v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
বিদেশে আর্থ-বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের জন্য চীন বিভিন্ন দল পাঠিয়েছে
2009-04-16 15:43:42
     চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও-এর ইউরোপ সফরের সাফল্য সুনিশ্চিত করার জন্য গত ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রী ছেন তে মিং-এর নেতৃত্বাধীন চীনের বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ দল ইউরোপের চারটি দেশ সফর করেছেন। তারা দশ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য অর্ডার দিয়েছে। ৭ মার্চ ইউরোপে পুঁজি বিনিয়োগ ও সহযোগিতার লক্ষ্যে চীন আরেকটি দল পাঠিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন ঘন ঘন বিদেশে আর্থ-বাণিজ্যিক আদান প্রদান জোরদারের জন্য দল পাঠাছে। তাতে স্পষ্ট হয়েছে যে, চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ প্রতিরোধ করবে।

    বর্তমানে বিশ্বের আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু দেশে সংবাদ বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ বেড়েছে। গত জানুয়ারী মাসের শেষ দিক থেকে ফেব্রুয়ারী মাসে ইউরোপের চারটি দেশ সফরের সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেছিলেন, বর্তমান কষ্টকর সময় অতিক্রম করার জন্য চীন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা চালাবে। চীনের বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ দলের নেতা ও চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ছেন তে মিং ইউরোপ সফরকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও-এর প্রতিশ্রুতি পালনের জন্যই তারা এবারে ইউরোপ সফর করছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, "এবারের ইউরোপ সফর থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে যে, চীন সরকার যে কথা বলেছে, তা মেনে চলবে। আমরা বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ প্রতিরোধ করি। ইউরোপে ক্রয়ের মাধ্যমে পরস্পরের বাণিজ্য বিনিময় ত্বরান্বিত করা হবে এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা হবে বলে আমরা আশা করছি।

    চীন সরকারের উন্মুক্তকরণ তত্ত্ব ও আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে নেয়া ইতিবাচক ব্যবস্থা ইউরোপের অর্থনীতিবিদদের ব্যাপাক প্রশংসা পেয়েছে। জার্মানির অর্থনীতি ও প্রযুক্তি মন্ত্রী কাল থিওদর ফ্রাইহার জু গাটেনবার্গ বলেন, "আর্থিক সংকট মোকাবিলার জন্য জার্মানি ও চীন সরকার দ্রুত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু এক বা দু'টি দেশের অর্থনীতি চাঙ্গাকারী পরিকল্পনা অবনতিশীল বিশ্বের অর্থনীতির জন্য যথেষ্ট নয়। সেজন্য চীন ও জার্মানির দ্বিপাক্ষিক আর্থ-বাণিজ্যিক আদান-প্রদান জোরদার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ কষ্টকর সময়ে চীনের ক্রয় দলের জার্মানি সফর ইতিবাচক সংকেত দিয়েছে। সংরক্ষণবাদ হচ্ছে আর্থিক সংকট মোকাবিলার জন্য একটি পুরোপুরি ভুল দিক। সেজন্য দু'দেশ বিশ্বের বাণিজ্য সংস্থার দোহা বৈঠক ত্বরান্বিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে দেশের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সংরক্ষণবাদ এড়ানো যায়।

     সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও অর্থনীতি মন্ত্রী মাদাম ডরিস লিউথার্ড বলেন, বিশ্বের আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে চীনের আর্থ-বাণিজ্যিক দলের সফর দু'পক্ষের জন্য আলোক বর্তিকা বয়ে এনেছে। তিনি বলেন, "দু'পক্ষ অর্থনৈতিক সহযোগিতা গভীর করা এবং পারস্পরিক বাজার উন্মুক্ততা করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমরা বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ প্রতিরোধের অবস্থানকেই তুলে ধরবো।

     চীন ও ইউরোপের বিভিন্ন সরকার সহযোগিতার মাধ্যমে সংকট মোকাবিলায় আস্থা ও দক্ষতা উন্নয়ন করতে চায়। বাস্তব সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করা দু'দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সফরকালে চীনের আর্থ-বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ দলের সদস্য ও চীনের পেই ছে কোম্পানি লিমিটেড জার্মানির শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিজিটাল ও ঝালাই করার সরঞ্জাম ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ কোম্পানি উপ প্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপক ছাও কুও বিং বলেন "জার্মানিতে সুষ্ঠু প্রক্রিয়াকারী সরঞ্জাম চীনের ট্রেনের গতি দ্রুততর করার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এবারে আমরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে জার্মানির কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সহযোগিতা আরও জোরদার করেছি। এ চুক্তি দু'পক্ষের জন্য কল্যাণকর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

     পেই ছে কোম্পানির অংশীদার ও জার্মানির শিল্পপ্রতিষ্ঠা থাইসিন ক্রপ কোম্পানির প্রতিনিধি ক্লস পোটফ বলেন,  "এ চুক্তি দু'পক্ষের জন্য কল্যাণকর। একদিকে চীন জার্মানির হাইটেক প্রযুক্তি ও ভালো পণ্য অর্জন করতে পারে। অন্যদিকে জার্মানির শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনের পণ্য ক্রয় করতে পারে। দু'পক্ষের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক যোগাযোগ দু'দেশের সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।

     জানা গেছে, ইউরোপে বাণিজ্যিক দল পাঠানোর পর চীন বিদেশের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদারের জন্য আরও কয়েকটি এমন ধরণের দল পাঠাবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইয়াও চিয়ান বলেন, বর্তমান অর্থ সংকটের প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক আদান-প্রদান জোরদারের মাধ্যমে বিশ্বের অর্থনীতি চাঙ্গা করার একটি কার্যকর ব্যবস্থা। তিনি বলেন, "এ বছরের মধ্যে বিদেশে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে আরও কয়েকটি দল যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অবস্থা অনুযায়ী চীন রপ্তানি ও ক্রয় করা পণ্য আলাদা করবে। পরিস্কার-পরিছন্ন ও পরিবেশ রক্ষা প্রযুক্তি এবং বৈদেশিক পুঁজি সংগ্রহ করাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থার মাধ্যমে সে দেশগুলোর সঙ্গে চীন সহযোগিতা জোরদার করবে। (ওয়াং তান হোং)

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China