টিনজাত মাছ
প্রিয় বন্ধুরা, আপনি 'টিনজাত মাছ' খেয়েছেন? বাংলাদেশে অনেক নদী আছে। আপনারা হয়তো নদীর তাজা মাছ খেতে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকে 'টিনজাত মাছ' খেতে পছন্দ করি। চাকরি হওয়ার পর আমি রান্না করার সময় সাশ্রয় করার জন্য প্রায় মার্কেট থেকে টিনজাত মাছ কিনে খেতাম। আমার বাবা এ ধরনের মাছ পছন্দ করতেন না। একদিন তিনি খুব রেগে আমাকে বকা দিলেন। তিনি বললেন, 'তুমি জানো না, টিনজাত খাবার সংরক্ষন করার জন্য নানা ধরনের রাষায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়। এ রকম খাবার স্বাস্থ্যর জন্য ভালো না। যদি আমি আবার দেখি, তুমি টিনজাত মাছ কিনে এনেছো, আমি তা ফেলে দিবো'। বাবার কথা আমি একমত ছিলাম না। তবে তার কথার বিরোধিতা করতে চাই নি। ফলে এরপর থেকে আমি খুব কম টিনজাত মাছ খাই। এখন অনেক বছর হয়ে গেছে। বাবাও আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন। যখন টিনজাত মাছ দেখি, তখন বাবার কথা মনে পড়ি, তাকে খুব মিস করি।
বন্ধুরা, এবার শুনুন চৌ বি ছাংয়ের গাওয়া 'টিনজাত মাছ' নামের গানটি। তিনি গেয়েছেন, 'আমি টিনজাত মাছের মতো শুয়ে আছি। আমি একাকী না। তোমাকে মিস করার সময় একাকী বোধ করি। মাছ সমুদ্র ত্যাগ করলে অক্সিজেনের অভাব হয়। তোমাকে হারালে আমার মন হারিয়ে যায়। টিনজাত মাছের মতো আর আলো দেখা যায় না'।
করল্লা
প্রিয় বন্ধু, প্রতিটি মানুষের খাবার অভ্যাস ভিন্ন। কেউ মাংস খেতে পছন্দ করেন। কেউ মিষ্টিজাত খাবার খেতে পছন্দ করেন। কেউ আবার শুধু আলু বা শাক-সবজি খেতে পছন্দ করেন। আবার কেউ পেঁয়াজ খান না। অনেকে মুরগি খান না। আমি করল্লা খাই না। করল্লার স্বাধ তিতা। যে কোনো পদ্ধতিতে রান্না করলেও করল্লা খেতে তিতা লাগে আমার কাছে। যদিও আমি জানি, স্বাস্থ্যের জন্য করল্লা খুবই ভালো। তবু খাই না!
সুপ্রিয় শ্রোতা, ২০১১ সালে হংকংয়ের কণ্ঠশিল্পী চেন ঈ শুন 'করল্লা' নামে একটি গান গেয়েছেন। তিনি এ গানে তার বড় হওয়ার পর নানা কষ্টকর অভিজ্ঞতা স্মরণ করেছেন। তিনি গেয়েছেন, 'তোমার সঙ্গে এক সাথে খাচ্ছি। হঠাত্ দু'জন পরস্পরের দিকে তাকিয়ে হেসেছি। থালার মধ্যে রয়েছে করল্লা। আমাদের জীবনের অনেক কাজ শেষ পর্যন্ত না হলে ফলাফল জানি না। ছোটবেলায় করল্লা তিতা বলে আমরা খেতাম না। বড় হওয়ার পর আমি করল্লা খেয়ে জীবনের অনেক কথা উপলব্ধি করেছি। তারুণ্যে আমরা বেশ পরিশ্রম করেছি। ফলে আজকের সুখি জীবন খুঁজে পেয়েছি। আমাদের জীবনের অর্ধেক পথ অতিক্রম করার পর সবেমাত্র জীবনের কিছু চিন্তাভাবনা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছি। কত কষ্ট পার করেছি জীবনে! এখন তা স্মরণ করে আর কষ্ট লাগে না'।
পেঁয়াজ
বন্ধুরা, পেঁয়াজ চীনের প্রধান সবজির অন্যতম। চীনারা পেঁয়াজ আর ডিম একসাথে ভাজি করে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। অথবা পেঁয়াজ আর মাংস দিয়ে ডাম্প্লিং বানানো হয়। পেঁয়াজের অনেক গুণ আছে। পেঁয়াজ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে পেঁয়াজ কাটার সময় একটু কষ্ট, অনেক কাঁটলে চোখে জল ঝরে।
২০০৮ সালে তাইওয়ানের গায়ক ইয়াং চো ওয়েই 'পেঁয়াজ' নামে একটি গান গেয়েছেন। এ গান সে বছরের সেরা দশটি গানের পুরস্কার পেয়েছে। তিনি গেয়েছেন, 'যদি তোমার চোখে আমায় দেখো, যদি তুমি আমার হৃদয় ভাঙ্গার আওয়াজ শুনতে পাও, তা হবে আমার জন্য বিষ্ময়কর। আমি বায়ুর মতো এক কোণায় চুপ করে আছি। সবাই মজা করে খাচ্ছে, গল্প করছে। কিন্তু আমি থালার সবচেয়ে নিচের পেঁয়াজের মতো নিজেকে লুকিয়ে রাখছি। চুপে চুপে তোমাকে দেখছি। যদি তুমি আমার মনের ভেতর দেখ, দেখতে পাবে, তুমি আমার হৃদয়ের সবচেয়ে গভীর এক গোপনীয়তা'।
চুইংগাম
প্রিয় বন্ধুরা, আজকে খাবার সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি গান আপনাদের শুনালাম। অবশেষে আমি বলতে চাই চুইংগামের কথা। অনেকেই সবসময় পকেটে চুইংগাম রাখে। মুখ তিতা লাগলে মন খারাপ লাগলে কিংবা হাতে সময় থাকলে একটা চুইংগাম খায় অনেকের অভ্যাস এমন। অনুষ্ঠানের শেষে শুনুন লিউ রো ইংয়ের গাওয়া 'চুইংগাম' নামের গানটি।
প্রিয় বন্ধুরা, আজকের সুর ও বাণী আসরে আপনাদের সঙ্গে খাবার নিয়ে আলাপ করেছি। অবশ্য আমার জীবনে আরো অনেক খাবার আছে। খাবার সম্পর্কিত গানও আছে প্রচুর। একটি অনুষ্ঠানে তা বলে শেষ করা যাবে না। আপনারা আর কী কী বিষয়ে গান শুনতে চান, আমাকে জানাবেন।
তাহলে আজকের মতো এখানে বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু/মান্না)