v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনার আংশিক ফলাফল প্রকাশিত, নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক
2009-08-26 15:37:18
আফগানিস্তানের স্বতন্ত্র নির্বাচন কমিশন ২৫ আগস্ট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আংশিক ফলাফল ঘোষণা করেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ভোটের সামান্য ব্যবধানে শীর্ষ স্থানে রয়েছেন। এর পাশাপাশি আফগানিস্তানে ভোটদান প্রক্রিয়ায় ভোট কারচুপি ও অসদোপায় অবলম্বন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উত্তপ্তবিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু লোক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আরো দাঙ্গাহাঙ্গামার দিকে ঠেলে দেবে।

আফগানিস্তানের স্বতন্ত্র নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দাউদ আলি নাজাফি ২৫ আগস্ট ঘোষণা করেছেন, ১০ শতাংশ ভোটে ৫ লাখ ২৪ হাজার বৈধ ভোট রয়েছে। হামিদ কারজাই'র ভোট পাওয়ার হার ৪০.৬ শতাংশ। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ'র ভোট পাওয়ার হার ৩৮.৭ শতাংশ। স্বতন্ত্র নির্বাচন কমিটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, পরবর্তী কয়েক দিনে প্রতিদিন নির্বাচনের কিছু কিছু ফলাফল প্রকাশিত হবে। চূড়ান্ত ফলাফল আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে।

এদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত রিচার্ড সি হলব্রুক তুরস্কে বলেছেন, বর্তমানের ভোট গণনার ফলাফল নির্ণয়ক ফলাফল নয়। এখন চূড়ান্ত ফলাফলের আলোচনায় তাত্পর্য নেই।

বিশ্লেষকগণ মনে করেন, যদিও বর্তমানে কারজাই ও আবদুল্লাহর ভোট পাওয়ার হারের ব্যবধান খুব কম, তবুও এ ১০ শতাংশ ভোটের মধ্যে বেশির ভাগ আবদুল্লাহর সমর্থনকারী তার বসবাসের এলাকা---উত্তর আফগানিস্তানে থেকে এসেছে। তবে কারজাই'র বেশি থাকা সমর্থনকারীর কান্দাহার প্রদেশে শুধু ২ শতাংশ ভোট রয়েছে। বর্তমানে কারজাইয়ের সমর্থক আরেকটি প্রদেশ--- হেলমান্দ প্রদেশের ভোট পরিসংখ্যান ঘোষণা করে নি। ভোট গণনা সার্বিকভাবে চালানোর সঙ্গে সঙ্গে কারজাই'র ভোট পাওয়ার হার অব্যাহতভাবে বেড়ে যাবে। উল্লেখ্য, প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনের ভোটদানের হার শুধু ৩৫ শতাংশ। ২০০৪ সালে আফগানিস্তানে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ভোট দানের হার ছিল ৭০ শতাংশ।

বর্তমানে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট কারচুপির নিয়ে চলছে উত্তপ্ত বিতর্ক । ২৫ আগস্ট আফগানিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী আশরাফ গনিসহ আফগানিস্তানের ছ'জন প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তারা স্বতন্ত্র নির্বাচন কমিশন ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভোট কারচুপির সংশয়ের ওপর প্রতিক্রিয়া জানানোর দাবি জানিয়েছেন। আবদুল্লাহ নির্বাচন কমিশনের আংশিক ফলাফল প্রকাশের আগে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। তার নির্বাচনী প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দু'শরও বেশি অভিযোগ পেশ করেছে। তিনি বলেছেন, তিনি ভোট কারচুপির ফলাফল গ্রহণ করবেন না। জানা গেছে, আফগানিস্তানের নির্বাচনী অভিযোগ কমিশন আট শ'টি অভিযোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যেই ৫৭টি অভিযোগ নির্বাচনের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার লক্ষ্য এসব অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে তদন্ত করছে।

বিশ্লেষকগণ বলেছেন, আফগানিস্তানের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আরো বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি জনগণ বিতর্কের কারণে সহিংসতার উদ্বেগও অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আফগানিস্তানের বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, কারজাই ও আবদুল্লাহ আফগানিস্তানের দুটি জাতি পশতুন ও তাজিক পক্ষ থেকে আগত। নির্বাচনের বিতর্কের কারণে আফগানিস্তানে আরও দাঙ্গাহাঙ্গামা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ২৫ আগস্ট কারজাই'র মুখপাত্র হুময়ুন হামিদজাদা এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, আফগান সরকারের নির্বাচন বিতর্কে সহিংসতা মোকাবিলার সামর্থ্য রয়েছে।

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের তালিবানদের সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহতভাবে চলছে। নির্বাচনের কিছু ফলাফল প্রকাশের পর কান্দাহার প্রদেশের কান্দাহার শহরে একটি আত্মঘাতী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪০জনেরও বেশি নিহত এবং ৮০জনেরও বেশি আহত হয়েছে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়।(লিলু)

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China