সপ্তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলন ২৪ ও ২৫ আক্টোবর পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে । চীনের পন্ডিতরা মনে করেন, এবারের শীর্ষসম্মেলনে এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ক্রমাগত তীব্রতর হয়ে ওঠা বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট মোকাবেলা সমস্যা নিয়ে ব্যাপক মত বিনিময় করবে এবং আর্থিক ক্ষেত্রে এশিয়া ও ইউরোপের বাস্তবনিষ্ঠ সহযোগিতাকে তরান্বিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে ।
বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট মোকাবেলা করার জন্য বর্তমান আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিস্থিতিতে কীভাবে এশিয়া ও ইউরোপের সহযোগিতাকে জোরদার করা যায় তা হচ্ছে এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় ।সি আর আইকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে চীনের আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিশ্ব অর্থনীতি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ছেন ফোংইং বলেছেন, শীর্ষসম্মেলনে সম্ভবত আর্থিক বাজারকে স্থিতিশীল করে তোলা, আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা এবং নিজ দেশের আর্থিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখাসহ তিনটি বিষয় নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা হবে । তিনি বলেন , প্রথমতঃ আর্থিক বাজার স্থিতিশীল করে তোলা হবে অর্থাত্ যৌথভাবে বাজার রক্ষা করার বিস্তারিত ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা । দ্বিতীয়তঃ আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কারেরসমস্যা নিয়ে আলোচনা করা । যাতে এ ধরনের আর্থিক সংকট আর দেখা না দেয় তার জন্য বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নের সঙ্গে খাপখায় না এমন বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে । তৃতীয়তঃ ভালভাবে নিজেদেরকেই কাজ সম্পন্ন করা এশিয়া ও ইউরোপের পক্ষেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থাত্ আমাদের নিজদের আর্থিক বাজার স্থিতিশীল করে তুলতে হবে ।
মাদাম ছেন ফোইং বলেছেন , এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের ইতিহাসে সাফল্যের সঙ্গে আর্থিক সংকট মোকাবেলা করার আদর্শ ছিল । ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আর্থিক সংকট হয়েছিল । এর পরের বছরে বৃটেনের লন্ডনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানত সংকট মোকাবেলার নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং এশিয়া-ইউরোপ ট্রাষ্ট তহবিল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । যাতে এশিয় দেশগুলোকে আর্থিক স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠা এবং সমাজের ওপর সংকটের নেতিবাচক প্রভাব দূর করতে সাহায্য করা যায় । সুতরাং কেউ কেউ অনুমান করে, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট মোকাবেলার জন্য একটি এশিয়া-ইউরোপ তহবিল সংস্থা প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে আলোচনাও হতে পারে ।
জানা গেছে , এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে একটি চেয়ারম্যান বিবৃতি গৃহীত হবে । বিবৃতিতে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোকে আর্থিক নীতি ক্ষেত্রে সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদার করা এবং যৌথভাবেসুদ কমিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানানো হবে ।
চীনের আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনস্থ ইউরোপ গবেষণাগারের প্রধান ফোং চুংপিং মনে করেন , আর্থিক সংকট ছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তন ও জ্বালানী সমস্যাও এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হবে । তিনি বলেন , এশিয়া ও ইউরোপ জ্বালানীর নিরাপত্তা , জ্বালানীর বহুমুখী সমস্যা, জ্বালানী সহযোগিতা এবং আবহাওয়াসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে । আবহাওয়া পরিবর্তন ক্ষেত্রে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার পাশাপাশি নবত্থিত দেশগুলোকে আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবেলার ছাঁচে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে ইউরোপীয়রা আশা করে ।
৩৮জন বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানবা সরকার প্রধান পেইচিংয়ে অনুষ্ঠেয় সপ্তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষসম্মেলনে অংশ নেবেন বলে সম্মত হয়েছেন । এ দিক থেকে এটা আগের যে কোনো শীর্ষ সম্মেলনের সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে । চীনের আন্তর্জাতিক সমস্যা গবেষণা কেন্দ্রের ইউরোপ গবেষণা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডঃ হু তাওয়েই মনে করেন , এবারের শীর্ষ সম্মেলনের ওপর বিভিন্ন সদস্যদেশের গুরুত্ব দেয়া বিশেষ করে এধরণের বহুপক্ষীয় শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতি এশিয়া-ইউরোপ শীর্শসম্মেলনের উন্নয়ন তরান্বিতকরেছে এবং ইতিবাচক রাজনৈতিক নিশ্চয়তা বিধান করেছে । আমি মনে করি , পরবর্তীকালেএশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের ব্যবস্থায়ন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবনিষ্ঠ সহযোগিতার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য থাকবে । --চুং শাওলি
|