১৯ শতাব্দীর মাঝামাখি সময় ইউরোপের শিল্প বিপ্লব পুরোদমে চলছিল। বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি দ্রুত বিকশিত হয়েছে। মানবজাতির জীবন তখন থেকে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে।
১৭৬১ সালে বৃটেনে প্রথম বারের মতো দু'সপ্তাহব্যাপী শিল্প প্রদর্শনী আয়োজন করেছে এবং সাফল্যমন্ডিত হয়েছে। ১৮২৮ থেকে ১৮৪৫ সাল পর্যন্ত বৃটেন এ ধরনের মেলা একাধিকবার আয়োজনের চেষ্টা করেছে। ১৮৪৯ সালে বৃটেন প্রথম বারের মতো বার্মিংহামে প্রদর্শনীর জন্য একটি অস্থায়ী ভবন নির্মাণ করেছে। ঘন ঘন শিল্প মেলা আয়োজন করার অভিজ্ঞতা থেকে বৃটেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ মেলা আয়োজনের কথা ভাবতে শুরু করে।
১৭৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বৃটেনের রাজকীয় শিল্পকলা সমিতি জাতীয় পর্যায়ের প্রদর্শনীর সংগঠন কাজ করে আসছে। ১৮৪৯ সালে শিল্পকলা সমিতি আরো বড় আকারের মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা করে।
১৮৪৯ সালের ৩০ জুন বার্কিংহ্যাম প্রাসাদে একটি ঐতিহাসিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজকীয় শিল্পকলা সমিতির সদস্য, জাতীয় মেলার সাংগঠনিক কমিটির সদস্য, স্থাপত্য কোম্পানির সদস্য প্রমুখ প্রতিনিধি এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে বিশ্ব মেলা আয়োজন সংক্রান্ত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিশ্ব মেলার মৌলিক কাঠামো স্থির করা হয়েছে।
সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, বিশ্ব মেলায় কাঁচা মাল, যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম, শিল্পজাত পণ্য এবং মূর্তি প্রদর্শিত হবে।
বিশ্ব মেলার জন্য অস্থায়ীভাবে একটি বিশেষ ভবন নির্মান করবে। বিশ্ব মেলা হায়দ পার্কে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব মেলার সাংগঠনিক কমিটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের উত্সাহ দেয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ বোনাস সরবরাহ করবে। বিশ্ব মেলা আয়োজনের জন্য একটি রাজকীয় কমিটি গঠিত হবে। শিল্পকলা সমিতি বিশ্ব মেলার প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করে। সম্মেলনের পর এ সব সিদ্ধান্ত ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হয়েছে। কেবল অংশগ্রহণকারীদের উত্সাহ দেয়ার পদ্ধতি বোনাসের পরিবর্তে পদক হয়েছে।
সম্মেলনের পর অভ্যন্তরীণ নামকরা ব্যবসায়ীদের বিশ্ব মেলায় অংশগ্রহণের মতামত জানার জন্য সাংগঠনিক কমিটির সদস্যরা ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের ৬৫টি নগর গিয়েছেন। সাংগঠনিক কমিটি ফ্রান্সসহ কিছু কিছু ইউরোপীয় দেশকে রাজি করানোর জন্য সফর করেছেন।
১৮৫০ সালের ৩ জানুয়ারী বিশ্ব মেলা বিষয়ক রাজকীয় কমিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর রাণী ভিক্টোরিয়া দেশের পক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে বিশ্ব মেলায় অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
|