নতুন যুগে চীনা পরিবারের শিক্ষাদানের সুষ্ঠু উন্নয়ন এবং থাইল্যান্ডের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র 'লুবান কারখানা'
  2019-10-21 11:30:36  cri

থাইল্যান্ডের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র 'লুবান কারখানা'

থাইল্যান্ডের আয়ুথায়া প্রযুক্তি একাডেমি দেশটির ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকার আয়ুথায়া স্তূপ ও প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষের কাছে অবস্থিত। ২০১৬ সালের ৮ মার্চ একাডেমিতে বিশ্বের প্রথম 'লুবান কারখানা' প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে চীন-থাইল্যান্ড কারিগরি প্রশিক্ষণ সহযোগিতা শুরু হয় এবং তা কারিগরি প্রশিক্ষণের আন্তর্জাতিকায়নের নতুন দৃষ্টান্তে পরিণত হয়। একাডেমির প্রেসিডেন্ট জারুন ইয়োব্রুম সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় এ কারখানার উন্নয়নের গল্প শেয়ার করেন।

কয়েক বছর আগে থাইল্যান্ডের রাজকুমারী মাহা চাক্রি সিরিনধর্ন চীন সফরকালে থিয়ানচিন কারিগরি প্রশিক্ষণ স্কুল পরিদর্শন করেন। তিনি থাইল্যান্ডের কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালু করেন। তারপর দেশের ৮টি কারিগরি একাডেমির প্রেসিডেন্টগণ থিয়ানচিনে বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেন। আয়ুথায়া প্রযুক্তি একাডেমি এর মধ্যে একটি। সফরের পর থিয়ানচিনের কয়েকটি কারিগরি একাডেমির সাথে সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করেন জারুন।এ সম্পর্কে তিনি বলেন,  

'২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত বহুবারের মতো শিক্ষার্থী বিনিময় সফর ও প্রশিক্ষণ প্রকল্প চালু হয়েছে। ব্যক্তিদের বিনিময় ঘনিষ্ঠতর করার সাথে সাথে থিয়ানচিন থেকে সরঞ্জামও থাইল্যান্ডে আনা হয়েছে, যাতে প্রশিক্ষণের মান উন্নীত হয়েছে এবং ধাপে ধাপে 'লুবান কারখানা' তৈরি হয়েছে। থিয়ানচিন বোহাই কারিগরি একাডেমির সহায়তায় আমাদের ৮টি মেজর চালু হয়েছে। সবুজ জ্বালানি চালিত গাড়ি, রোবর্ট, কম্পিউটার মাউস, স্বয়ংক্রিয় উত্পাদন লাইন ইত্যাদি। তাছাড়া, থাইল্যান্ডের রেশমপথ কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের চীনা ভাষার ক্লাসের জন্য চীনা শিক্ষক পাঠানোর ব্যবস্থা করে ।'

 

২০১৬ সালের ৮ মার্চ বিশ্বের প্রথম 'লুবান কারখানা' প্রতিষ্ঠিত হয়। আসলে লুবান প্রাচীনকালে চীনের একজন দক্ষ কাঠমিস্ত্রী, যার শ্রেষ্ঠ দক্ষতা রয়েছে। পরে দক্ষ হস্তশিল্পীর প্রতীকে পরিণত হয়। থাইল্যান্ডে 'লুবান কারখানা' প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পে মেকাট্রনিক্স, সিএনসি প্রযুক্তি, ইন্টারনেট অফ থিংসসহ বিভিন্ন মেজরও চালু হয়। জারুন ইয়োব্রুম বলেন,

'বিভিন্ন মেজর স্থাপন করার পর আমাদের প্রশিক্ষণ মান থাইল্যান্ডের অন্যান্য কারিগরি স্কুলের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। তখন তারা আমাদের কাছে উন্নয়নের অভিজ্ঞতা শিখতে চায়। 'লুবান কারখানা' স্টাইল থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানসহ অনেক দেশের প্রতিনিধি আমাদের স্কুল পরিদর্শন করেছেন।'

কয়েক বছরের অনুসন্ধান ও অনুশীলনের পর চীন ও থাইল্যান্ডের কারিগরি প্রশিক্ষণ সহযোগিতা অনেক সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ৮টি দেশে নিজের 'লুবান কারখানা' প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ সম্পর্কে জারুন মনে করেন, এ প্রশিক্ষণ পদ্ধতির সাফল্য থিয়ানচিন শিক্ষা কমিটির দূরদৃষ্টির সাথে জড়িত। তিনি বলেন,

'দ্রুতগতি ট্রেন বা থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ প্রকল্প যাই হোক না কেন 'লুবান কারখানা' একটি প্রদর্শনী প্ল্যাটফর্ম। শিক্ষার্থীরা চীনের প্রযুক্তি শেখার মাধ্যমে আধুনিক চীনের বিজ্ঞান প্রযুক্তি উন্নয়ন বুঝতে সক্ষম এবং কেউ পুরনো চিন্তাভাবনায় চীনকে পর্যালোচনা করলে, আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজের অভিজ্ঞতায় চীনের পরিবর্তন অবস্থা ব্যাখ্যা করবে। আরেকটি আনন্দদায়ক ব্যাপার, চলতি বছর থিয়ানচিনে সরকারি বৃত্তির সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি, এভাবে আরো বেশি শিক্ষার্থী চীনে লেখাপড়া করতে সক্ষম।'

২০১৮ সালের ২০ জুলাই থাইল্যান্ডে 'লুবান কারখানা' তৃতীয় পর্যায়ের প্রকল্প—রেলপথ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যাতে থাইল্যান্ড দ্রুতগতির ট্রেনের ব্যক্তি প্রশিক্ষণ দিতে পারে। এ প্রকল্পের একটি বৈশিষ্ট্য হল অনলাইন প্রশিক্ষণ। যে কোনো প্রশ্ন থাকলে চীনা শিক্ষকদের সাথে বিনিময় করতে পারে। এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট জারুন বলেন, চীনের সাথে এমন ঘনিষ্ঠভাবে প্রশিক্ষণ কোর্স ও সম্পর্ক থাইল্যান্ডের যে কোনো স্কুলে দেখা যায় না। তিনি বলেন,

'অনলাইন প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি চীনের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। চীনের সাথে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত সঠিক, আমাদের গ্রুপের প্রত্যেক সদস্য চীনে লেখাপড়া করেছেন এবং প্রতি বছর একাডেমি থেকে ৪ বা ৬ জন শিক্ষককে চীনে প্রশিক্ষণ কোর্সে পাঠানো হয়। থাইল্যান্ডের প্রথম দফার দ্রুতগতির ট্রেনের দক্ষ ব্যক্তি আমাদের স্কুল থেকে স্নাতক হবে। চীনের বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আমাদের স্কুলে ১.৫ কোটি থাই বাত মূল্যের সরঞ্জাম প্রদান করেছে, চীনা ব্যবসায়ীদের দূরদৃষ্টি রয়েছে, তা পারস্পরিক উপকারিতার পদ্ধতি।'

প্রিয় শ্রোতা, সময় দ্রুত চলে যায়। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও এখানেই শেষ করতে হবে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

সময় মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ঠিকানা: www.bengali.cri.cn

তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, থাকুন সুন্দর ও আনন্দে। আগামী সপ্তাহের একই দিনে একই সময়ে আবারো কথা হবে। যাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)


1  2  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040