v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
চীনে চারশোরও বেশি প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে
2009-05-22 17:22:31
    ভারতের পশ্চিম বাংলার শ্রোতা শ্রী অসিম গাংগুলী তার চিঠিতে চীনের প্রাণী সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, এখন এ সম্পর্কে কিছু বর্ণনা করবো। চীনে ১১৫০ প্রজাতির পাখি আছে, সারা পৃথিবীতে যতো প্রজাতির পাখি আছে এই সংখ্যা তার শতকরা ১৩.৪ ভাগ। চীনে চারশোরও বেশি প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। চীনে ৪২০-এরও বেশি বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী এবং উভচর প্রাণী আছে। বিশেষভাবে চীনেই দেখা যায় এমন সব বন্য প্রাণীর মধ্যে সুপরিচিত হোলো: প্যান্ডা, নাকখাঁদা বাঁদর, টাকিন, সাদা ঠোঁটের হরিণ, কান-ঝোলা ফেজন্টপাখি, চীনা নদী-শুশুক, চীনা কুমীর ও চীনা মাছখেকো কুমীর।

     বাংলাদেশের রংপুর জেলার শ্রোতা শাহ জালাল তার চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কয়েকটি জাতি আছে? উত্তরে বলছি, চীন একটি একীভূত বহুজাতি-অধ্যুষিত দেশ। এই দেশে ৫৬টি জাতি বাস করে। এদের মধ্যে শতকরা ৮৩.৩ জন হান জাতিভুক্ত। বাকি ৫৫টি জাতির মোট জনসংখ্যা খুব কম।সারা দেশের লোকসংখ্যার মধ্যে তারা হল শতকরা মাত্র ৬.৭ ভাগ। এই ৫৫টি জাতিকে সাধারণত সংখ্যালঘু জাতি বলা হয়। আলাদ আলাদাভাবে লোকসংখ্যার হিসেবে এ সব জাতির মধ্যে বিরাট পার্থক্য দেখা যায়। এখানে উল্লেখ করতে হয় যে, চীনের সংখ্যালঘু জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলসমুহে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন-ব্যবস্থার পালিত হয়, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সংখ্যালঘু জাতিদের স্থানীয় বিষয়গুলির প্রশাসনিক কাজ সংশ্লিষ্ট জাতিভুক্ত নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের দিয়েই পরিচালিত হয়। ঐতিহাসিক কারণে সংখ্যালঘু জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির বিকাশ হান-জাতি-অধ্যুষিত এলাকার চেয়ে পশ্চাত্পদ ছিল।     বিগত ৩০ বছরের অধিক সময়ের মধ্যে অর্থাত চীনের সংস্কার ও উন্মুক্ত নীতি চালু হওয়ার পর চীন সরকার লোক, অর্থ, বস্তু এবং প্রযুক্তিবিদ্যা দিয়ে সংখ্যালঘু জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলের গঠনকাজে প্রভূত সাহায্য করেছেন। অবশ্যই, হান জাতিভূক্ত এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সংখ্যালঘু জাতিও ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।

     নরসিংদী জেলার শ্রোতা মো: রাকির হাসান তার চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন চীনের কোন অঞ্চলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী? রাজধানী পেইচিংয়ে কী মসজিদ আছে? প্রিয় বন্ধু, এখন আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিছি। চীনের হুই, উইগুর, কাজাক, উজবেক, তাজিক , তাতার , সালারসহ দশটি সংখ্যালঘু জাতির মধ্যেই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিছি। পেইচিংয়ে বেশি কয়েকটি মসজিদ আছে। তবে সচেয়ে পুরানো মসজিদের নাম ডোংসি মসজিদ। পেইচিংয়ের ডোংসি মসজিদ তৈরী হয়েছিল ৫০০ বছরের বেশী সময় আগে। এ মসজিদ ১৯৫২ ও ১৯৭৪ সালে দু বার মেরামত করার ফলে নতুন রুপ পেয়েছে। এখন এ মসজিদতে রয়েছে নামাজ পড়ার প্রশস্ত হলঘর, ওজু করার ঘর এবং গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারে যেমন সংরক্ষিত রয়েছে চীনের বিভিন্ন আমলের ইমাম ও আলেমদের হাতে লেখা কোরান এবং মুসলমানদের দর্শন, ইতিহাস ও সাহিত্য-বিষয়ক রচনা ও গ্রন্থ, তেমনি রয়েছে মিশর, ভারত, তুরস্ক, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশে প্রকাশিত ইমলামী ধর্মগ্রন্থ।

