সপ্তম এশিয়-ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলন ২৪ অক্টোবর পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে । সি আর আইকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিউ চিয়েই বলেছেন , সহযোগিতার মাধ্যমে আর্থিক সংকটের মোকাবেলা করা এবারের এশিয়-ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হবে । এশিয়া ও ইউরোপ এ দুটো মহাদেশের সহযোগিতা গোটা বিশ্বের উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে ।
অতি বিশেষ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সময় সপ্তম এশিয়-ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । যুক্তরাষ্ট্রের গৌণ ঋণ সংকট থেকে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট ক্রমাগত তীব্রতর হয়ে উঠেছে । এ জন্য সপ্তম এশিয়-ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগীরাষ্ট্র হিসেবে চীন যথাযথভাবে সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও আর্থিক পরিস্থিতিকে সম্মেলনের প্রথম আলোচ্য বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছে । চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিউ চিয়েই ব্যাখ্যা করে বলেছেন , বর্তমানসংকটের সম্মুখে এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মিলিতভাবে অসুবিধাজনক সময় কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যেঐকমত্য ও দৃঢ় আস্থা রয়েছে । তারা সার্বিক আলোচনার ভিত্তিতেসাফল্য অর্জন করবেন । তিনি বলেন ,এশিয়া-ইউরোপ সদস্যদেশ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি চেয়ারম্যান বিবৃতি প্রকাশ করার কথা বিবেচনা করছে । এই বিবৃতিতে আমাদের সম্মুখীন অর্থনৈতিক ও আর্থিক সংকটের বিরুদ্ধে এশিয়া-ইউরোপের দেশগুলোর যৌথ প্রচেষ্টা চালানো, সংকট মোকাবেলা, সংকট কাটিয়ে ওঠা এবং অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার দৃঢ়সংকল্প ও ইচ্ছার কথা প্রকাশ করা হবে ।
জানা গেছে , ১৯৯৭ সালে এশিয়া আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল । ১৯৯৮সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এশিয়-ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানত সংকট মোকাবেলার নীতি নিয়ে আলোচানা করা হয়েছে এবং এশিয়া-ইউরোপ ট্রাস্ট তহবিল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । যাতে এশীয় দেশগুলোকে আর্থিকস্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য এবং সমাজের ওপর সংকটের নেতিবাচক প্রভাব নিরসন করা যায় । এটা আর্থিক সহযোগিতায় এশিয়-ইউরোপ সম্মেলনের আদর্শগত সাফল্য । লিউ চিয়েই বলেছেন , এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন সদস্যদেশ এবারের সম্মেলনের সুযোগে সহযোগিতা জোরদার ও অর্থবিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবে এবং এবং সংকট কাটিয়ে ওঠার পদ্ধতি খুঁজে বের করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন ।
আর্থিক সংকট ছাড়াও এবারের সম্মেলনে জ্বালানী ও আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা এই দুটো বিরাট জটিল সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে এবং ত্রাণ সহযোগিতা , আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি , এশিয়া-ইউরোপ বাণিজ্যে অর্থবিনিয়োগ ও টেকসই উন্নয়নসহ নানা সমস্যা নিয়ে ব্যাপকভাবে মতবিনিময় হবে ।
লিউ চিয়েই বলেছেন,সম্মেলনে"চেয়ারম্যান বিবৃতি" ও "টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কে পেইচিং ঘোষণা"সহ দুটো রাজনৈতিক দলিল এবং সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রস্তাব গৃহীত হবে বলে অনুমাণ করা হচ্ছে ।
লিউ চিয়েই বলেছেন , এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলনের সদস্যদেশের লোকসংখ্যা বিশ্বের মোট লোকসংখ্যার প্রায়৫৭ শতাংশ । অভ্যন্তরের মোট উত্পাদনমূল্যের মোট পরিমান গোটা বিশ্বের মোট পরিমানের অর্ধেকেরও বেশি । মোট বাণিজ্যিক মূল্য বিশ্বের মোটবাণিজ্যিক মূল্যের প্রায়৬০ শতাংশ । এশিয়া ও ইউরোপের সহযোগিতা গোটা বিশ্বের উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে । তিনি বলেন , এশিয়া ও ইউরোপ এই দুটি মহাদেশ সহযোগিতার মাধ্যমে ভালভাবে এশিয়া ও ইউরোপের কাজ চালাতে পারলে বিশ্বের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারবে এবং বিশ্বের আর্থিক স্থিতিশীলতা, বিশ্বের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখতে পারবে । সুতরাং আমি মনে করি , এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর মতে সহযোগিতা জোরদার করে যৌথভাবে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর জন্য আরও একটি সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টি করতে হবে এটা তার একটি মূল কারণ । --চুং শাওলি |