২৭শে জুন সন্ধ্যায় শ্রীলংকা ও ভারত থেকে আসা দু'টি তরুণ সঙ্গীত দল "শিলং অন্তগৃহ সমবেত সঙ্গীত দল" এবং " সৌল সাউন্জ সমবেত সঙ্গীত দল" । এ দু'টি সঙ্গীত দল প্রথমবারের মত পেইচিংয়ে এসেছে এবং চীনের বৃহত্তম চত্বর থিয়েন আন মেন মহাচত্বরের কাছে অবস্থিত চুং শান সঙ্গীত হোলে রাজধানীর দর্শকদের জন্য একটি সঙ্গীতের ভোজসভা অভ্যর্থনা করেছে । এবারের অনুষ্ঠানের নাম হল "নিখুঁত ও সুষমের সঙ্গীত যাত্রা" । এবার অনুষ্ঠান চীনের দর্শকদের দক্ষিণ এশিয় সংস্কৃতি উপলব্ধি করার একটি ভালো সুযোগ সৃষ্টি করেছে । তা চীন , ভারত ও শ্রীলংকার সাংস্কৃতিক বিনিময় ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে ।
এবার অনুষ্ঠান ভারত ও শ্রীলংকার চীনস্থ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় । চীনের গণ বৈদেশিক মৈত্রী সমিতি এর সমর্থন করেছে । শ্রীলংকার চীন নিযুক্ত দূতাবাস কারুনাতিলাকা আমুনুগামা এর আগের একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন , এ দু'টি সমবেত সঙ্গীত দল হল শ্রীলংকা এবং ভারতের সাংস্কৃতিক দূত । সঙ্গীতের মাধ্যমে চীন , শ্রীলংকা ও ভারতের মধ্যে একটি মৈত্রীর সেঁতু তৈরি করা হয়েছে । দর্শকরাও এর মাধ্যমে সঙ্গীতের সৈদর্য অনুভব করেছেন । তিনি বলেন :
সংস্কৃতি হল দু'দেশের বিনিময়ের সেঁতু । সঙ্গীত হল সংস্কৃতি প্রকাশ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি । আমি আশা করি এবার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীনা বন্ধুদের মনকে মুগ্ধ করতে পারবে এবং চীনা জনগণের মনে শ্রীলংকা ও ভারতের নতুন ভাবর্মূতি সৃষ্টি করতে পারবে । যাতে আমরা তিনটি দেশের মধ্যে নতুন একটি মৈত্রীর সম্পর্ক স্থাপন করা যায় ।
ভারতের চীন নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাডাম নিরুপামা রাও এবার অনুষ্ঠানের জন্য দেয়া এক ভাষণে বলেছেন :
ভারত ও শ্রীলংকার চীনস্থ দূতাবাস প্রথমবারের মত যোথভাবে এমন একটি সমবেত সঙ্গীত অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে । আমরা আশা করি এবার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীনা জনগণকে আমাদের সুন্দর আশাআকাঙ্খা প্রকাশ করতে পারবো , আমাদের আশাআকাঙ্খা হল : শান্তি , মৈত্রী ও সুষম ।
এ দু'টি সমবেত সঙ্গীত দল গঠনের মুহূর্ত থেকেই উচ্চ মানের পেশাগত অনুষ্ঠান অভিনয় করার জন্য চেষ্টা করে আসছে । তারা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজের মান উন্নয়ন করেছে এবং বিশ্বের দর্শকদের নিজ দেশের সংস্কৃতি ও নিজের সামর্থ্য প্রকাশ করেছেন ।
প্রতি সমবেত সঙ্গীত দলে প্রায় ২০ জন প্রতিভাবান শিল্পী আছে। তাদের মধ্যে গায়ক গায়িকা আছে , বরং সঙ্গীত রচনার শিল্পীও আছে । তারা পেইচিংয়ের দর্শকদের জন্য আধুনিক সঙ্গীত ও অপেরা সঙ্গীত শুনিয়েছেন । সে দিন সন্ধ্যায় তাদের অনুষ্ঠানের তিনটি অংশ আছে : প্রথম অংশ হল পশ্চিমা দেশের ক্লাসিক সঙ্গীত , দ্বিতীয় অংশ হল ঐতিহ্য লোক সঙ্গীত , তৃতীয় অংশ হল বিশ্বের আধুনিক পোপ সঙ্গীত । শিল্পীদের অভিনয়ের পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন , সঙ্গীত যন্ত্রের সঙ্গে গাওয়া গান আছে , একক সঙ্গীও আছে । গাওয়ার পাশাপাশি তারা নাচও নাচে ।
