v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিঃ অর্ধেক আনন্দ, অর্ধেক দুঃখ
2009-09-01 18:37:41
ভারত সরকারের ৩১ আগস্টের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত ভারতের জি.ডি.পি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.১ শতাংশ বেশি। যা এ বছরের প্রথম তিন মাসের চেয়ে ৫.৮ শতাংশ বেড়েছে। এটি হলো ২০০৭ সাল থেকে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার প্রথমবারের মতো বেড়েছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্টই যে, ভারতের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হচ্ছে। কিন্তু নানা উপাদান শেষার্ধ বছর অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অর্ধেক আনন্দ অর্ধেক দুঃখের অবস্থা দেখা দেবে।

ব্রিক দেশের মধ্যে অন্যতম ও এশিয়ার তৃতীয়তম অর্থনৈতিক গোষ্ঠি হিসেবে বিশ্বের আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ভারত কিছু মাত্রায় বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে কারণে সারা বিশ্ব ভারতের ওপর দৃষ্টি রাখছে। ভারতের টাইমস পত্রিকা থেকে জানা গেছে, অর্থ বছর (২০০৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০১০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত)'র প্রথম তিন মাসে(এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত), ভারতের জি.ডি.পি'র বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ। চীনের পর তা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভারতের অর্থ বছরে জি.ডি.পি'র ৬.৫ শতাংশে পৌঁছানোর জন্য তা অনুকূল হবে। সব দিক থেকে স্পষ্টই যে, ভারতের বৃদ্ধির গতি দ্রুত বাড়ছে এবং ধীরে ধীরে আর্থিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাব থেকে গড়ে উঠেছে।

ভারত সরকারের এক রিপোর্ট অনুযায়ী গত এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বিদ্যুত ও খনিজ সম্পদ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করেছে। যার বৃদ্ধির পরিমাণ যথাক্রমে ৬.২ ও ৭.৯ শতাংশ। ব্যাংকিং ও রিয়াল ইস্টেটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হয়ে উঠছে। ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প সেবা প্রদান শিল্প তিন মাসে বৃদ্ধির হার ৭.৮ শতাংশ। যা গত বছরের একই সময়ের ১০.২ শতাংশ চেয়ে কম। কিন্তু সেবা শিল্পে অন্তর্ভুক্ত ব্যাংকিং ও সফ্টওয়ারসহ বিভিন্ন শিল্পের পরিমাণ জি.ডি.পি'তে ৫৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে সেবা শিল্প এখনও ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। এ বছরের দ্বিতীয় তিন মাসে ভারতের বাণিজ্য, পর্যটন, পরিবহণ ও টেলি-যোগাযোগ শিল্পের অবস্থা উন্নতি হয় নি বলে অর্থনীতির ওপর তা প্রভাব পড়েছে।

ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যত নিয়ে ভারতের অর্থনৈতিক মহলের লোকজন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। ভারতের মন্ত্রীসভার অর্থনীতি বিষয়ক সচিব আশক ছয়ালা বলেছেন, এ বছরের দ্বিতীয় মাসে অর্থনীতির উন্নতির কারণে ভারত সরকার অর্থনীতির ভবিষ্যত নিয়ে ইতিবাচক অবস্থা পোষণ করেছে। চলতি অর্থ বছরে অর্থনীতির বৃদ্ধির হার পূর্বপরিকল্পিত ৬.৫ শতাংশে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু বেশ কয়েকজন বিশ্লেষকরা বলেছেন, খরা ও মৌসুমী আবহাওয়ার কারণে ভারতের কৃষির কম ফসলের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। তাছাড়া ভারতের ব্যাপক কৃষক ও ক্ষুদ্র উন্নত কৃষি অর্থনীতির কারণে শেষার্ধে জাতীয় অর্থনীতি বৃদ্ধির ওপর প্রভাব পড়বে। কারণ খরার কারণে খাদ্য বন্তুর দাম বাড়বে। অন্যদিকে সরকার কৃষকদের ভতুর্কি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তা আর্থিক বাজেটের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর তুয়াউরি সুবারা গত সপ্তায় বলেছেন, একদিকে ভারত অর্থনীতির বৃদ্ধি দুর্বল। অন্য দিকে খাদ্যবন্তুর দাম বাড়ার পরে মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনাও বাড়বে। সেজন্য ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার পুনর্বিন্যাস করা কঠিন হবে।

সে সব কারণে দ্বিতীয় তিন মাসে ভারতের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হয়ে উঠেছে বলেও অর্থনীতির বৃদ্ধির ভবিষ্যত নিয়েও ভারত সরকার সতর্কতার সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়। ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রনাব মুখোর্জি বলেছেন, ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যত অর্ধেক আনন্দ অর্ধেক দুঃখের অবস্থায় থাকবে। সরকারের উচিত সতর্কতার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, বিশ্বের আর্থিক সংকটের পরীক্ষায় ভারত সরকার অব্যাহতভাবে সংস্কার চালিয়ে যাবে। যাতে অর্থনীতির বৃদ্ধির হার আবারও ৯ শতাংশে দাঁড়াতে পারবে।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China