বোআও এশিয় ফোরাম -২০০৯ ১৭ই এপ্রিল থেকে ১৯শে এপ্রিল পর্যন্ত দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশের বোআও মহকুমায় অনুষ্ঠিত হবে । এশিয়া ও অন্যান্য মহাদেশের প্রায় এক হাজার সরকারী প্রধান , বাণিজ্য মহলের নেতৃবৃন্দ ও বিশেষজ্ঞ বোআও ফোরামে বৈশ্বিক আর্থিক সংকট মোকাবিলার বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করবেন । চীনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের ধারণা , বৈশ্বিক আর্থিক সংকট এখনও সম্প্রসারণ হচ্ছে । বোআও ফোরাম সংকট মোকাবিলায় এশিয় দেশগুলোর আশা পুনপ্রতিষ্ঠা করতে এবং আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত হওয়া থেকে সৃষ্ট নিরাশা দূর করতে সাহায্য করবে ।
বোআও ফোরাম প্রতিষ্ঠার পর এ বছর বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিবেশ সবচেয়ে খারাপ যাচ্ছে। তবে বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে । ফোরামে অংশগ্রহণকারী সরকারী প্রধান ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর নেতারা এ ফোরামের ওপর আশা পোষণ করেন । চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চিয়াং ইয়ু বলেন , বোআও এশিয়া ফোরামের আমন্ত্রণে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ফোরামে অংশ নেবেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন । পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ,কাজাকস্তানের প্রেসিডেন্ট নুরসুলতান নাজারবায়েফ , তোগোর প্রেসিডেন্ট ফাউরে নাসিংবে , মঙ্গোলিয়া , মিয়ানমার , ভিয়েতনাম , ফিনল্যান্ড , আলবেনিয়া , নিউজিল্যান্ড ও পাপুয়ানিউগিনির প্রধানমন্ত্রী ও থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ফোরামে অংশ নেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ ও জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়াসুও ফুকুদাও আমন্ত্রণক্রমে ফোরামে অংশ নেবেন ।
বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পটভূমিতে এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমেছে । চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গবেষণাগারের প্রফেসর ছাই ইয়ু বলেন , বর্তমান ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো অর্থনৈতিক সংকট ও এশিয়াঃ চ্যালেঞ্জ ও আশা । তিনি বলেন , বোআও ফোরাম হল আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত রাখার পর অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলন । এ ফোরামে এশিয়ার ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সরকারী কর্মকর্তা ও বাণিজ্যিক মহলের নেতারা অংশ নেবেন । তাই এ ফোরামে বৈশ্বিক সংকটের পটভূমিতে আঞ্চলিক উন্নয়ন তরান্বিত করার পরিবেশ ভালো । এ ফোরাম এশিয়ার দেশগুলোর আশা পুনপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ছাই ইয়ু আরো বলেন , গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে এশিয়ার আর্থিক সংকট প্রতিরোধের জন্য এশিয়ার দেশগুলো মিলিতভাবে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছিল । সেই সময় চীন সরকার চীনা মুদ্রা রেন মিন পি'র মূল্য হ্রাস না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং অনেক ব্যবস্থা নিয়েছিল । একটি দায়িত্বশীল বড় দেশ হিসেবে চীনের ভূমিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রশংসা পেয়েছে ।বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সামনে এশিয়ার কিছু দেশ এই বলে আশা প্রকাশ করেছেন যে , চীন সরকারের ৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ানের অর্থনীতি চাংগাকরার পরিকল্পনা চীনের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য কল্যাণ নিয়ে আসবে।
ছাই ইয়ু আরো বলেন , চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়নের জন্য এশিয়ার দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া দরকার ।
তিনি বলেন , বোআয় ফোরামের ইতিহাস থেকে দেখা যায় , আঞ্চলিক অর্থনীতি উন্নয়নে চীন প্রধান ভূমিকা নিচ্ছে । অন্যদিকে চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে শুধু নিজের শক্তির উপর নির্ভর করা ছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সমর্থনেরও একান্ত প্রয়োজন ।
বোআও এশিয় ফোরাম একটি বেসরকারী আন্তর্জাতিক সম্মেলন সংস্থা । এ ফোরাম লাভজনক নয় । এ ফোরাম ইতোমধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সরকার , শিল্প ও বাণিজ্য ও গবেষণা মহলের নেতাদের এশিয়া তথা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সংলাপের একটি ফ্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে । এ বছরের বোআও ফোরাম প্রতিষ্ঠার পর অষ্টম ফোরাম । |