পয়লা মে থেকে সাংহাই বিশ্ব মেলা উদ্বোধনের ঠিক এক বছর বাকী । এ উপলক্ষে পেইচিংয়ে এক উদ্বোধনী কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে এবং সাংহাইয়ে স্বেচ্ছাসেবক গ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে । বর্তমানে সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রদর্শনী ভবন নির্মাণ এবং প্রর্দশনী কেন্দ্র সাজানোসহ নানা ধরনের প্রস্তুতির কাজ সুপরিকল্পিতভাবে চলছে । মেলার সাংগঠনিক কমিটি আগামী এক বছরে মেলার সব প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন করা এবং বিশ্বের জন্য একটি সার্থক , বৈত্রিত্র্যময় ও স্মরণীয় মেলা আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ।
পয়লা মে সকালে পেইচিংয়ের থিয়েন আন মেন মহাচত্বরে ২০১০ সালে সাংহাই বিশ্ব মেলার দিনের হিসেব রাখার বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে । সাত বছরের প্রস্তুতির পর সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রস্তুতি চুড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করেছে । চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান উ পাং কোও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন , ২০১০ সালের সাংহাই বিশ্ব মেলা অনুষ্ঠানের ঠিক এক বছর আগে আজ আমরা পেইচিংয়ে আমি সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রতি চীন সরকার ও চীনা জনগণের আন্তরিক সমর্থনের কথা প্রকাশ করছি । আমরা মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করবো এবং সব ধরনের প্রস্তুতির কাজ সুসম্পন্ন করবো ।
২০১০ সালের পয়লা মে বিশ্বমেলা চীনের সাংহাই শহরে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বমেলার ইতিহাস সুদীর্ঘ , তবে এ মেলা এই প্রথম বার উন্নয়নশীল দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে । পয়লা মে পর্যন্ত মোট ২৩৬টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা চীনের সাংহাই মেলায় অংশ নেয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছে । এদের মধ্যে বিশটি দেশ এখনও চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে নি । বিশ্ব মেলার পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় চীন মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সংখ্যা দু' শ' নির্ধারণ করেছিল , কিন্তু অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা ইতোমধ্যেই দু' শ ছাড়িয়ে গেছে । এ কথা বলা যায় সাংহাই বিশ্বমেলা ইতিহাসের বৃহত্তম মেলা হবে ।
কিন্তু বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে সাংহাই বিশ্বমেলা কিছু অনিশ্চিত উপাদানেরও সম্মুখীন হচ্ছে । সাংহাইয়ের উপমেয়র ও বিশ্বমেলার সাংগঠনিক কমিটির সদস্য ইয়াং সিউন বলেন , আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাংহাই বিশ্বমেলাকে প্রথম থেকেই সমর্থন করে এসেছে । এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত দেশগুলোর মধ্যে কোনো দেশই প্রকাশ্যে মেলা থেকে সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে নি । তারা বলে , যদিও বৈশ্বিক সংকট তাদের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে , তবুও তারা অসুবিধা কাটিয়ে মেলায় অংশ নেবে ।
ব্রিটেনের প্রদর্শনী অঞ্চলের উপপ্রতিনিধি , সাংহাইয়ে ব্রিটেনের কনসাল জেনারেল কারমা এলিওট সাংবাদিককে বলেন , আমরা আগামী বছরের মেলায় অংশ নেয়ার পরিকল্পনা তৈরী করছি এবং মেলার বাজেটও তৈরী করেছি । আমরা মনে করি , এ ধরনের বিনিয়োগ যুক্তিসংগত , তাই আগামী বছর সাংহাই বিশ্বমেলায় অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে না ।
পয়লা মে থেকে সাংহাই বিশ্বমেলার স্বেচ্ছাসেবক গ্রহণের কাজও শুরু হয়েছে । দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও নাগরিক স্বেচ্ছাসেবক গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । পরিকল্পনা অনুসারে , দুই লাখ স্বেচ্ছাসেবক মেলায় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দর্শকদের সেবার কাজ করবেন আরও প্রায় দশ লাখ স্বেচ্ছাসেবক শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের সেবার কাজ করবেন ।
সাংহাইয়ের দ্বিতীয় নম্বর শিল্প ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ইয়ে সিয়াও ছেন বলেন , আমি সাংহাই বিশ্বমেলার জন্য কিছু কাজ করতে চাই । তাই মেলার স্বেচ্ছাসেবক গ্রহণের ওপর খোঁজখবর নিচ্ছি । মেলার সাংগঠনিক কমিটি আমাকে গ্রহণ করলে আমি খুব খুশি হবো ।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সাংহাই পৌর কমিটির সম্পাদক , সাংহাই বিশ্বমেলার কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ইয়ু চেন শেন বলেন ,এক বছর পর বিশ্বের দৃষ্টি চীনের বিশ্বমেলার ওপর কেন্দ্রীভুত হবে । ২০০২ সালে বিশ্ব মেলা আয়োজনের অধিকার পাওয়ার সময় চীন এ বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে চীনকে একটি সুযোগ দিলে চীন বিশ্বকে আরো সুন্দর করে তুলবে ।
|