সপ্তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষসম্মেলন ২৪ ও ২৫ অক্টোবর পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে । চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী লিউ চিয়ে ই ১৪ অক্টোবরপেইচিংয়ে জানান , এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের সব প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে । এবারের সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের সংখ্যা আগের শীর্ষ সম্মেলনকে ছাড়িয়ে যাবে । তিনি আরো বলেন , বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আর্থিক অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক সংকটের মোকাবেলা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা স্থিতিশীল করে তোলা এ শীর্ষ সম্মেলনের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে ।
প্রথম এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলন ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় । এ সম্মেলন হলো এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের সরকারী ফোরাম । এ সম্মেলনের লক্ষ্য হলো এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ , সমঝোতা ও সহযোগিতা বাড়ানো , দুটি মহাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য অনুকূল সুযোগ সৃষ্টি করা এবং নতুন ধরনের অংশিদারী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা । শীর্ষ সম্মেলন হলো এ সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ , শীর্ষ সম্মেলনের দায়িত্ব হলো এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলনের দিকস্থিতি নির্ধারণ করা । শীর্ষ সম্মেলন প্রতি দু' বছর অন্তর এশিয়া ও ইউরোপে পালাক্রমে অনুষ্ঠিত হয় ।
সপ্তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো সহযোগিতা বাড়িয়ে সব সদস্যদেশের কল্যাণবাস্তবায়ন করা । ১৪ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সহকারী মন্ত্রী লি চিয়ে ই বলেন , অতিথি ও সাংবাদিকদের স্বাগত, নিরাপত্তা রক্ষাসহ শীর্ষ সম্মেলনের সব প্রস্তুতির কাজ ইতোমধ্যে সম্পমন্ন হয়েছে । সম্ভবত ৩৮জন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন । এ সংখ্যা আগের ছয়টি শীর্ষ সম্মেলনকে ছাড়িয়ে যাবে । তিনি বলেন , ৩৮জন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান , একটি দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পাঁচটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন ।
চীন বরাবরই এশিয়া ও ইউরোপের সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে আসছে । ১৯৯৬ সালে প্রথম এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলন থেকে চীনের প্রধানমন্ত্রীএশিয়া-ইউরোপের সব কটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন এবং অনেক কার্যকর প্রস্তাব পেশ করেছেন । এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলনগুলোতে বাস্তবায়িত শতাধিক প্রস্তাবের মধ্যে ১৭টি প্রস্তাব চীন পেশ করেছে । এ ছাড়া চীন এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর মন্ত্রীপর্যায়ের সম্মেলন ও অন্যান্য কর্মসূচী আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে ।
যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । কাজেই এশিয়া ও ইউরোপের সহযোগিতা বাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের মোকাবেলা করা সম্মেলনের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে । সহকারী মন্ত্রী লিউ চিয়ে ই বলেন , আশা করি সকল সদস্য দেশের মিলিত প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট মোকাবেলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সদস্যদেশগুলোর স্বার্থ আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিন্ন স্বার্থ রক্ষিত হবে এবং সংকট মোকাবেলার ভালো উপায় খুঁজে পাওয়া যাবে ।
বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনে জ্বালানী শক্তি, আবহাওয়া পরিবর্তন , খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সমস্যা নিয়েও আলোচনা করা হবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ সহযোগিতা বাড়ানো , আন্তর্জতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি , এশিয়া ও ইউরোপের বাণিজ্য বাড়ানো এবং টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কে ব্যাপকভাবে মতবিনিময় করা হবে ।
নিয়ম অনুসারে , শীর্ষসম্মেলন শেষে চেয়ারম্যান বিবৃতিও প্রকাশ করা হবে । এতে বিভিন্ন সমস্যা সংক্রান্ত সম্মেলনের সদস্যদেশগুলোর অবস্থান ব্যাখ্যা করা হবে এবং সহযোগিতার দিকস্থিতি ও ক্ষেত্র স্থির করা হবে । |