প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উর্ধতন সেনানায়কদের রীয়্যার সার্ভিস ফোরামের ৩৮তম আলোচনা সভা ৮ সেপ্টেম্বর পেইচিংয়ে শুরু হয়েছে। এবারের আলোচনা সভায় চীন পক্ষের চেয়ারম্যান, চীনের সাধারণ রীয়্যার সার্ভিস বিভাগের সেনাপতির দফতরের ডেপুটি স্টাফ প্রধান মেজর জেনারেল লিউ ওয়েই পিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, নয়া চীন প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরে চীনের সেনাবাহিনী রীয়্যার সার্ভিস ক্ষেত্রে লক্ষণীয়ভাবে এগিয়েছে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিনিময় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র জোরদার করেছে।
মেজর জেনারেল লিউ ওয়েই পিং বলেন, অর্ধ শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে বিকাশের পর চীনের সেনাবাহিনী সার্বিক আধুনিক রীয়্যার সার্ভিস প্রতিষ্ঠার কৌশলগত দিক উত্থাপন করেছে এবং রীয়্যার সার্ভিস ক্ষেত্রে নিজের প্রাধান্য পালন করেছে। তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সেনাবাহিনী সংযুক্ত রীয়্যার সার্ভিস ব্যবস্থায় সাফল্যের সঙ্গে সন্ত্রাস দমনে যৌথ সামরিক মহড়া, ভূমিকম্প উদ্ধার ও ত্রাণ এবং অলিম্পিকের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয়াসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অভিযান চালিয়েছে এবং সামরিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক মুনাফা ও বাস্তব যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য সফল তা পেয়েছে।'
মেজর জেনারেল লিউ ওয়েই পিং জোর দিয়ে বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামরিক রীয়্যার সার্ভিস ক্ষেত্রের বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করা, সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এবং হাতে হাত রেখে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের জনগণ ও সেনাবাহিনীর অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা এবং যুগ বিকাশের অপরিহার্য দাবিদার। তিনি বলেন, 'আমরা যৌথভাবে সন্ত্রাসবাদের ওপর আঘাত হানা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা, মানবিক সহায়তা প্রদান করা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর উদ্ধার তত্পরতা চালানো এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী তত্পরতায় অংশ নেয়াসহ নানা ক্ষেত্রের সামরিক রীয়্যার সার্ভিসের বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করতে এবং সক্রিয়ভাবে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের উপযুক্ত বাস্তব ও ফলপ্রসূ যৌথ নিশ্চয়তা ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে সমর্থন করি।'
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেনানায়ক রীয়্যার সার্ভিস ফোরাম ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠার পর সহযোগিতা ও অভিন্ন উপভোগের মূল নীতি অনুসরণ করে আঞ্চলিক সামরিক বিনিময় ও সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের সদস্য ও সাধারণ রীয়্যার সার্ভিস বিভাগের প্রধান জেনারেল লিও সি লোং জানিয়েছেন, 'চীন এবারের আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রমান করেছে যে, ফোরামের সদস্য দেশগুলো আর চীনের সেনাবাহিনীর রীয়্যার সার্ভিস ক্ষেত্রের সহযোগিতা আরো গভীর হবে। এবারের আলোচনা সভায় সেনাবাহিনীর যৌথ নিশ্চয়তা ব্যবস্থা স্থাপনকে মূল প্রসঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ থেকে প্রতিফলিত হয়েছে যে এ ফোরাম রীয়্যার সার্ভিসের বিনির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের ওপর অত্যন্ত মনোযোগ দিচ্ছে। এটা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের রীয়্যার সার্ভিসের সংস্কার ও উন্নয়ন করার অভিন্ন প্রত্যাশা।'
এবারের আলোচনা সভার মার্কিন পক্ষের চেয়ারম্যান, মার্কিন সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফের জয়েন্ট পরিষদের রীয়্যার সার্ভিস ব্যুরোর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ক্যাথলিন এম গায়নি এ ফোরামের ভবিষ্যত সম্ভাবনার ওপর আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'আমি অনেক আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু তা এ ধরনের আলোচনা সভা ছিল না। এ মূল্যবান সুযোগে বিভিন্ন দেশের রীয়্যার সার্ভিসের উর্ধতন কর্মকর্তারা সম্মিলিত হয়ে পরস্পরের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ, পারস্পরিক বিনিময়, অংশীদারিত্বের সম্পর্ক স্থাপন এবং এ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের জন্য বজায় রাখার চেষ্টা করেন। এটা হচ্ছে এবারের আলোচনা সভার মূল উদ্দেশ্য।'
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উর্ধতন সেনানায়কদের রীয়্যার সার্ভিস ফোরাম হচ্ছে বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল আর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সর্বোচ্চ ও সবচেয়ে ব্যাপক বহুজাতিক রীয়্যার সার্ভিস ফোরাম। এ ফোরামের ২৫টি সদস্য দেশ আর ৮টি পর্যবেক্ষক দেশ আছে। চীন ১৯৯৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফোরামের সদস্য দেশে পরিণত হয়েছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) |