v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
লি পু ইয়ুন ও তাঁর " ব্যবস্থাপনা" ও " মানবাধিকার" স্বপ্ন
2008-12-26 18:56:11
৩০ বছরের আগে, উনি চীনের প্রথমজন " মানবাধিকার" ও " আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা" ধারণা একজন দাখিলকারী হয়েছেন। ৩০ বছরের পর, তিনি আরও অব্যাহতভাবে আইনের ওপর গবেষণা কাজ চলছেন। তিনি হচ্ছেন চীনের সমাজ ও বৈজ্ঞানিক সংস্থার একজন সদস্য লি পু ইয়ুন। চীনের " আইন ব্যবস্থাপনা" এবং "মানবাধিকার" উন্নয়নে লি পু ইয়ুন বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বন্ধুরা, আজকের " তাহাদের কথা" অনুষ্ঠানে আমরা লি পু ইয়ুনের গল্প নিয়ে আলোচনা করবো:

১৯৭৮ সালে চীনের সমাজ ও বৈজ্ঞানিক সংস্থার একজন কর্মী লি পু ইয়ুনের " সকল জনগণ আইনের কাছে সমান" নামক একটি প্রবন্ধ " পিপলস্ ডেইলি" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর আগের দু'বছর চীন মাত্র দশবছরব্যাপী " সাংস্কৃতিক বিপ্লবী" শেষ হয়। তবে এ প্রবন্ধের মধ্যে প্রচুর আইনগত ধারণা রয়েছে। এমন কি, এ সব পদ্ধতি " সাংস্কৃতিক বিপ্লবী" সময়ে সকলের নিষিদ্ধ বিষয়। লি পু ইয়ুন বলেন, সুতরাং, তাকে " সাংস্কৃতিক বিপ্লবী"-এর পর আইন মহলে ভাবাদর্শ মুক্ত হওয়ার প্রথমজন বলে অভিহিত করা হয়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:" তখন আমি মনে করি, আইনগত ধারণার বেশ নীতি-মালা সাধারণ কমান্ডার ও জনগণের জন্য এতো সহজভাবে বুঝতে পারেন না। তবে 'আইনের সামনে সবাই সমান' এটা প্রত্যেকের জন্য জানা উচিত। এমন কি, এটা একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ নীতি-মালা। সুতরাং, আমি এ সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ লিখেছি।"

আসলে, লি পু ইয়ুন নিজেকেই জানেন না যে, এ প্রবন্ধ দেশ-বিদেশে এতো বিশাল প্রভাবিত হয়েছে। মার্কিন একজন সংবাদদাতা এ প্রবন্ধের বিস্তারিত রিপোর্ট করেছেন। রিপোর্টে এ প্রবন্ধ হচ্ছে চীনের নীতি-মালা ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তম পরিবর্তনের প্রতীক জানিয়েছে। তবে দেশের বেশ সংবাদমাধ্যম তার এ প্রবন্ধের ওপর উদ্বিগ্ন প্রকাশ করে।

তবে পরের বাস্তবতা থেকে প্রমাণিত যে, সকলের চিন্তাভাবনা কোন দরকার ছিল না। কারণ এ প্রবন্ধ পুনরায় " হুং ছি" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। একই সঙ্গে তাকে একজন বিশেষ অতিথি হিসেবে " হুং ছি" পত্রিকা সংস্থায় আমন্ত্রণ করেছেন। এভাবেই সবাই প্রথমবারের মত " মানবাধিকার" এ ধারণা জানতে সক্ষম হয়েছি। সবাই তাকে আরেক পর্যায়ের নতুন তত্পর্য প্রদান করেছে। তা হচ্ছে চীনের মানবাধিকার গবেষণা সূচনার প্রতীক।

এর দ্বিতীয় বছর , লি পু ইয়ুন তাঁর গবেষণার ধাপ আবারও চীনের " ব্যবস্থাপনা" ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়েছে। তিনি অন্যান্য দু'জন লেখকের সঙ্গে " আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা" নামক প্রবন্ধ লিখেছেন। এ সম্পর্কে লি পু ইয়ুন বলেন:" ' সাংস্কৃতিক বিপ্লবী'র মধ্য থেকে আমাদের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তা হলো আইন ছাড়া সব কিছু চলবে না। সুতরাং, ' আইন অনুযায়ী দেশ ব্যবস্থাপনা' এ প্রবন্ধের প্রথম Paragraph -এ আমি দাখিল করেছি যে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা হচ্ছে tide, tidal Current এবং চীনের বিপ্লবী একটি নতুন যুগে যোগদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সকল সদস্য এবং অগ্রগতি চাওয়া সকল ব্যক্তিদের উচিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনার ওপর সমর্থন করা।"

এ ধারণার উপস্থাপনে বিভিন্ন ক্ষেত্রের পন্ডিতগণ এবং সরকারী কর্মীদের ভিন্ন ধরণের আলোচনা সৃষ্টি করেছে। অনেকেই লি পু ইয়ুনের দিকে ,অনেকই এ ধারণার বিরোধীতা করে। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে লি পু ইয়ুন আরও অব্যাহতভাবে তাঁর ধারণা সমর্থন করে এর ওপর মোট এক শ'রও বেশি সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধ লিখেছেন এবং বড় বা ছোটসহ ভিন্ন পর্যায়ের সম্মেলনে প্রকাশ করেন। তাঁর এ ধারণাও পর্যায়ক্রমেই আইনী মহলের গ্রহণ করা হয়।

