v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
পেইচিং মহা নগরের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের
2009-04-10 17:25:37
   বাংলাদেশের ঢাকা জেলার শ্রোতা কবির রেজা তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের রাজধানী পেইচিংএ কি কি দর্শনীয় স্থান আছে?

    উত্তরে বলছি, রাজধানী পেইচিং চীনের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। পেইচিং মহা নগরের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের। পেইচিং শহর ইতিহাসে ত্রয়োদশ থেকে উনবিংশ শতাব্দী পযর্ন্ত ইউয়ান, মিং ও ছিং রাজবংশের রাজধানী ছিল। সুতরাং শহরের ভিতরে ও বাইরে অনেক পুরার্কীতি আছে। এখানে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাসাদ রাজকীয় প্রাসাদের সংগ্রহশালা যাকেও বলা গুগন যাদুঘর। আরও আছে সুন্দর রাজকীয় উদ্যান শ্রীস্মকালীন প্রসাদ যাকেও বলা হয় সামাপ্যারেস । পেইচিংয়ের উপকন্ঠে সুমান মিং সমাধিস্থান। বিশ্ববিখ্যাত মহাপ্রাচীর ও পাঁচ লাখ বছর আগেকার " পেইচিং মানবের আবাসস্থল" যতাক্রমে পেইচিং শহরের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে। অবশ্যই পেইচিং শহরের ভিতরেও অনেক দেখার মতো জায়গা আছে। রাজধানী পেইচিংয়ের সকল পুরার্কীতি দেখলে কমপক্ষে পাঁচ দিন লাগে। এখানে উল্লেখ্য, কেবল দর্শনীয় স্থান নয় রাজধানী পেইচিংয়ের স্থানীয় খাবারও বৈশিষ্ট্যময়। পিকিং ডাক খুব বিখ্যাত।

    কুমিলা এফ কামাল তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে কয়েকটি সংখ্যালঘু জাতি আছে? সে সব সংখ্যালঘু জাতি চীনের কোন কোন জায়গায় বসবাস করে? উত্তরে বলছি, চীন একটি জাতিবহুল দেশ। চীনে ৫৬টি জাতি বাস করে। চীনের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি। এর মধ্যে শতকরা ৯৪জন হান জাতিভুক্ত। হান জাতি ছাড়া আরও ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতি আছে। স্বাধীন ও সমান জাতিসমূহের একটি মহাপরিবারে চীনের সবকটি জাতি ঐক্যবদ্ধ। কোনো জাতির লোকসংখ্যা যাই হোক না কেন, অথবা যেখানেই তারা বসবাস করুক না কেন, প্রতিটি জাতিই অন্যসব জাতির সমকক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে সক্রিয় অংশ নেয়। চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর অনেক প্রতিনিধি আছেন, চীনা কমিউনিষ্ট পাটিতে ও গণসরকারে আছেন সংখ্যালঘু জাতিভূক্ত নেতৃস্থানীয় ক্যাডারা। প্রতিটি জাতির নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলোকে আর চাহিদাকে রাষ্ট্র পুরোপুরি বিবেচনার মধ্যে রাখে। রাষ্ট্র প্রতি জাতির ক্যাডারদের প্রশিক্ষণে সাহায্য করে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেক করতে হবে যে, বিভিন্ন জাতির ভাষাগুলোকে সরকারীভাবে উত্সাহ দেওয়া হয় ও লালন করা হয়।

    বাংলাদেশের বগুড়া জেলার দীপক চৌধুরী তাঁর চিঠিতে প্রশ্ন করেছেন, চীনের কোন প্রদেশে সবচেয়ে বেশী প্রাচীন পুরাকীর্তি নিদর্শন পাওয়া গেছে ? এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কি কি?

