চীনের জাতি সম্পর্কে মূল তথ্য
  2018-12-26 13:49:57  cri
চীনের আছে ৫৬টি জাতি এবং স্বীকৃত সংখ্যালঘু জাতির সংখ্যা ৫৫টি। হান জাতি চীনের বৃহত্তম একটি জাতি এবং হান জাতির মানুষের তুলনায় অন্য জাতির মানুষের সংখ্যা কম বলে আমরা বাকি ৫৫টি জাতিকে সংখ্যালঘু জাতি বলে ডাকি।

চীন একটি বহু জাতির দেশ। তবে কতো জাতি আছে এবং সেগুলোর নাম কী? এ প্রসঙ্গে আগে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানা ছিল না। ১৯৫৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর প্রথম আদম শুমারিতে নিবন্ধিত জাতির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০০টির বেশি। এ ৪০০টি নামের মধ্যে কোনো কোনো জাতির ভিন্ন নাম, কোনো কোনো জাতির ভিন্ন শাখা, কোনো কোনো জাতির একাধিক নামের ভিন্ন উচ্চারণও অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা করা হয় এবং গত শতাব্দির ৫০ থেকে আশির দশক পর্যন্ত বিভিন্ন বিচার-বিশ্লেষণের পর চীনে মোটা দাগে মোট ৫৬টি জাতি আছে বলে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়।

চীনে একই জাতির মানুষ বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। অনেক জায়গায় বিভিন্ন জাতির মানুষ পাশাপাশি বাস করে। যেমন, হান জাতিঅধ্যুষিত অঞ্চলে অন্য জাতির মানুষও দেখা যায়। আবার সংখ্যালঘু জাতিঅধ্যুষিত অঞ্চলে হান জাতির মানুষ দেখা যায়। দীর্ঘকাল ধরে চীনের বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিনিময় ও যোগযোগের কারণে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। চীনের সব প্রদেশ, স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ও কেন্দ্রশাসিত মহানগরে প্রায় সব সংখ্যালঘু জাতির মানুষ পাওয়া যাবে। আর অধিকাংশ জেলায় দুই বা তারচেয়ে বেশি জাতির মানুষের দেখা মিলবে, যারা একসঙ্গে বসবাস করে আসছেন।

চীনের সংখ্যালঘু জাতির মানুষ মূলত ইনার মঙ্গোলিয়া, সিন চিয়াং, নিংসিয়া, কুয়াংসি, তিব্বত, ইউননান, কুইচৌ, ছিংহাই, সিছুয়ান, কানসু, লিয়াং নিং, চিলিন, হুনান, হুপেই, হাই নান ও তাইওয়ানসহ নানা প্রদেশে ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বাস করে। এর মধ্যে ইউন নান প্রদেশে সবচেয়ে বেশি জাতির মানুষ বাস করে। এখানে ৫৬টি জাতির মধ্যে ৫২টি জাতির মানুষ আছে। এর মধ্যে ২৫টি সংখ্যালঘু জাতির প্রতিটির লোকসংখ্যা ৫ হাজার বা তারচেয়ে বেশি।

২০১০ সালে চীনের সর্বশেষ আদম শুমারি করা হয়। শুমারি অনুযায়ী, চীনের মূল ভূভাগের ৩১টি প্রদেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, কেন্দ্রশাসিত মহানগর ও বাহিনীর মধ্যে হান জাতির মানুষের সংখ্যা ১,২২৫,৯৩২,৬৪১ জন, যা মোট লোকসংখ্যার ৯১.৫১ শতাংশ। বাকি সংখ্যালঘু জাতির মানুষের সংখ্যা ১১৩,৭৯২,২১১ জন।

সংখ্যালঘু জাতিঅধ্যুষিত এলাকার স্বায়ত্বশাসন নীতি হল চীনের বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী চালু একটি মৌলিক নীতি। ১৯৪৭ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় চীনের প্রথম স্বায়ত্বশাসিত এলাকা, ইনার মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্বশাসিত এলাকা। তারপর যথাক্রমে সিনচিয়াং ইউগুর জাতির স্বায়ত্বশাসিত এলাকা, কুয়াং সি চুয়াং জাতির স্বায়ত্বশাসিত এলাকা, নিং সিয়া হুই জাতির স্বায়ত্বশাসিত এলাকা এবং তিব্বত স্বায়ত্বশাসিত এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বায়ত্বশাসিত এলাকাও প্রদেশের মতো একই পর্যায়ের প্রশাসনিক বিভাগ।

২০১৭ সাল পর্যন্ত চীনে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৫৫টি স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ। এর মধ্যে স্বায়ত্বশাসিত এলাকা ৫টি, স্বায়ত্বশাসিত রাজ্য ৩০টি এবং স্বায়ত্বশাসিত জেলা ১২০টি। ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতির মধ্যে ৪৪টির নিজস্ব স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ আছে।

তা ছাড়া, এখন চীনে ৬৪০১০১ জন 'অনির্ধারিত জাতিগত গ্রুপ' (unrecognized ethnic groups)-এর মানুষ আছেন। এসব মানুষ কোন জাতির, তা নির্ধারণ করা কঠিন। এরা হান জাতি বা অন্য জাতির সঙ্গে আত্মীকরণ হয়ে গেছেন বা আলাদা জাতির মানুষ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি পাননি।

চীনে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর ধর্মীয় বিশ্বাসেও আছে পার্থক্য। তবে, দেশের আইন তাদের নিজস্ব ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে।

1  2  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040