চীন ও কেনিয়া শিক্ষা ক্ষেত্রের বিনিময় ও সহযোগিতা ত্বরান্বিত এবং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া প্রতিশ্রুতি অব্যাহতভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চীন সরকারের স্কলারশীপ দেয়া কেনিয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের চীনে এসে অধ্যায়ন করার ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি কেনিয়ায় চীনের দূতাবাস চীন সরকারের স্কলারশীপ পাওয়া ৩৮জন ছাত্র-ছাত্রীকে বিদায়-সম্বর্ধনা দিয়েছে। আগস্ট মাসের শেষে এসব ছাত্র-ছাত্রী চীনে এসে লেখাপড়া করবে। আজকের অনুষ্ঠানে এ সব ছাত্র-ছাত্রীর গল্প আপনাদের শুনাবো।

গাথিবু এনডেগওয়া, ডেভিড মানায়াঙ্গা ,মোনিকা তালু ......
আপনারা শুনেছেন এসব ছাত্র-ছাত্রীর নামের তালিকা।

মোনিকা তালু তাদের মধ্যে একজন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি পেইচিং ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের চীনা ভাষা কোর্স গ্রহণ করবেন। এর পর তিনি তা লিয়েন সামরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যটন পরিচালনা বিভাগে লেখাপড়া করবেন। চীন সরকারের স্কলারশীপ পাওয়ার সুযোগের মাধ্যমে তিনি যে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন তাই নয়, বরং তার পরিবারকে গৌরব এনে দিয়েছেন। এ জন্য তার মা, ফুফু ও তার দুজন ছোট বন বেশ দূরে থেকে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। মোনিকা তালু বলেছেন,
প্রথমতঃ আমি চীন সরকারের প্রতি আমাকে অব্যাহত চীনে লেখাপড়ার সুযোগ দেয়ার জন্য ধন্যাবাদ জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, চীনে আসার পর আমাদের আরও উচুঁ উন্নয়নের লক্ষ্য থাকবে। আমি চীনের জীবনের ব্যাপারে আশাবাদী। আমি আরো বেশি চীনা বন্ধুকে জানতে চাই, চীনা ভাষার মান উন্নত করতে চাই এবং চীনের অর্থনীতি দ্রুত উন্নয়নের কারণ অনুসন্ধ্যান করতে চাই।

১৯৮২ সাল থেকে চীন সরকার প্রতি বছর কেনিয়ায় দশটি সরকারী স্কলারশীপের সুযোগ দিচ্ছে। ২০০৬ সালে চীন ও আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনের পর চীনে কেনিয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশীপ দেয়ার সুযোগ আরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পর্যন্ত চীনে কেনিয়ার ছাত্র-ছাত্রী সরকারী স্কলারশীপ পাওয়ার সংখ্যা ১৪৭জন। কেনিয়ায় চীনের রাষ্ট্রদূত তেং হোং পো বিদায়-সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেছেন, চীন সরকারের দেয়া স্কলারশীপ কেনিয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের চীনকে আরো জানতে ও বুঝতে পারা এবং দু'দেশের জনগণের মৈত্রী আরো বেশি গভীর করার ভালো সুযোগে পরিণত হবে। তিনি বলেছেন,

এ ৩৮জন ছাত্র-ছাত্রী চীনে লেখাপড়ার জীবন শুরু হবে। এ জন্য আমি খুব খুশি। এটি চীন ও কেনিয়ার সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। দু'দেশ শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়। এ উত্কৃষ্ট ঐতিহ্য দু'দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে।
জানা গেছে, কেনিয়ার এ ৩৮জন চমত্কার ছাত্র-ছাত্রী কেনিয়ার উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা বিভাগের কয়েক দফা কঠিন পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই হয়েছেন। তারা চীনে তিন থেকে ছয় বছরের লেখাপড়া করবেন। তাদের শিক্ষার বিষয়ে চিকিত্সাবিদ্যা, কম্পিউটার, রসায়নবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা , মহাশূন্য গবেষণা, পূর্তকর্ম, স্থাপত্যবিজ্ঞান ও টেলিযোগাযোগ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। কেনিয়ার উচ্চ শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীকিলেমি মওয়িরিয়া বলেছেন, কেনিয়ার আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রের উন্নয়নে ব্যাপক দক্ষ জনশক্তি দরকার। চীনের বহু ক্ষেত্রের শিক্ষার মান এখন বিশ্বের শীর্ষ স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। চীনে লেখাপড়ার জন্য কেনিয়ার ছাত্র-ছাত্রীরা আরো ভালো সুযোগ পেতে পারে। এর পাশাপাশি এর আগে চীন একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ কিছু সফল অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেনিয়ার ছাত্র-ছাত্রী চীনে লেখাপড়ার সময় এসব সফল অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারবে। এটি কেনিয়ার উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে। তিনি বলেন,

আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি আশা করি, আপনারা এ সুযোগের মাধ্যমে নিজেদের উন্নত করবেন, সমাজে সেবা করবেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করবেন। আশা করি, আপনারা চীনে সুখে থাকবেন। তাছাড়া, আমি আশা করি, আপনারা লেখাপড়ার শেষে কেনিয়ায় ফিরে আসার সময় অনেক বিশেষ ও অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন এবং দেশের ভবিষ্যের উন্নয়নের জন্য অবদান রাখবেন।
আসসালাম আলাইকুম। আমি ওয়েন তো । আমি চীনা গান গাইতে খুব পছন্দ করি। আমি কারোল কেন্ডি, আমি চীনা ভাষা শিখতে খুব আগ্রহী। চীনের সংস্কৃতি খুব চমত্কার।

এসব ছাত্র-ছাত্রীর মনে চীন কেবল একটি প্রাচীন ও রহস্যময় দেশ তাই নয়, বরং জ্ঞান অর্জনের একটি ভালো দেশ। শিগগিরই তারা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবেন। তারা চীনে পৌঁছবেন। ছাত্র-ছাত্রীরা বলেছেন, তারা এ দুর্লভ সুযোগের অব্যশই সদ্ব্যবহার করবেন। কেনিয়া ও নিজেদের স্বার্থেই ভালোভাবে লেখাপড়া করবেন এবং ভবিষ্যতে আফ্রিকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবেন। |