আপনারা এখন যে গানটি শুনচ্ছেন , তা হল শ্রীলংকার "সৌল সাউন্জ" সমবেত সঙ্গীত দলের গাওয়া লোক সঙ্গীত "চাইনা চাইনা আসাই" । তাদের শুদ্ধ স্বর গ্রীষ্মকালের রাতে দীর্ঘকাল স্থায়ী হল এবং দর্শকদের মনে স্থায়ী হয় ।
বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমবেত সঙ্গীত দলের অন্যতম হিসেবে শ্রীলংকায় হোক , অন্য দেশেই হোক , "সৌল সাউন্জ" সমবেত সঙ্গীত দল মন নড়া সঙ্গীতের মাধ্যমে অসংখ্য দর্শকদের মুগ্ধ করেছে । এ দলের সদস্যরা সবই ২০ বছর বয়সী তরুণী । তারা ভারত , ব্রিটেন , চীনের সিয়া মেন শহর , অস্ট্রেলিয়া , কুয়েত , অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে অভিনয় করেছিলেন এবং দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছেন ।
এ সঙ্গীত দলের সাফল্যজনক সঙ্গীত যাত্রা প্রধানত এ দলের প্রতিষ্ঠাতা সাউন্দ্রারেই ডেভিডের সঙ্গে জড়িত । তিনি হলেন "সৌল সাউন্জ" সঙ্গীত দলের পিয়েনো বাজানোকারী এবং পরিচালক । তিনিও বিশ্ব সঙ্গীত কমিশনে শ্রীলংকার প্রতিনিধি । ২০০৪ সালে তিনি এ সঙ্গীত দল প্রতিষ্ঠান করেছেন । তিনি মনে করেন , সঙ্গীতের মেয়েদের জন্য গান গাওয়া হল সৌল খোঁজার যাত্রা । এবার চীন অভিনয় সম্পর্কে তিনি বলেন :
আমার মনে হয় এ সন্ধ্যার অনুষ্ঠান বিনিময়ের একটি ভালো সুযোগ । এ অনুষ্ঠান শ্রীলংকা , ভারত ও চীনের সম্পর্কের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছে । আমি খুব খুশি যে সঙ্গীতের মাধ্যমে তিন দেশের মৈত্রী বাড়িয়েছে ।
ভারতের শিলং অন্তগৃহ সমবেত সঙ্গীত দল ২০০১ সালে গঠন হয়েছে । এ সঙ্গীত দল গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের সঙ্গীত রচনা করা । সঙ্গীত দলের সদস্যরা খুব প্রতিভাবান । তারা শিল্প এবং সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্যতার ওপর গুরুত্ব দেন । তাদের জন্য সঙ্গীত হল তাদের মনের স্বর ।
আপনারা যে গানটি শুনছেন , তা হল শিলং অন্তগৃহ সঙ্গীত দলের গাওয়া বোলিউডের গান ।
সিলং অন্তগৃহ সঙ্গীত দলের প্রতিষ্ঠাতা নেইল নিংকিনরিহ খূব বিখ্যাত একজন পিয়েনোবাদক । লন্ডনে তার ১৩ বছর ধরে লেখাপড়া এবং কর্মের অভিজ্ঞতা আছে । এরপর তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের শহর শিলং ফিরে এ সঙ্গীত দল গঠন করেছেন । এ সঙ্গীত দল ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে শ্রীলংকার রাজধনী কলম্বোয় অনুষ্ঠিত ভারতের স্বাধিনতার ৬০তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । ২০০৯ সালের মার্চ মাসে এ দলটি ভঅরতের পক্ষ থেকে ভিয়েনায় অভিনয় করেছেন ।
দর্শক মিস্টার লি সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন :
আজের অনুষ্ঠান চমত্কার । আমি শ্রীলংকা ও ভারতের সংস্কৃতির আকর্ষণ অনুভব করেছি । আশা করি ভবিষ্যতে এমন অনুষ্ঠান দেখার আরো বেশি সুযোগ পাবো ।
অনুষ্ঠান দু'সঙ্গীত দলের গাওয়া চীনা গান "মো লি হুয়া" অর্থাত্ চামেলি ফুল গানের মাধ্যমে শেষ হয়েছে । |