v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
২৯তম অলিম্পিক গেমস শুরু--২
2008-08-08 22:36:48
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়া পেইচিং অলিম্পিক গেমস আরো অনেক লক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। তথ্য মাধ্যম মনে করে, এবারের পেইচিং অলিম্পিক গেমস বহু 'প্রথম রেকর্ড' সৃষ্টি করেছে।

পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরা অনেক দেশের শীর্ষ নেতাকে দেখেছি। শীর্ষ নেতাদের সংখ্যার দিকে অলিম্পিক গেমসের রেকর্ড নবায়ন করেছে।

'ক্রীড়া মন্ত্রী ছাড়া আশিটিরও বেশি বিদেশি নিবন্ধিত মাননিয় অতিথি চীনে এসে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মসূচীতে উপস্থিত হওয়ার তথ্য স্বীকার হয়েছে।'

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিউ চিয়ান ছাও ২৪ জুলাই এই তথ্য জানিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, নিবন্ধিত মাননিয় অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুকুদা ইয়াসুও, ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট শিমোন পেরেস, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুদ প্রমুখ।

পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ প্রতিনিধি দলের সংখ্যার দিক থেকেও নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরা দেখেছি, ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলের অলিম্পিক কমিটি

২০০২ সালের ১৩ জুলাই " পেইচিং অলিম্পিক কার্যক্রম" আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয় । এ কার্যক্রমে " নতুন পেইচিং , নতুন অলিম্পিক" এ দুটি প্রধান প্রতিপাদ্য এবং " সবুজ অলিম্পিক , বিজ্ঞানসম্মত অলিম্পিক ও সাস্কৃতিক অলিম্পিক" এ তিনটি প্রধান চেতনা উত্থাপন করা হয় ।

২০০৩ সালের ৩ আগস্ট ২৯তম অলিম্পিক গেমসের প্রতীক " চীনা সীল , নৃত্যরত পেইচিং" আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ।

২০০৪ সালের ১৩ জুলাই সন্ধ্যায় ২০০৮ সালের পেইচিং প্রতিবন্ধী অলিম্পিক গেমসের প্রতীক " আকাশ পাতালের মানব" আষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় । এ বছরের ২৯ আগস্ট এথেন্স অলিম্পিক গেমসের সমাপনি অনুষ্ঠানে পেচিংয়ের তত্কালীন মেয়র ওয়াং ছি শান অলিম্পিক গেমসের পতাকা গ্রহণ করেন । এতে প্রতীয়মান হয় যে , অলিম্পিক গেমস আনুষ্ঠানিকভাবে পেইচিং সময়পর্বে প্রবেশ করে ।

২০০৫ সালের ২৬ জুন ২৯তম অলিম্পিক গেমসের শ্লোগান " এক বিশ্ব , এক স্বপ্ন" আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশত হয় । এ বছরের ১১ নভেম্বর পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মাস্কট – ফুয়া আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ।

২০০৬ সালের ২৯ এপ্রিল পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রতিযোগিতা বিভাগ চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হয় । এ গেমসে তোট ২৮টি বড় বিভাগ ও ৩০২টি ছোট বিভাগ থাকবে ।

২০০৭ সালের ২৭ মার্চ পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পদকের নমুনা প্রকাশ কার হয় । এ বছররের ১৫ এপ্রিল পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের জনসাধারণের কাছে ২৯তম অলিম্পিক গেমসের টিকিট বিক্রি শুরু করার কথা ঘোষণা করে । একই বছরের ২৭ এপ্রিল পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মশাল হস্তান্তর লাইন ও পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয় ।

২০০৮ সাল শুরু হওয়ার পর পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধন ঘনিয়ে আসছে । তখন থেকে আনন্দময় মুহুর্তগুলো বেড়েই চলেছে ।

গ্রীসের স্থানীয় সময় ২৪ মার্চ সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকের ভাবগম্ভীর আওয়াজের তালে তালে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পবিত্র মশালের অগ্নি সংগ্রহ অনুষ্ঠান প্রাচীন অলিম্পিয়া ধ্বংসাবশেষে অবস্থিত হেরা মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় ।

অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান লিউ ছি বলেন , আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি যে , অলিম্পিক মশাল চিরকাল জনসাধারণের মনে প্রজ্জ্বলিত হয়ে থাকবে এবং চিরকাল মানবজাতির শান্তি , মৈত্রী ও অগ্রগতি অন্বেষনের গতিধারা উদ্ভাসিত করবে ।

তারপর অলিম্পিক মশাল গ্রীসে সপ্তাহব্যাপী হস্তান্তর শুরু হয় এবং ৩১ মার্চ চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে পৌঁছে । একই দিন সকালে পেইচিং অলিম্পিক মশাল স্বাগত জানানো অনুষ্ঠান ও মশাল হস্তান্তর শুরু হওয়ার অনুষ্ঠান থিয়ান আন মেন মহাচত্বরে অনুষ্ঠিত হয় ।

চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও চীনের মাটিতে প্রজ্জ্বলিত প্রথম " শুভ মেঘ" মশাল চীনের বিখ্যাত দৌড়বিদ লিউ সিয়াংয়ের হাতে অর্পণ করেন । তারপর প্রেসিডেন্ট হু ঘোষণা করেন ,

আমি ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মশাল হস্তান্তর শুরু হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি ।

সেই মুহুর্ত থেকেই অলিম্পকের উত্পত্তিস্থল থেকে আসা ২৯তম অলিম্পিক গেমসের মশাল পর পর বিশ্বের পাঁচটি মহাদেশের ১৯টি দেশের ১৯টি শহর সফর করেছে । ৩০ এপ্রিল যখন পেইচিং অলিম্পিক গেমস শুরু হতে আরো ১০০ দিন বাকি ছিল , তখন অলিম্পিক মশাল বিদেশ ভ্রমণ শেষ করে চীনের হংকংয়ে ফিরে আসে ।

সেই দিন সন্ধ্যায় পেইচিংয়ের মেহনতী জনগণের সাংস্কৃতিক ভবনের থাই প্রাসাদে যথাযোগ্য মর্যাদার সংগে পেইচিং অলিম্পিক গেমস শুরু হতে আরো ১০০ দিন বাকি উপলক্ষে উদযাপনী অনুষ্ঠান ও ২০০৮ সালের অলিম্পিক গান সংগ্রহ ও নির্বাচন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ।

ঘড়ির ঘন্টা বাজার সংগে সংগে শতাধিক শিল্পী মিলিত কন্ঠে উদযাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান গান " পেইচি আপনাকে স্বাগত জানায়" গেয়ে পেইচিংয়ের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বকে আন্তরিক সংবর্ধনা জানানোর ভাবানুভূতি প্রকাশ করেন ।

এরপর চীনের অভ্যন্তরে অলিম্পিক মশাল হস্তান্তর শুরু হয় । ৮ মে অলিম্পিকের ইতিহাসে আরেকটি উজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজিত হলো । সেই দিন অলিম্পিক মশাল প্রথমবারের মত বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃংগ – চুমোলংমা শৃংগে আরোহন করতে সক্ষম হয় । মশালবাহক ও পর্বতারোহীরা চুমোলংমা শৃংগে পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে শুভ কামনা করেছেন । তারা বলেন ,

এক বিশ্ব , এক স্বপ্ন । আবেগ প্রজ্জ্বলিত করুন এবং স্বপ্ন হস্তান্তর করুন । জাসিদেলে ।

৬ আগস্ট ২৯তম অলিম্পিক গেমসের মশাল বিশ্বের ১৯টি দেশ , চীনের অভ্যন্তরের ৩০টি প্রদেশ , কেন্দ্রশাসিত শহর ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং হংকং ও ম্যাকাওয়ে হস্তান্তরের পর শেষ পর্যন্ত অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক শহর – চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে পৌঁছে । আজ সন্ধ্যায় সর্বশেষ মশালবাহক পেইচিংয়ের জাতীয় স্টেডিয়াম – বার্ড নেস্টে অবস্থিত প্রধান মশাল স্তম্ভে অগ্নি প্রজ্জ্বলন করেন । এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের এ দীর্ঘতম মশাল হস্তান্তররের সাফল্যজনক সমাপ্তি ঘটেছে ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China