১৯৯৬ সালে চীনের আইন বিচার মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে লি পু ইয়ুন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একবার আলোচনা সভায় অংশ নেন। সম্মেলন শেষের পর, তত্কালীণ শীর্ষ নেতা চিয়াং চে মিন এর ওপর একটি বড় আকারের আলোচনা করে স্পষ্টভাবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনার সমর্থন করেন । একই সঙ্গে চিয়াং চে মিন এ ধারণার বেশ গুরুত্বপূর্ণ তত্পর্য নিয়ে ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এর পর, চীনের বিভিন্ন বড় আকারের পত্রিকা পৃথক পৃথকভাবে এর ওপরও প্রকাশ করে। এক মাসের পর অনুষ্ঠিত চীনের অষ্টম চীনের গণকংগ্রেসের স্ট্যাংডি কমিটির চতুর্থ অধিবেশনে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী লি ফেংয়ের কর্মকান্ড রিপোর্টে লিখিত হয়েছে। এটি চীনের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীন সংস্থা এবং সর্বোচ্চ আইন প্রণয়ন সংস্থা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত আইনগত অবস্থা স্থির করার প্রতীক। একই বছর চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৫তম পূর্ণাঙ্গ প্রতিনিধি সম্মেলনে আইন অনুযাযী ব্যবস্থাপনা আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতাসীন নীতি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ১৯৯৯ সালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের সংবিধানে লেখা করা হয়।

আইনের কাছে সবাই সমান থেকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা ধারণার উপস্থাপন পর্যন্ত সেসময় এ দু'টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দাখিল করতে মানুষের জন্য কতটা সাহস তুলে ধরা দরকার। সেগুলো ইতিহাস পর্যালোচনা করে লি পু ইয়ুন বলেন, এটা নিজের আস্থা ও প্রতিজ্ঞার সঙ্গে সম্পর্কিত । এ সম্পর্কে তিনি স্মরণ করে বলেন:" সেসময় আমি বেশ বইপত্র পড়েছিলাম। সুতরাং, আমি বিশ্বাস করি যে, আমার ধারণা সঠিক। সত্ত্বেও নিজের মনে বেশ চাড় পড়েছে। তবে আমি ভয় পারছিলাম না।"

তিনি অহংগার এবং আনন্দের সঙ্গে আমাদের সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন যে, তাঁর জীবনে দু'টি গুরুত্বপূর্ণ গৌরব ব্যাপার হলো প্রথমতঃ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা। দ্বিতীয়তঃ মানবাধিকার দাখিল করা। এমন কি, এ দু'টি বিষয়টিকে উভয়েই চীনের সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত হয়।

১৯৯১ সালে চীনের সমাজ ও বৈজ্ঞানিক সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের প্রথম মানবাধিকারের গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। লি পু ইয়ুন হচ্ছেন এর উপপরিচালক। এ থেকে চীনের আইন মহল বিস্তারিতভাবে মানবাধিকার সমস্যা গবেষণা করতে শুরু করে। লি পু ইয়ুনের উদ্যোগে এ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট গবেষকগণ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রচুর মানবাধিকার সংক্রান্ত গবেষণামূলক রিপোর্ট দাখিল করেছেন।

লি পু ইয়ুন মনে করেন, তার মানবাধিকার কাজ ত্বরান্বিত সম্পর্কে বেশ সংকট সৃষ্ট হয়নি। তবে শুধু একটি বাধার মুখে পড়ে হয়। তা হলো ২০০৪ সালে একবার সংবিধানের সংশোধিত সম্মেলনে তিনি দাখিল মানবাধিকার সুনিশ্চিত সংবিধানে লেখা করা। এ ব্যাপারে কয়েক জন এর বিরোধীতা করতেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:" এ ব্যাপারে আমাদের মতভেদ রয়েছে। বিরোধী পক্ষ মনে করতো, বিশ্বের সকল দেশ, তার মানবাধিকার সব আনুষংগিকভাবেই নিজেদের সংবিধানে এমন লেখা করেনি। কেন আমাদের মানবাধিকা নিশ্চয়ভাবেই সংবিধানে লেখা করা যায়?"

অবশেষে লি পু ইয়ুনের বিস্তারিত বক্তব্য শোনার পর, সম্মেলন মানবাধিকার সুনিশ্চিত সংবিধানে লেখার প্রস্তাব গৃহীত করেছে। এর পর চীনের মানবাধিকার সুনিশ্চত কাজ সুষ্ঠুভাবে সামনে এগিয়ে নেয়া হয়।

এখন ৭৫ বছর বয়স্ক লি পু ইয়ুন আরও তাঁর অনুরাগী কাজে অবদান করছেন। তাঁর ছাত্রছাত্রী তাঁর শরীরের অবস্থা উদ্বিগ্ন করে। তবে তিনি বলেন, তরুণ-তরুনীদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে নিজেকেই তরুণ-তরুণীদের মতেই তেজিয়ান থাকেন। উল্লেখযোগ্য, তরুণ-তরুণীদের গায়ে থেকে তিনি চীনের আগামীকালের আশা দেখতে সক্ষম হবে।--ওয়াং হাইমান

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China