সাত বছরের নিরলস প্রচেষ্টার পর ২০১০ সালের সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রস্তুতি চুড়ান্ত পর্যায় প্রবেশ করেছে । ৫ জুলাই এক স্মরণীয় দিন , সে দিন থেকে সাংহাই বিশ্ব মেলা উদ্বোধনের আর মাত্র তিন শ' দিন বাকি । বিশ্ব মেলার অন্যতম প্রচার কর্মসূচী হিসেবে সেদিন 'বিশ্ব মেলা প্রবেশ' নামে এক প্রদর্শনী পেইচিংয়ে আয়োজন করা হয় । একই দিন সাংহাই বিশ্ব মেলার স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ কর্মসূচী সাংহাইয়ে শুরু হয়েছে । সাংহাই বিশ্বমেলার সাংগঠনিক কমিটি জানিয়েছে , পরবর্তী তিন শ' দিনে প্রদর্শনী ভবন নির্মাণ , প্রদর্শনী সাজানোসহ প্রস্তুতির কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হবে , যাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অতিথিরা চীনে এসে চীনা জনগণের আন্তরিকতা অনুভব করতে পারেন ।
' বিশ্ব মেলায় প্রবেশ ' নামে বড় আকারের প্রদর্শনী রাজধানী যাদুঘরে আয়োজন করা হয় । প্রদর্শনীতে দর্শকরা চীনা প্রদর্শনী ভবন ও বৃটেন প্রদর্শনী ভবনসহ মেলায় ৫৯টি অংশগ্রহণকারী দেশের প্রদর্শনী ভবনের নমুনা দেখতে পাবেন । চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সাংহাই পৌর কমিটির সম্পাদক , সাংহাই বিশ্ব মেলার কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ইউ চেন শেন বলেন , বিশ্ব মেলা হল সারা বিশ্বের একটি মহাসম্মীলন । এতে মানব জাতির বস্তুগত সভ্যতা ও মানসিক সভ্যতা প্রদর্শিত হবে । বিশ্ব মেলার ইতিহাসের ১৫৩ বছরে এই প্রথমবারের মত কোন মেলা উন্নয়নশীল দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে । ৫ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বের ২৩৯টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা মেলায় অংশ নেয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছে । এটা চীনের অনুমান করা মেলায় ২ শ' টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশ নেয়ার লক্ষ্য ছাড়িয়ে গেছে । আসন্ন সাংহাই বিশ্ব মেলা ইতিহাসের বৃহত্তম মেলা হবে ।
কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রস্তুতিতে অনেক অজানা বিষয়ের সম্মুখীন হচ্ছে । সাংহাই বিশ্ব মেলার মুখপাত্র সুই ওয়েই সি আর আই সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন , বিশ্ব মেলায় অংশ নেয়া একটি দেশের ভাবমূর্তি সম্পর্কিত ব্যাপার । তাই অনেক দেশ সোত্সাহে এ মেলায় অংশ নেয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করছে । যেমন জাপানের প্রদর্শনী ভবন নির্মাণের জন্য ১৩ বিলিয়ন জাপানী ইউয়ান প্রয়োজন । এটা এক বিরাট বরাদ্দ । আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশ বিশ্ব মেলায় অংশ নেয়াকে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হিসেবে গন্য করছে । বিশ্ব মেলার ৭ কোটি দর্শকের মধ্যে বেশির ভাগই চীনা । অনেক দেশ মনে করে , বিশ্ব মেলা হচ্ছে চীনাদের সংস্কৃতি প্রচারের একটি সুবর্ণসুযোগ ।
সুই ওয়েই আরো বলেন , এ/এইচ-১ এন-১ ফ্লুর প্রসার ঠেকানোর জন্য সাংহাইয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সহযোগিতা করে এ ক্ষেত্রের প্রস্তুতি জোরদার করবে ।
৫ জুলাই ' আমরা আপনার পাশে থাকবো' নামে বিশ্ব মেলার স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ কর্মসূচী সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে । এখন পর্যন্ত সাংহাই বিশ্ব মেলার নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে । সাংহাই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইং চুং ছাও তাদের মধ্যে একজন । ইং চুন ছাও বলেন , আমি সাংহাই বিশ্ব মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিতে আগ্রহী। আমি মনে করি , বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে আমার মেলায় পরিসেবা কাজ করা উচিত । গণ কল্যানমূলক কাজে অংশ নেয়া আধুনিক যুগের যুব সমাজের কর্তব্য । আশা করি আরো বেশি যুবক যুবতী বিশ্ব মেলার পরিসেবামূলক কাজে অংশ নেবে ।
সাংহাই বিশ্ব মেলা ২০১০ সালের পয়লা মে থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে । সাংহাই বিশ্ব মেলার কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ইউ চেন শেন বলেন , আমরা সাংহাইয়ের পরিবেশ আরো উন্নত করার চেষ্টা করবো এবং পরিসেবার মান উন্নত করবো । যাতে বিভিন্ন দেশের অতিথিদের সব চাহিদা মেটানো যায় ।
|