     বগুড়া জেলার শ্রোতা মো:মাসুদ রানা আশিক তার চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের সবচেয়ে বড় শহরের নাম কি? শহরটির লোকসংখ্যা কত? উত্তরে বলছি, চীনের সবচেয়ে বড় শহর সাংহাই। সাংহাই চীনের বাণিজ্য ও ব্যাংকিং কেন্দ্র। চীন গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে সত্তর দশক পযর্ন্ত সাংহাইয়ের জি ডি পি ছিল সারা চীনের মোট জি ডি পির ২৫ শতাংশ । নব্বইয়ের দশকের পর সাংহাইয়ে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রে সাংহাই চীনের অন্যান্য অঞ্চলের চাইতে এগিয়ে গেছে। এখনও শিল্প, বাণিজ্য ও ব্যাংকিং সহ অনেক ক্ষেত্রে সাংহাইয়ের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ২০০৬ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, সাংহাইয়ের লোকসংখ্যা এক কোটি ৬০ লাখ। এখানে উল্লেখ, রাজধানী পেইচিংয়ের লোকসংখ্যা ১ কোটি ৫০ লাখের মতো।

      বাংলাদেশের মঈনুস সুলতান তার চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের যুবক-যুবতীরা তাদের বিয়ের ব্যাপারে কি কি স্বাধীনতা ভাগ করে? বন্ধু নির্বাচনে তারা কি ভূমিকা পালন করে? উত্তরে বলছি, চীনের যুবক-যুবতীরা স্বাধীনভাবে প্রেম করতে পারে। তারা নিজেদের পছন্দসই প্রেমিক বা প্রেমিকাকে বাছাই করতে পারে। বিয়ের আগে তাদের পরষ্পরকে পুরোপুরি চেনে নিতে হবে। পরষ্পরকে উপলব্ধি করার সময় কম বা বেশী হয়। যদি তারা মনে করে ,অধিকাংশ দিকে দু'জনের মধ্যে মিল আছে তাহলে তারা বিয়ের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এক কথায় যুবক-যুবতীদের বিয়ের ব্যাপারে বাবা-মার বেশী মাথা ঘামানোর দরকার নেই।

বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জ জেলার শ্রোতা এইচ, এম, তারেক তার চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কি সীমান্ত বিরোধ আছে? উত্তরে বলছি, আপনারা অবশ্যই জানেন, চীনদেশ পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। রাশিয়া ও কানাডার পরই চীনের স্থান। চীনের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য ২০,০০০ কিলোমিটারেরও বেশী। স্থলসীমা বেষ্টন করে আছে: পূবদিকে , উত্তর কোরিয়া, উত্তরদিকে , মঙ্গোলিয়া ,উত্তরপূবে আর উত্তরপশ্চিমে, রাশিয়া, পশ্চিমে আর দক্ষিণপশ্চিমে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, সিকিম আর ভুটান। এবং দক্ষিণে , মিয়ানমার, লাওস ও ভিয়েতনাম। ঐতিহাসিক কারণে বতর্মানে কয়েকটি দেশের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। দু'পক্ষের প্রচেষ্টার মাধ্যমে কোনো কোনো সমস্যার মিমাংসা হয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো সমস্যার মিমাংসা হয়নি। কিন্তু এ সব সীমান্ত বিরোধে দু'টি দেশের স্বাভাবিক সর্ম্পককে বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।পারস্পরিক সদিচ্ছা থাকলে সীমান্ত বিরোধসহ নানা ধরনের আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়।

প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ কয়েকজন শ্রোতার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। আমাদের প্রতি শনিবারের বিশেষ অনুষ্ঠান----শ্রোতা সন্ধ্যা শ্রোতাদের নিজস্ব অনুষ্ঠান। যদি চীন সর্ম্পকে কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের অনুষ্ঠান সর্ম্পকে কোনো পরামর্শ থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চিঠি লিখে জানাবেন। কারণ এই অনুষ্ঠান আরও সুন্দর করার জন্য শ্রোতাদের আন্তরিক সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন।

এখন একটি বাংলা গান শুনবেন।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China