v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট হচ্ছে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া পরস্পরের সমঝোতা ও মৈত্রী উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ
2009-04-13 21:01:49
২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্বের প্রথম কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট সিউলে গড়ে তোলার পর দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট দ্রুত তার সাথে বেড়ে ওঠে। এসব কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ চীনা ভাষা শেখা, চীনকে জানা ও বুঝার এবং চীনাদের সঙ্গে মৈত্রী উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে পরিণত হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা দূতাবাসের শিক্ষা বিভাগের কাউন্সিলার আই হোং গে দেয়া সাক্ষাত্কারের কথা আপনাদের কাছে বলবো।

প্রথমে আই হোং গে আমাদের প্রতিবেদককে দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সাধারণ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, (১)

২০০৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্বের প্রথম কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সংখ্যা ১২টি এবং একটি কনফুসিয়াস ক্লাস রয়েছে। তাছাড়া কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সদর দপ্তরের অনুমোদন সাপেক্ষে আরও তিনটি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার চাহিদা খুব বেশী।

আই হোং গে বলেছেন, কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট চীনা ভাষা শিক্ষাদানের প্রধান কাজ হিসেব ইতোমধ্যেই চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় ভাষা শিক্ষা ও বিনিময়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সেতু রচনা করেছে। তিনি বলেন, (২)

ভাষা বিনিময় হচ্ছে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়ের একটি সেতু। এর পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ১৭ বছরে বহু অগ্রগতি অর্জন করেছে। এটি ভাষা প্রতিভা প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র ,বিশেষ করে ভাষা শিক্ষাদান ক্ষেত্রের বিনিময় ও সহযোগিতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। চীনে দক্ষিণ কোরিয় ভাষা বা উত্তর কোরিয় ভাষার পাঠক্রম চালু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি। দক্ষিণ কোরিয়ার ৪০৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বেশির ভাগ চীনা ভাষা পাঠক্রম বা চীন সম্পর্কিত পাঠক্রম চালু করেছে। যেমন চীনের বাণিজ্য, চীনের সংস্কৃতি ও চীনা ভাষা ইত্যাদি। দু'দেশের ভাষার ক্ষেত্রের বিনিময় ধাপে ধাপে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা ভাষার চাহিদা খুব বেশী।

আই হোং গে বলেন, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে চীনা ভাষা শিক্ষা গ্রহণ করা লোক সংখ্যা দু'লাখ। বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাদান পদ্ধতির মাধ্যমে চীনা ভাষা শেখার লোক সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। বর্তমানে প্রাথমিক স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চীনা ভাষা কোর্স রয়েছে। কিছু প্রাথমিক স্কুল চীনা ভাষাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৯৯৩ সালে চীনা ভাষার মান সংক্রান্ত পরীক্ষা দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠানের পর পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা ভাষা শেখার আগ্রহ বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে আই হোং গে বলেন, (৩)

চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর আর্থ-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা চীনা ভাষা উন্নয়নের জন্য বিরাট সুযোগ করে দিয়েছে। আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতায় চীনা ভাষা বলতে ও বুঝতে পারার প্রতিভার চাহিদা বৃদ্ধি হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের মধ্যে চীনা ভাষা শেখার ব্যাপারে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তাছাড়া, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনেকগুলো একই বিষয়বস্তু রয়েছে। এর পাশাপাশি এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বহু বিনিময়ের ইতিহাস রয়েছে। দু'দেশের জনগণ পরস্পরের ভাব আদান-প্রদান করতে আগ্রহী।

আই হোং গে বলেন, বর্তমানে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা এবং কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট সদর দপ্তরের কিছু সহায়তা দেয়ার পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট ভালো সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি বলেন, (৪)

দু'পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের গুরুত্ব দেয়া ও ত্বরান্বিত করায় দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের উন্নয়নে চমত্কার সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট দু'দেশের জনগণের পরস্পরের মধ্যকার সমঝোতা ও মৈত্রী উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ বাস্তব ভিত্তিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। এর পাশাপাশি দু'দেশের শিক্ষা বিনিময় ও সহযোগিতা আরো জোরদার করার একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সেতুতে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন দু'দেশের সুপ্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহতভাবে গভীর করা এবং চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা ও বেসরকারী বিনিময় ধাপে ধাপে উন্নীত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

আই হোং গে মনে করেন, যদিও বর্তমানে ভালো সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তবুও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের উন্নয়নের সার্বিক লক্ষ্যের তুলনায় কিছু ব্যবধান রয়েছে। দূরদর্শী দৃষ্টিকোণ থেকে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের উচিত এ ধরণের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অভিজ্ঞতার সারসংকলন করা, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিদ্যালয়ের সহযোগিতা অব্যাহতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা, শিক্ষকদের মান আরো উন্নত করা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের চীনা ভাষা শেখার লক্ষ্যে আরো উপযুক্ত শিক্ষা-উপকরণ সরবরাহ করা। তিনি বলেন, (৫)

কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট হচ্ছে একটি নতুন ধারণা। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার সারসংকলন করা এবং নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করা দরকার। আমি বিশ্বাস করি, উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় দু'পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট উন্নয়নের উপযুক্ত নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China