'চীনা ভাষা গভীর সাগরের মতো আকর্ষণীয় চীনা অক্ষর তা রঙিন মাছের মতো পানির ওপর ভেসে বেড়ায়। b,p,m,f সাগরের ঢেউ এর মতো সুললিত। চীনা ভাষা শেখার প্রক্রিয়ায় আমি মনে করি, আমি সাগের একটি মাছের মতো ঢেউ এর সঙ্গে সঙ্গে দুলছি। কঠিন হলেও আনন্দময়তায় ভরপুর।'
২৮ নভেম্বর পাকিস্তানের জাতীয় আধুনিক ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চীনা ভাষার বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজিত হয়েছে। মোট ১৫জন পাকিস্তানী ছাত্রছাত্রী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। আপনি এই মাত্র শুনেছেন প্রতিযোগী হুমাইরার বক্তৃতার রেকর্ডিং-এর অংশ বিশেষ। তাঁর মনে চীনা ভাষা ও চীনা অক্ষর তাকে কবিতার মতো সীমাহীন মনোবলের কল্পনা এনে দিয়েছে।
আরেকজন প্রতিযোগী নাসির উদ্দিন কিছু দিন আগে পাকিস্তানের যুব প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চীন সফর করেছেন। তাঁর বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, চীনা ভাষা শেখার পাশাপাশি অনেক মজার ঘটনাও ঘটেছে এবং তাকে অনেক আনন্দ যুগিয়েছে। তিনি বলেছেন,
'আমি মনে করি, চীনা ভাষা শেখা খুব মজার। চীনা ভাষা শেখার প্রথম দিকে শিক্ষক একজন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, 'তুমি কী খেতে পছন্দ করো?' সে ছাত্র উত্তর দিয়েছেন, 'স্যার, আমি স্ত্রীকে খেতে পছন্দ করি।' শিক্ষক ছাত্রের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়, আবার জিজ্ঞেস করেছেন, 'কী, তুমি কী বলেছো?' আসলে সে ছাত্র বলতে চেয়েছেন বেগুন খেতে তার পছন্দ হয়। কিন্তু উচ্চারণ ভুল হয়েছে বলে বেগুনের বদলে স্ত্রী হয়েছে।'
চীনা ভাষা শেখার পাশাপাশি পাকিস্তানী ছাত্রছাত্রীরা চীনের সংস্কৃতিও অনেক জেনেছেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন, চীনের সংখ্যালঘু জাতির রঙিন সংস্কৃতি, চীনারা কীভাবে ঐতিহ্যিক উত্সব পালন করে, যেমন বসন্ত উত্সবে চীনাদের প্রতিটি পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে ডাম্প্লিং খেতে হয়। চীনা ভাষা বিভাগের ছাত্র জাহিদ মাহমুদের চীনের রূপকথা শুনতে ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে তিনি অন্য ছাত্রকে চীনের রূপকথা শুনান।
চীনা ভাষা শেখার সময় ছাত্রছাত্রীরা চীন ও পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং গভীর মৈত্রী আরো ভালোভাবে জানতে পেরেছে। নাসির বলেছেন, 'চীনের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। চীন বিশাল দেশ এবং খুব সুন্দর। চীনারা কাজের দিকে খুব মনোযোগী এবং পরিশ্রমী। এখন পাকিস্তানে অনেক লোক চীনা ভাষা শেখেন। তাঁরা চীনকে জানতে আগ্রহী। পাকিস্তানী মানুষ চীনের উসুকে পছন্দ করেন। তারা ব্রুস লি, চেকিং চেন ও জেট লি-র চলচ্চিত্র দেখতে পছন্দ করেন। অপর দিকে অনেক চীনা মানুষ পাকিস্তানের চা ও পোষাক পছন্দ করেন। তারা পাকিস্তানে পর্যটন করতে পছন্দ করেন।'
পাকিস্তানে চীনের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলার ইয়াং লিন হাই বলেন, পাকিস্তানে চীনের রাষ্ট্রদূত লু চাও হুইয়ের প্রস্তাবে পাকিস্তানের জাতীয় আধুনিক ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগ আর ইসলামাবাদ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে এবারের বক্তৃতা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে। প্রতিযোগিতার পর কাউন্সিলার ইয়াং লিন হাই বলেছেন, 'আমরা মনে করি, এটা হচ্ছে চীনা ভাষা শেখানোর একটি ভালো উপায়। এ পদ্ধতিতে আরো বেশি পাকিস্তানী ছাত্রকে চীনা ভাষা শেখার ক্ষেত্রে উত্সাহ দেয়া হবে। তারা খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং চমত্কারভাবে বক্তৃতা করেছেন। তাদের আলোচ্য বিষয় বেশির ভাগ চীনের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, চীনের সংস্কৃতি তাদের মনে গভীর দাগ কেটেছে। আমরা আশা করি, আরো বেশি পাকিস্তানী চীনা ভাষা শিখবেন এবং ভবিষ্যতে চীন ও পাকিস্তানের মৈত্রীর জন্য আরো বিরাট অবদান রাখবেন।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) |