চীনের নৌ বাহিনীর ৬০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্য ২৩ এপ্রিল বিকালে চীনের সৈকত শহর ছিনডাওয়ের নিকর্টবতী জলসীমায় বহুদেশীয় যুদ্ধ জাহাজের কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। চীনের প্রেসিডেন্ট, কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হু চিন থাও এ কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন। এটা হল চীনের নৌ বাহিনীর উদ্যাগে আয়োজিত প্রথম বারের মতো বহুদেশীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের কুচকাওয়াজ। এখন শুনুন ছিনডাও থেকে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতার পাঠানো একটি রিপোর্ট।
২৩ এপ্রিল দুপুর দু'টায় হু চিন থাও " সি চিয়া ছুয়ান" নামক একটি ডিস্ট্রোয়ারে করে কুচকাওয়াজ পালিত জলসীমায় পৌঁছেছেন। দু'টা বিশ মিনিটে প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের নির্দেশে বহুদেশীয় নৌ বাহিনীর কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
উ সেন লি: মহামান প্রেসিডেন্ট হু, কুচকাওয়াজে অংশ গ্রহণকারী যুদ্ধ জাহাজের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হয়েছে। কুচকাওয়াজের পরিদর্শনের জন্য আপনার অনুমতি প্রার্থনা করছি। আমি চীনের নৌ বাহিনীর সেনাপতি উ সেন লি।
হু : শুরু করতে পারে!
উ সেন লি: জি হ্যাঁ । কুচকাওয়াজ শুরু!
এবারের কুচকাওয়াজ দু পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে যুদ্ধ জাহাজ একটা পর একটা সামনের দিকে যাত্রা করে। চীনের নৌ বাহিনীর ডুবো জাহাজ, ডিস্ট্রো , গানবোট, উভচর রণতরী এবং সামুদ্রিক বিমান বাহিনীর বিমানগুলো প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও পরির্দশ গ্রহণ করেছে। চীনের নৌ বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারের কুচকাওয়াজে চীনের নৌ বাহিনীর যে সব যুদ্ধ জাহাজ ও অস্ত্র প্রদর্শিত হয়েছে সবই চীনের তৈরী সরঞ্জাম।
কুচকাওয়াজের দ্বিতীয় পর্যায়ে বহুদেশীয় যুদ্ধ জাহাজের প্রদর্শনী। চীনের " সিনিন" নামক ক্ষেপণাস্ত্র ডিস্ট্রোর নেতৃত্বে রাশিয়ার ভারয়াগ ক্রুস , যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রো ফিটজগেরালড সহ ১৪টি দেশের ২১টি যুদ্ধ জাহাজ লাইন বাঁধে জলসীমায় দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের পরিদর্শন গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে কুচকাওয়াজ শেষ হল। চার দিনব্যাপী এই বহুদেশীয় নৌ বাহিনীর কুচকাওয়াজ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনে বিভিন্ন দেশের নৌ বাহিনীর নাবিররা ছিনডাওয়ে আনন্দের সঙ্গে কাটিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের নৌ বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে এবং মত বিনিময় হয়েছে। তা ছাড়া পারষ্পরিক সফর বিনিময়ও হয়েছে। তা ছাড়া, বিভিন্ন দেশের নৌ বাহিনীর নাবিররা ছিনডাও শহরের দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করেছেন। এ সব কর্মসূচীর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিরদের মধ্যে সমঝোতা ও মৈত্রী জোরদার হয়েছে। এ প্রসঙ্গে চীনের নৌ বাহিনীর সেনাপতি উ সেন লি বলেন,
স্থায়ী শান্তি ও অভিন্ন সমৃদ্ধ ও সম্প্রীতিময় বিশ্বের গঠনকাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চীন সরকারের আকাংক্ষা। সমুদ্রে " শান্তি, সম্প্রীতি, সহযোগিতা " গড়ে তোলা এ বারের কর্মসূচীর প্রধান উদ্দেশ্য। এবারের কুচকাওয়াজের মাধ্যমে চীন ও চীনের নৌ বাহিনীর ওপর বিশ্বের জানাকে জোরদার হয়েছে।
বিভিন্ন নৌ বাহিনীর কর্মকর্তারা এবারের কুচকাওয়াজের ভূয়সী প্রসংশা করেছেন। চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতাকে দেয়া একটি সাক্ষাত্কারে পাকিস্তানের নৌ বাহিনীর প্রধান স্টাফ নোমান বাসির বলেন,
আমার মনে হয় এটা একটি অত্যন্ত ভাল প্রতিপাদ্য। সামুদ্রিক নিরাপত্তা রক্ষা করা এক দেশের দায়িত্ব নয় বরং বিভিন্ন দেশের । বিভিন্ন দেশের উচিত সমুদ্রের সম্পদকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সমুদ্রের সম্প্রীতি রক্ষা করা । |