v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
পৃথিবীর স্বর্গ 'সুচৌ'
2009-05-14 15:23:35

    এখন থেকে ২০১০ সাল সাংহাই বিশ্ব মেলা পর্যন্ত আর মাত্র হাতে এক বছরের সময় বাকী আছে। বিশ্ব মেলা চলাকালে আপনি সাংহাই-এ আসতে চাইলে, ভালোভাবে আপনার পরিকল্পনা করতে হবে। কারণ সাংহাই-এর কাছাকাছি অনেক সুন্দর দৃশ্য না থাকলেও ক্ষতি নেই। চীনের একটি প্রাচীন বাক্য আছেঃ ওপরে আছে স্বর্গ আর পৃথিবীর স্বর্গ হচ্ছে সুচৌ ও হাংচৌ শহর। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের নিয়ে সুচৌ শহরে বেড়াতে যাবো।

    চিয়াং সু প্রদেশের সুচৌ শহর ইয়াংসি নদীর বদ্বীপ এলাকার মধ্যাংশে অবস্থিত। সুচৌ শহরের পূর্ব দিকে সাংহাই, দক্ষিণ দিকে জে চিয়াং প্রদেশের সঙ্গে সংযুক্ত, পশ্চিম দিকে পশ্চিম হ্রদ এবং উত্তর দিকে হচ্ছে ইয়াংসি নদী। সুচৌয়ের নগর হচ্ছে পরিকল্পিত প্রাচীন নগর এবং নতুন শিল্প সমৃদ্ধ এলাকা। ফলে সুচৌ প্রাচীন নগরের সংরক্ষণ এবং নতুন শিল্প এলাকাকে পুরোপুরি উন্নয়নের অবকাশ রয়েছে। প্রাচীন নগর সুচৌ-এ তার বৈশিষ্ট্যময় রীতিনীতি এখনো বজায় রয়েছে। প্রাচীন নগরে ৫টি ঐতিহাসিক সড়ক এবং বিরাট ঐতিহাসিক স্থান ও মনোরম দৃশ্যবলী রয়েছে।

    ঐতিহাসিক স্থান 'শান থাং সড়ক'কে 'সুচৌ-এর প্রথম বিখ্যাত সড়ক' বলে গণ্য করা হয়। সড়কের স্থাপত্য দৃষ্টিনন্দন ও মার্জিত বোধ সম্পন্ন। সড়কের দু'পাশে দোকান ও হোটেল একটা পর একটা রয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় সড়কের লাল লণ্ঠণ যখন একের পর এক প্রজ্বলিত করা হয়, তখন কানের ভেতর প্রতিধ্বনিত হওয়া দূরের সুচৌ পিং থান-এর সঙ্গীতের লহরী জলস্রোতের শব্দের মত ভেসে আসতে থাকে। সিঙ্গাপুরের পর্যটক হুয়াং এন লিং নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন,

    এ জায়গাটি ঠিক ছবির মতো। খুবই সুন্দর। মানুষের হৃদয়ে প্রাচীন নগরের অনুভূতি এনে দেয়। এটা সত্যিই একবারে আনন্দময় অভিজ্ঞতা।

    রাতের শান থাং সড়কে ঘোরার পর, যদি আপনার মনে হয় যথেষ্ট হয়নি, তাহলে আপনি একটি জায়গা খুঁজে বের করে থাই হু হ্রদের পানি দিয়ে তৈরী চা খান এবং উষ্ণ ও ধীর লয়ের সুচৌ পিং থান সঙ্গীত শুনেন। 

    পেইচিং-এ আসলে পিকিং অপেরা না দেখা যেমন তেমনি সুচৌ-এ আসলে কয়েকটি পিং থান সঙ্গীত না শোনা হলো সুচৌ-এ না আসার মতোই। সুচৌ শহরের ছিয়ান থাং রেন চিয়া, ছুন লেই চা ঘর, শুই থিয়ান থাং অর্থাত্ পানির স্বর্গ ও ছা রেন ছুনসহ বিভিন্ন দোকান আপনার জন্য উপভোগের জায়গা হবে। যেমন চিন চি হ্রদের পাশে অবস্থিত ছুন লেই চা ঘরের সাজসজ্জা স্থাপত্যরীতির অনাড়ম্বর প্রাচীন শৈলীর মধ্যেও মার্জিত সৌন্দর্য্য পরিলক্ষিত হয়। সারা চা ঘরে হাল্কা চা-এর সুগন্ধ ছড়িয়ে রয়েছে। চা খাওয়ার পাশাপাশি সুচৌ পিংথান সঙ্গীত শুনুন, আপনার সব বিষন্নতা কেটে যাবে এবং শুধু আরাম লাগবে।

    যদি আপনি মনে করেন, সুচৌ-এর জীবনযাত্রার ছন্দ খুব ধীর গতির এবং সুচৌ একটি গভীর ক্লাসিক্যাল আমেজ জড়ানো নগর। তাহলে আপনি ভুল করবেন।

    এখন আপনি যে আধুনিক সঙ্গীত শুনছেন, তা সুচৌ ইউয়ান রোং টাইমস স্কোয়ারের প্রতীক সঙ্গীত। এই স্কোয়ারের সবচেয়ে বিখ্যাত দর্শনীয় বস্তু হচ্ছে 'বিশ্বের প্রথম আকাশ গম্বুজ'। এটা হচ্ছে একটি ৫শ' মিটার লম্বা এবং ৩২ মিটার প্রস্থ ২ হাজারেরও বেশী অপূর্ব উজ্জ্বল এল ই ডি বাতি নিয়ে গঠিত একটি আলোকমালার বেল্ট। এ বাতি সমৃদ্ধ বেল্পটি আরো বেশি পর্যটকের ইউয়ান রোং টাইমস স্কোয়ারে আসার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। কাজের উদ্দেশ্যে সুচৌ-এ আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক রিকো হ্যারিসন এবং শন জ্যামস আকাশ গম্বুজ দেখতে এসেছেন। রিকো হ্যারিসন বলেন,

    খুব অবিশ্বস্য এবং আকর্ষণীয়। আমি আকাশ গম্বুজটি খুবই পছন্দ করি। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু ছবি প্রাণবন্ত ও বাস্তবসম্মত। বিষয়বস্তু খুব সুন্দর। ছবিতে 'স্ট্যাচু অব লিবার্টি' ও পুরুষ বাজপাখি আমার খুব ভালো লাগে। এমনকি অন্য দেশের জিনিসপত্র ও ছবি খুব চিত্তাকর্ষক।

    শন জ্যামস বলেছেন, এর আগে তিনি অন্য জায়গার এল ই ডি আকাশ গম্বুজ দেখেছেন। তবে সুচৌ-এর আকাশ গম্বুজ আরো বেশি চোখ ধাঁধানো। তিনি বলেন,

    এই আকাশ গম্বুজ-এর বিষয় আরো সমৃদ্ধ। তার বিষয় হচ্ছে সুচৌ-এর গল্প ও প্রতিমূর্তী। সুচৌ-এর স্থানীয় বৈশিষ্ট্যও এতে প্রতিফলিত হয়েছে। বেশ সুন্দর।


1 2
  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China