.jpg)
২৫ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ১০ মিনিটে চীনের চিউ ছুয়ান উপগ্রহ উতক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে 'লং মার্চ দুই-এফ' রকেটের সাহায্যে 'শেনচৌ সাত' মানববাহী নভোযান সুষ্ঠুভাবে উড্ডয়ন করেছে। চাই চি কাং, লিউ বো মিং ও চিং হাই ফাং এ তিনজন নভোচারী মহাকাশে পাঠানো হয়েছে।
'শেনচৌ সাত' সাফল্যের সঙ্গে উতক্ষেপণের পর চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও চিউ ছুয়ান উপগ্রহ উতক্ষেপণ কেন্দ্রে চীনের মহাকাশ কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'শেনচৌ-সাত মানববাহী নভোযান উতক্ষেপণ হচ্ছে এ বছর আমাদের দেশে সবচেয়ে প্রতিনিধিত্ব ও প্রভাবশালী জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণার বাস্তব অনুশীলনের অভিযান। এটা হচ্ছে চীনা জনগণের বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পর্বত আরোহণের মত আরেকটি মহত্ ও দুঃসাহসিক কর্ম।'
২৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিট চীনের মহাকাশযান ইতিহাসের একটি উল্লেখ্যযোগ সন্ধিক্ষণ। নভোচারী চাই চি কাং 'শেনচৌ সাত' নভোযানের বাইরে এসে মহাশুন্যে চীনা নভোচারী প্রথম পদক্ষেপ রাখলেন। তিনি বলেন, 'আমি ক্যাবিনেটের বাইরে এসেছি। খুব ভালো লাগছে। শেনচৌ সাত সারা দেশের জনগণ এবং সারা বিশ্বের জনগণকে শুভেচ্ছা জানায়।'
১৯৬৫ সালে সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়নের নভোচারী আলেক্সি লেওনোভ প্রথমবারের মতো মহাশুন্যে পদচারণার পর এখন পর্যন্ত নভোচারীরা মহাশুন্যে মোট ৩০০ এরও বেশি বার পদচারণা করেছেন। কিন্তু মহাশুন্যে চাই চি কাংয়ের পদক্ষেপ হচ্ছে মহাশুন্যে চীনা ব্যক্তির প্রথম পদচিহ্ন। চাই চি কাং এর জন্মভূমির প্রাথমিক স্কুলের একজন ছাত্র তাঁকে বলেছে, 'আমি চিরকালে তোমাকে সমর্থন করবো। তুমি আনন্দচিত্তে মহাশুন্যে যাও এবং নিরাপদ পৃথিবীতে ফিরে আসো এই কামনা করি।'
বেইজিং এর অধিবাসী চাং ওয়েই নভোচারী চাই চি কাং সাফল্যের সঙ্গে নভোযানের বাইরে যাওয়ার দৃশ্য দেখে আবেগপুর্ণভাবে গর্বিত বোধ করেন। তিনি বলেন, 'এটা হচ্ছে চীনের মহাকাশযান ব্রতের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। একজন চীনা হিসেবে আমি চীনের মহান ব্রতের উন্নয়ন দেখতে পেরে সৌভাগ্য বোধ করি। চীনকে কামনা করি। শেনচৌ সাতের শুভ কামনা করি। আমাদের নভোচারীদেরও শুভ কামনা করি।'
মহাশুন্যে চীনের প্রথম বার হাঁটা বিদেশী বহু গুণীজনের ইতিবাচক মূল্যায়ন পেয়েছে। ব্রাজিলের মহাকাশযান ব্যুরোর মহাপরিচালক কারোস গানেম বলেন, 'শেনচৌ সাত-এর উতক্ষেপণ হচ্ছে মহাশুন্যে নির্বাহী কর্মকান্ড সম্পন্ন একটি কর্তব্য। নভোচারী মহাশুন্যে প্রবেশ করে ক্যাবিনেটের বাইরে গিয়ে তত্পরতা চালান। এটা কেবল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মান অত্যন্ত উন্নত এবং জাতীয় গৌরববোধ সম্পন্ন দেশই সম্পন্ন করতে পারে এবং এর জন্য উদযাপন করতে পারে। ফলে ব্রাজিলের মহাকাশযান মহলের সকল কর্মচারীরা মহাকাশযান প্রযুক্তিতে চীনের লক্ষণীয় অগ্রগতি দেখে আনন্দ পেয়েছি। আমরা চীনা জনগণের সঙ্গে এই মাইলফলক ও তাত্পর্যসম্পন্ন ঘটনা উদযাপন করি।'
ইসরাইলের মহাকাশ ও চালক-বিহীন উড্ডয়ন যন্ত্র গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক তাল ইনবার মনে করেন, 'চীনের মহাকাশ পরিকল্পনা ধাপে ধাপে মহাকাশ স্টেশন প্রতিষ্ঠা ও চাঁদ আরোহন করার দীর্ঘকালীন উন্নয়নের লক্ষবস্তুর দিকে এগুচ্ছে। মহাশুন্যে পদচারণা হচ্ছে প্রতিটি উন্নত মানের মানববাহী মহাকাশযান পরিকল্পনার মূল অংশ। মহাশুন্যে যন্ত্র মেরামত করা বা বড় আকারের কাঠামো নির্মাণ করতে চাইলে নভোযানের বাইরে যাওয়ার প্রযুক্তি জানতে হবে। ফলে এটাকে চীনের মহাকাশযান ব্রতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও নতুন পর্যায় বলা যায়।'(ইয়ু কুয়াং ইউয়ে) |