যে গানটি আপনারা শুনছেন তা হলো এ এলবামের একটি গান "আমি বিশ্বাস করি"। এটা হলো তাইওয়ানের বিখ্যাত সঙ্গীত লেখক হা হো হুয়ার ২০০৮ সালের প্রতিবন্ধী অলিম্পিকের জন্য লেখা একটি গান। এটি একটি উত্সাহদানকারী গান। গানটি শুনে মানুষের মনে শক্তি'র সঞ্চার হবে।
গানে বলা হয়, আমি উড়তে পারি তা বিশ্বাস করি। পাঁখা হারিয়ে গেলে বোঝা যাবে থাকলে কত ভাল। আমি মন দিয়ে শোনবো অন্যদের কথা। তাহলে পৃথিবী আরো সুন্দর হতে পারে। আমি পেতে পারি তা বিশ্বাস করি। আশা দিয়ে জীবন প্রজ্জ্বলিত হলে আর কোন দুঃখ হবে না। আমি চোখ বুজেও পৃথিবীকে দেখতে পারি। কষ্ট শুধু আমাকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলবে। আমি তাকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করি।
জুয়াং নি ২০০৭ সালে তার প্রথম এলবাম প্রকাশ করেছেন। তার কন্ঠস্বর খুব আকর্ষণীয়। কিন্তু প্রচারের অভাবে তার প্রথম এলবাম তেমন জনপ্রিয় হয়নি। ২০০৮ সালে তিনি রিকর্ডিং কোম্পানি পরিবর্তন করেছেন। তারপর হা হো হুয়ার সঙ্গে "আমি বিশ্বাস করি" গানটি তৈরী করেছেন।
এখন যে গানটি আপনারা শুনছেন তা হলো জুয়াং নি'র গাওয়া "নতুন চারটি ঋতু"। জুয়াং নি চীনের ঐতিহ্যিক গান "চারটি ঋতু"র ভিত্তিতে এ গানটি নতুন করে তৈরী করেছেন। পশ্চিম চীনের ছিং হাই প্রদেশে এ গানটি খুব জনপ্রিয়। এ গানে চার ঋতুতে ফোটা ফুলের কথা এবং ফুলটিকে ভালবাসার মেয়ে'র সৌন্দ্যর্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এ গানটি শুনলে যেন মনও ভাল হয়ে ওঠে।
এ গান নিয়ে জুয়াং নি বলেন:
"আমি মনে করি অনেকেই পুরানো গান পছন্দ করেন। এবং নতুন গান আসলে তাদের মন কেড়ে নেয়া সহজ নয়। তাই তাদের জন্য আমি একটি পুরানো গান গাইবো। এ পুরানো গানের মধ্যে আবার কিছু নতুন মিউজিক উপাদান যোগ করেছি। ওরিজিনাল টাইপের গানে যেন বনের বাতাস, খুব ভাল লাগে।
জুয়াং নি'র কন্ঠস্বর খুব মধুর। তার গান শুনে মানুষের মনও উড়ে যায়। এখন আমরা এ এলবামের আরেকটি গান "তোমার ভালবাসা দেখতে পারি না" শুনবো। এ গানটিতে ভালবাসা হারিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েদের দুঃখ পাওয়ার অনুভূতির কথা প্রকাশ করা হয়েছে।
গানে বলা হয়, ভালবাসার কথা আসলেই মিথ্যে। কেন এ কথাগুলো আমি ভুলতে পারি না। সময়ের পেছনে হলো মিথ্যে। মানুষের আসল ধারণা বুঝতে পারি না। আমি শুধু স্মৃতিতে আঘাত পাই। অবশেষে আবার একা একা।
জুয়াং নি'র এ এলবামের প্রতিটি গানের ধরন ভিন্ন। যেমন এ "কান্নাকাটি" গানটি খুব দুঃখের গান। প্রতিটি গানের মধ্যে জীবনের অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। এখন একসাথে শুনি "কান্নাকাটি" গানটি।
এ গান রচনার পেছনের গল্প নিয়ে জুয়াং নি বলেন, ছোটবেলা থেকেই তাবু গান গাওয়ার প্রতি ছিল ঝোঁকি । ছোটবেলা থেকে তিনি বিভিন্ন সংগীত প্রতিযোগিতায় অসংখ্য পুরষ্কার পেয়ে আসছেন। তার জন্মস্থান চিয়াং সু'তে জুয়াং নি খুব জনপ্রিয় তারকা। ২০০৪ সালে তিনি শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভের জন্য পেইচিংয়ে এসেছেন। পেইচিং তার জন্য একটি নতুন জায়গা। এখানে মানুষ সহজেই কাউকে স্বীকৃতি দিতে চায় না। এ সময় জুয়াং নি অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন। এ অনুভূতি নিয়ে জুয়াং নি "কান্নাকাটি" গানটি লিখেছেন। তিনি বলেন,
"তখনো পেইচিংয়ে আমি নিজের স্থান করে নিতে পারিনি। নিজেকে খুব ছোট ছাড়া অন্য কিছু মনে হতো না। পেইচিং খুব বড় শহর এখানে অনেক প্রতিভাবান মানুষ আছে। আমি এখানে একটি বালুকনার মতো সাধারণ। কিন্তু যদি আমি জন্মস্থানে ফিরে যাই তাহলে আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবের প্রশ্নের জবাবে আমি কি বলবো? কিন্তু পেইচিংয়ে থাকলে নিজের স্থান কোথায় পাবো? তখন এ সব ভেবে খুব উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমি শুধু কান্নাকাটি করতে চাই। কান্নার পর মন একটু হালকা হয়ে উঠবে। তারপর নিজেকে উত্সাহ দিয়ে বললাম, আমি হেরে যেতে চাই না। আমি আবার শুরু করবো।
এমন দ্রুত চলমান পৃথিবীতে জীবনের জন্য প্রত্যেক মানুষ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন অনেক চাপের মধ্যে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। তখন চাপ কমানোর পদ্ধতি খুঁজে পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কান্না হলো চাপ কমানোর একটি কার্যকর পদ্ধতি। কান্নার পর আবার প্রথম দিক থেকে শুরু করে। এমনিভাবে আস্তে আস্তে কষ্ট পার হয়ে সুখী জীবন চলে আসবে।
আপনারা শুনলেন জুয়াং নি'র রচিত কান্নাকাটি গানটি। তার পরীক্ষামূলক এলবাম "আমি বিশ্বাস করি"তে তিনি এ গানটিতে একটু পরিবর্তন এনেছেন। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে আমরা আবার নতুন করে এ পুরানো গানটি শুনবো। |