সিনচিয়াংয়ের ৭৫ শিশু-শিক্ষার্থীর গল্প
  2020-01-06 15:21:38  cri

 


স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ইলি কাজাখঅধ্যুষিত অঙ্গরাজ্যের হাইনুখ জেলার আরেউসথাং গ্রামে ৭৫টি শিশু-শিক্ষার্থীকে নিয়ে পরিচালিত স্কুলের ক্লাসশেষের ঘন্টা বেজে ওঠে। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে আসে। নিম্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী থেকে উচ্চ শ্রেণির শিক্ষার্থী পর্যন্ত শিশুরা এক লাইনে দাঁড়িয়ে স্কুলের বাইরে এক বাসে ওঠে। বাসের চালক আহমেদ রোজ গাড়িতে বাচ্চাদের জন্য অপেক্ষা করেন।

 

বাচ্চারা সবাই বাসে ওঠার পর প্রত্যেকের নাম ধরে ডাকেন চালক। রোজ তিনি একই কাজ করেন। কারণ, প্রতিদিন তাকে ৭৫টি বাচ্চাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে হয়। অন্ধকার হলেও, সবাই একসাথে বাসায় ফিরে যায়। সবাইকে উপস্থিত পেয়ে আহমেদ ৬ কিলোমিটার দূরে আরেউসথাং গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

গত বছরের ২৪ নভেম্বর এ বাস চালু হয়েছে। এর আগে গ্রামের বাচ্চারা প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করতো পিতামাতাদের সাইকেল বসে বা গাড়ি ভাড়া করে। হেঁটে আসতে এক ঘন্টার বেশি সময় লাগে। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জুবাইর আলিমক আগে পিতামাতার ব্যাটারিচালিত গাড়িতে করে স্কুলে যাওয়া-আসা করতো। তবে গ্রীষ্মকালে তার বাবা-মা জাফরান সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন। তখন তাকে হেঁটেই স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হতো। এ সম্পর্কে বালক আলিমক বলল, 'গ্রীষ্মকালে আমার বাবা-মা সবচেয়ে ব্যস্ত। তখন আমারও অনেক কষ্ট হতো। তাই পড়াশোনা করে টাকা উপার্জন করে গাড়ি কিনব বলে মনে মনে ঠিক করেছি।'

চাবুচারসিব অঙ্গরাজ্যের সরকারি কর্মকর্তা ওয়াং খ্য বিন বলেন, আরেউসথাং গ্রামের বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া-আসার সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছিল। তখন জেলা ও উপজেলার স্থানীয় সরকার গাড়ি ভাড়া করে বা স্কুলের গাড়ি মেরামত করে বাচ্চাদের আনা-নেওয়া করতো। তবে নানান কারণে এসব শিশু-শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া-আসার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

গত বছরের জুন মাসে জেলায় 'বিভিন্ন পক্ষের যৌথ উদ্যোগ ব্যবস্থা' গঠন করা হয়। তখন থেকে জেলা, উপজেলার সরকারি কর্মকর্তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের সমস্যা তদন্ত করেন এবং সমস্যার মূল কারণ বিশ্লেষণ করে সংস্কারব্যবস্থা চালু করেন। সেপ্টেম্বর মাসে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া-আসার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। সংশ্লিষ্ট বাস কোম্পানি জেলার মধ্যে ৫টি নতুন রুট চালু করতে রাজি হয়। তখন থেকে আরেউসথাং গ্রামের ৭৫ জন শিশু-শিক্ষার্থী বাসে আসা-যাওয়া করছে।

বাস ২০ মিনিট চলার পর দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী রেজয়া তালিপুখ বাস থেকে নামে। তার বাবা বাড়ির কাছে তার জন্য অপেক্ষা করেন। কন্যাকে দেখে বাবা তালিপুখ অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন, 'এ বাস খুবই ভালো। প্রতিদিন সময়মতো স্কুলে যাওয়া-আসা করা যায়। আমরাও নিশ্চিন্তে অফিসে যেতে পারি। শীতকালে বাচ্চাদের আগের মতো মোটরসাইকেলে বসে ঠাণ্ডা সহ্য করে স্কুলে যাওয়ার দরকার নেই। এ ব্যবস্থা খুবই ভালো।'


1  2  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040