    প্রিয় বন্ধু, আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বেশ কঠিন, কারণ, চীনের কোন প্রদেশে যে সবচেয়ে বেশী প্রাচীন পুরাকীর্তির নিদর্শন পাওয়া গেছে তা চীনের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ বিষয়ক জাতীয় ব্যুরোর কোনো রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নি । তবে অনেকের ধারণা, চীনের সানসি প্রদেশে ছিল রাজবংশীয় আমলের যে সৈন্য আর ঘোড়ার গাড়ি টেরাকোটা ভাস্কর্যের যে সন্ধান পাওয়া গেছে তাকে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য বলে আখ্যায়িত করা যায় এবং তাকে চীনের অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি বলা যায়। এ সম্পর্কে আরো কিছু কথা বলছি ।

     ১৯৭৪ সালের ২৯শে মার্চ, লিনটং জেলার সিচয়াং গ্রামের কৃষকরা কুয়ো খোঁড়ার সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রথমে ছিন রাজবংশীয় আমলের সৈন্য আর ঘোড়ার গাড়ির ভাস্কর্য আবিস্কার করেন । কেন্দ্রীয় সরকারের নিদের্শে সানসি প্রদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক দল সেখানে ব্যাপকভাবে অনুসন্ধান চালায় এবং তারা আবিস্কৃত প্রাচীন সৈন্য আর ঘোড়ার গাড়ির ভাস্কযর্গুলো যত্নসহকারে পরিস্কার করেন। ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ ছিন রাজবংশীয় আমলের সৈন্য আর ঘোড়ার গাড়ির টেরাকোটা ভাস্কযর্গুলোর জন্য জাদুঘর নিমার্নের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৭৯ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে এক নম্বর গতের্র ওপরে অধর্চন্দ্রাকারের ছাদ নিমার্নের কাজ শেষ হয়। চীন গণ-প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৭৯ সালের ১ অক্টোবর এই জাদুঘর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এরপর প্রতি বছর দেশ-বিদেশের অসংখ্য পযটর্ক আর সম্মানিত বিদেশী অতিথি ছিন রাজবংশীয় আমলের সৈন্য আর ঘোড়ার গাড়ির টেরাকোটা ভাস্কযর্গুলো দেখতে আসেন । এখন এই জাদুঘর চীনের বৃহত্তম যাদুঘর ।

    বগুড়া জেলার শ্রোতা পলাশ মাহবুব তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের রীতিনীতি কি ?

    উত্তরে বলছি ,চীন একটি জাতিবহুল দেশ । চীনে মোট ৫৬টি জাতি আছে । বিভিন্ন জাতির বিয়ের রীতিনীতি ভিন্ন । চীন একটি বিশাল দেশ । বিভিন্ন জায়গায় একই জাতির বিয়ের রীতিনীতিও আলাদা । কিন্তু বতর্মানে চীনের বিভিন্ন জাতির বিশেষ করে শহরাঞ্চলের তরুণ-তরুনীরা তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সহজ করে ফেলেছেন । সাধারণত বিয়ের দিনে বধূ ও বরের পরিবার ও আতীয়স্বজন , বন্ধু-বান্ধবরা এক সঙ্গে মিলে একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সাধারণত বধূ ও বর সবাইয়ের সামনে তাদের মধ্যকার প্রেম সম্পর্কে বণর্না করেন । দু'পক্ষের বাবা-মা বধূ ও বরের সুখ কামনা করেন। অবশ্যই এই বিশেষ উপলক্ষ্যে, অনুষ্ঠানে কেউ কেউ বধু ও বর নিয়ে নানা ধরনের হাস্য রসামক করেন । যেমন, বধূ ও বরকে চুমু খেতে অনুরোধ করা হয়। নিঃসন্দেহে বিয়ের অনুষ্ঠানে ভাল ভাল খাবার পরিবেশিত হয়। তবে, চীনের কোনো কোনো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় নিজস্ব জাতির ঐতিহ্যবাহী বিয়ের রীতিনীতি প্রচলিত আছে।

    বাংলাদেশের সিলেট জেলার শ্রোতা শেলিম তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের বৃহতম হ্রদের নাম কি?

     উত্তরে বলছি, চীনে অজস্র ছোট-বড় হ্রদ আছে। আয়তনে এক বগর্কিলোটারেরও বেশী বড় হ্রদের সংখ্যা ২৩০০টিতে দাঁড়িয়েছে। হ্রদের মোট আয়তন ৭১০০০ বগর্কিলোমিটার। আয়তনের দিকে থেকে চীনের সবচেয়ে বড় হ্রদের নাম ছিনহাই হ্রদ। তার আয়তন হল চাঁর হাজারেরও বেশী বগর্কিলোমিটার। এই হ্রদ চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চীয় ছিনহাই প্রদেশে অবস্থিত। চীনের সবচেয়ে গভীর হ্রদের নাম ছানবাই হ্রদ। হ্রদের পানির গভীরতা ৩৭৩ মিটার।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China