v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
তিব্বতের দ্রুত উন্নয়নের শিক্ষা বিষয়
2009-02-23 17:07:46
সর্বশেষ পরিসংখ্যান সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ বছরে চীন সরকার তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শিক্ষার জন্য ২২ বিলিয়ন রেন মিন পি বরাদ্দ করেছে। বর্তমানে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল শিশু শিক্ষা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, বিশেষ শিক্ষা, পেশাগত শিক্ষা, উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা ও বয়স্কদেরশিক্ষাসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। তিব্বত শিক্ষার ইতিহাসের সবচেয়ে ভালো সময়ে প্রবেশ করেছে। আজকের অনুষ্ঠান এ সম্পর্কে কিছু কথা বলবো।(১)

হাই সা প্রাথমিক স্কুল তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী লাশা নগরের ছেং কুয়ান অঞ্চলে অবস্থিত। এ স্কুলের বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রী কৃষক ও পশুপালক পরিবারে থেকে এসেছে। স্কুলের উপাচার্য ছাংপা ইউমটান বলেছেন, গত শতাব্দীর ৮০ দশক থেকে হাই সা প্রাথমিক স্কুল ছাত্র-ছাত্রীর ফি মওকুফ করার নীতি বাস্তবায়ন করেছে। শিশুদের স্কুলে লেখাপড়া করা পরিবারের জন্য চাপ নয়। তিনি আরো বলেছেন, (২)

আমাদের স্কুল ১৯৮৫ সালে থেকে এ নীতি বাস্তবায়ন করেছে। এ ক্ষেত্রে সরকার একটানা কয়েক বছর অর্থ বরাদ্দ করেছে। বর্তমানে প্রতি অর্ধবর্ষব্যাপী পাঠক্রমে ছাত্র-ছাত্রী ফি মওকুফ হওয়া ছাড়া ছেং কুয়ান এলাকার সরকারও প্রতি ছাত্র-ছাত্রীকে ১৫ ইউয়ান করে বৃত্তি দিচ্ছেন।

হাই সা প্রাথমিক স্কুল তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কয়েক হাজার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের কাছে একটি দৃষ্টান্ত। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা বিভাগের উপমহাপরিচালক তু চিয়েন কোং বলেছেন, চীন সরকার ২৪ বছর আগে তিব্বতে ছাত্র-ছাত্রীর ফি ও বেতন মওকুফের নীতি চালু করে। এটি চীনের মূলভূভাগের বাধ্যতামূলক শিক্ষা বাস্তবায়নের প্রথমঅঞ্চলে পরিণত হয়েছে। এ নীতির প্রভাবে স্থানীয় কৃষক ও পশুপালক পরিবরের শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের ইতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে। তু চিয়ান কোং বলেছেন, (৩)

পাঁচ বছর ধরে চীন সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা গ্রহণের জন্য ১৩ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করেছে। দু' লাখ ৬৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এ থেকে উপকৃত হয়েছে। ২০০৭ সালে নাগাদ পর্যন্ত তিব্বতের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলে অপেক্ষাকৃত বয়সী শিশুদের ভর্তির হার ছিল ৯৮.২ শতাংশ, মাধ্যমিক স্কুলের প্রথম পর্যায়ে প্রবেশের হার ছিল ৯০.৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে নয় বছরের শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা গ্রহণ করা এবং কৃষি ও পশুচারণ এলাকার তরুণ-তরুণী ও পৌঢ়পৌঢ়দের নিরক্ষরতা দূরীকরণের লক্ষ্য মৌলিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।

আসলে ১৯৫১ সালে শান্তিপূর্ণ মুক্তির আগে পুরানো তিব্বতে একটি আধুনিক স্কুলও ছিল না এবং তরুণ-তরুণী ও পৌঢ়পৌঢ়দের নিরক্ষরতার হার ছিল ৯৫ শতাংশ । দীর্ঘদিন ধরে সামন্তবাদী কৃতদাস প্রথায় তিব্বত পশ্চাত্পদ পরিস্থিতিতে অবস্থিত। তখন তিব্বতের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল বয়সী শিশুদের ভর্তি হার ছিল শুধু ২ শতাংশ।

শান্তিপূর্ণ মুক্তির পর তিব্বতের শিক্ষা উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় চীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চীন তিব্বতের শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে থাকে এবং বহু সুযোগ সুবিধার নীতি বাস্তবায়ন করে। যেমন আগের ফি ও বেতন মওকুফের নীতি। তাছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিব্বত অব্যাহতভাবে কৃষি ও পশুচারণ এলাকার স্কুলে আবাসিক বিদ্যালয় গড়ে তুলে এবং প্রাথমিক স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হওয়া পর্যন্ত তিব্বতী ছাত্র-ছাত্রীর সকল ফি মওকুফ করা ইত্যাদি।

এর পাশাপাশি চীন সরকার তিব্বতের শিক্ষা ক্ষেত্রের বুনিয়াদী ব্যবস্থা গড়ে তোলার বরাদ্দ বাড়াতে থাকে। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা বিভাগের উপমহাপরিচালক তু চিয়েন কোং বলেছেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকার তিব্বতের শিক্ষা ক্ষেত্রের বুনিয়াদী ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ২.৩ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করেছে। যেমন তিব্বত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন স্থাপনা নির্মাণের প্রকল্প, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের আধুনিক দূরপাল্লার শিক্ষা প্রকল্প। এসব তিব্বতের স্কুলের শর্ত ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করেছে। তিনি বলেন, (৪)

বর্তমানে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ৮৮০টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষারত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩ লাখ ৩৩ হাজার। সাধারণ মাধ্যমিক স্কুল ও মাধ্যমিক পেশাগত স্কুলের শিক্ষারত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৫৯ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষারত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৭ হাজার। বেসরকারী শিক্ষা, আধুনিক দূরপাল্লার শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

জানা গেছে, সরাসরি পুঁজি বিনিয়োগ ছাড়া, চীন সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে সাহায্য দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যেই উন্নত প্রদেশ ও নগরের শিক্ষক তিব্বতে শিক্ষাদান, উন্নত প্রদেশ ও নগরে তিব্বতের ছাত্র-ছাত্রীর জন্য বিশেষ ক্লাস চালু এবং তাদেরকে বিশেষ সুযোগ সুবিধার নীতি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

তাছাড়া, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় " তিব্বতের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক প্রশিক্ষণে সাহায্য দেয়ার পরিকল্পনা " বাস্তবায়ন করছে। ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর তিব্বতের এক হাজারেরও বেশি শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

জানা গেছে, তিব্বত শিক্ষা বিভাগ তিব্বতী ভাষা শিক্ষাদানের কাজকে গুরুত্ব দেয়। যাতে জাতীয় সংস্কৃতি অটুট থাকে। তিব্বতী ভাষা প্রচারের জন্য তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকার তিব্বতী ভাষা সংক্রান্ত পাঁচটি পাঠ্য পুস্তক সংকলন করেছে।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China