ঢাকা, অক্টোবর ১৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/রয়টার্স)- সার্ক অঞ্চলের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রাপ্তির সম্ভাবনা বিশেষ করে ভুটান ও নেপালের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে এ অঞ্চলের অর্থনীতি যথেষ্ট উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।
রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সার্ক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এসসিসিআই) এবং বাংলাদেশ শিল্প বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত 'দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য সুবিধা' শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি আনিসুল হক বলেন, পর্যাপ্ত জ্বালানি উৎস ছাড়া আমরা আমাদের অর্থনীতির পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছি না। তবে এ অঞ্চলে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। বিশেষ করে ভুটান ও নেপালের জলবিদ্যুৎ উৎসগুলোই বিশ্বের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার অর্ধেক পূরণ করতে পারে।
তিনি জানান, নেপাল একাই ৮০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে যার মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট সাশ্রয়ীভাবে উৎপাদন করা সম্ভব। অন্যদিকে ভুটানেরও বিপুল পরিমাণ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে।
পারস্পরিক 'আস্থাহীনতার' কারণে এ অঞ্চলে আন্তঃবাণিজ্য বাড়তে পারছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি আফতাবুল ইসলাম বলেন, "শক্তিশালী প্রতিবেশী ভারত ভুটানকে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে দেয় না। এক্ষেত্রে নেপালকেও অনেক বাধা পোহাতে হচ্ছে।"
আনিসুল হক বলেন, এটা একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে আমাদের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য এবং আমরা এককভাবে এ সমস্যা সমাধান করতে পারব না।
জানান, বাংলাদেশের দৈনিক গ্যাস ঘাটতি আড়াইশ মিলিয়ন ঘনফুট। আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ তার জ্বালানি চাহিদা সমাধান করতে পারে।
২০০৭ সালে ত্রিপক্ষীয় গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপনের ভারতীয় প্রস্তাব গ্রহণ করাটা লাভজনক হতো উল্লেখ করে আফতাবুল ইসলাম জানান, ভারত মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানির জন্য এ পাইপ-লাইন ব্যবহার করতে চেয়েছিল। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বছরে সাড়ে ১২ কোটি ডলার আয় করতে পারতো, পাশাপাশি ৬০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ পেত।
পারস্পারিক সহযোগিতা বাড়ালে সার্ক দেশগুলোর বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলার থেকে ১২০০ কোটি ডলারে উন্নীত হতে পারে বলে জানান আনিসুল হক।
সেমিনারে সার্ক অঞ্চলের বাণিজ্য নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, "সার্ক দেশগুলোর মধ্যে পারস্পারিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোনো উন্নতি হয়নি, যার ফলে বাণিজ্য ঘাটতি হচ্ছে।" বাণিজ্য বাধা অপসারণের পাশাপাশি মানসিক বাধাগুলো দূর করার জন্য সার্ক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনার শেষে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের বিষয়ে উপদেষ্টা উপদেষ্টা বলেন, "আমার বিশ্বাস বিষয়টি (নির্বাচন নিয়ে সংশয়) তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করছেন বলে আমি মনে করি।"
নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা টিকিয়ে রাখার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন তিনি।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন এসসিসিআই প্রধান তারিক সাইদ, এফবিসিসিআই সিনিয়র ভাইস- প্রেসিডেন্ট মীর নাসির হোসেন। সার্ক দেশগুলোর বাণিজ্য প্রতিনিধি ও এফবিসিসিআই সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
(ডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) |