মধ্যে পরষ্পরের আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সীমান্তের নিকটবর্তী পাহাড়ে মহা প্রাচীরের নির্মাণ শুরু করে। খৃষ্টপূর্ব ২২১সালে ছিন রাজবংশের প্রথম রাজা চীনকে একীকৃত করার পর আগের ছোট ছোট রাজ্যের নির্মিত মহা প্রাচীরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। আস্তে আস্তে আঁকাবাঁকা পাহাড়গুলোতে তৈরী এই প্রাচীর উত্তর সীমান্তের প্রতিবন্ধকে পরিণত হয়। যাতে উত্তর দিকের মঙ্গোলিয়ার বিস্তীর্ণ তৃণভূমির পুশুপালকদের আক্রমন প্রতিরোধ করা যায়। ছিন রাজবংশ আমলে মহা প্রাচীরের দৈর্ঘ্য ছিল ৫০০০ কিলোমিটার। ছিন রাজবংশের পর হান রাজবংশ মহা প্রাচীর আরও ১০ হাজার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে দেয় । দুই সহম্নাধিক বছর ধরে চীনের বিভিন্ন সময়পর্বের প্রশাসন ভিন্ন মাত্রায় মহা প্রাচীর নিমার্ন করে। বিভিন্ন রাজবংশ আমলে নির্মিত প্রাচীর এক সঙ্গে সংযুক্ত হলে তার মোট দৈর্ঘ্য ৫০ হাজার কিলোমিটারেও বেশী হতে পারে।তার মানে এই দৈর্ঘ্য পৃথিবীকে এক রাউন্ড ঘুরে আসার মত।

ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ইউথ রেডিও লিসনারস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট জোত্স্না বানু জানতে চেয়েছেন চীনের সুস্বাদু মাছ কি কি? আপনার প্রশ্রের জবাব হচ্ছে আসলে চীন একটি বড় দেশ। চীনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আবহাওয়া রয়েছে। সেজন্য চীনে বিশ্বের নানা ধরণের মাছ রয়েছে। আপনি এ প্রশ্ন করেছেন, তার মানে আপনি অবশ্যই মাছ খাওয়া খুব পছন্দ করেন। তাহলে আপনি চীনে আসবেন, আমি আপনাকে চীনের সুস্বাদু মাছ খাওয়াবো।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China