20160529yinyue.mp3
|
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন। আমি আনন্দি সুর ও বাণী আসর নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আজ আপনাদের বিভিন্ন খাবার সম্পর্কিত গান শোনাবো।
আমার বিশ্বাস, প্রতিটি খাবারের পিছনে কিছু বিশেষ স্মৃতি থাকে। এ অনুষ্ঠান শোনার পর আপনার খাবার নিয়ে কোনো গল্প মনে পড়লে আমাকে লিখে জানাবেন। পরবর্তী অনুষ্ঠানে শ্রোতাবন্ধুদের সঙ্গে তা আমরা ভাগাভাগি করে নেবো। আমার ইমেল ঠিকানা : ben@cri.com.cn। বর্তমানে চীনের ওয়েবসাইটে প্রায় সময় একটি কথা লেখা দেখা যায়, 'জীবনে কেবল প্রেম ও খাবার অপরিহার্য। এ থেকেই বোঝা যায়, খাবার আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
চীনাদের প্রিয় নাস্তা
সকালে উঠে আমরা কি নাস্তা খাই? আমি জানি, বাংলাদেশে অনেকে হয়তো দুধ চা, রুটি ও সবজি খেয়ে থাকেন। চীনারা, বিশেষ করে উত্তর চীনের লোকেরা সাধারণত সয়াবিন দুধ এবং ইয়ু টিয়াও নামে এক ধরনের ভাজা লম্বা রুটি খান। আমি যদি বেইজিংয়ের বাইরে যাই, কিছু দিন পর নাস্তার সময় সয়াবিন দুধ ও ইয়ু টিয়াও খুব মিস করি। এটাই আমার প্রিয় নাস্তা।
শ্রোতাবন্ধুরা, শুরুতে শুনুন লিন জুন চিয়ের গাওয়া 'সয়াবিন দুধ ও ইয়ু টিয়াও' নামের একটি গান। এটি তার খুব প্রিয় একটি গান। তিনি এ গান তৈরির স্মৃতি স্মরণ করে জানান, তিনি নাস্তার সময় ইয়ু টিয়াও সয়াবিন দুধ খেতে খুবই পছন্দ করেন। এ দুটি খাবার এক সাথে না থাকলে নাস্তা পরিপূর্ণ হয় না। এ খাবার থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে একদিন তিনি একটি গান লিখেছেন। এ দু'টি খাবারকে প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে উপমা দেওয়া হয়েছে এ গানে। শুনুন এ গানটি।
বিং থাং হু লু
উত্তর চীনে শীতকালে রাস্তায়, সুপারমার্কেট বা মন্দির মেলায় আমরা প্রায়শই 'বিং থাং হু লু' নামে এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী হালকা খাবার দেখতে পাই। এ খাবারটি হথর্ণ ফলগুলো কাঠিতে গেঁথে চিনির গরম শিরার মধ্যে চুবিয়ে নেয়ার পর ঠাণ্ডা হয়ে স্ফটিকের মত স্বচ্ছ ও শক্ত হয়ে যায়। হর্থন খেতে টক, বাইরের অংশের মিছরি খেতে মিষ্টি। দুটি মিলে খেতে খুব মজা লাগে। আমরা ছোটবেলায় শীতকালে 'বিং থাং হু লু' খাওয়ার জন্য বাবা-মাকে অনুরোধ করতাম। এখন আমার ছেলে যখন পার্কে বা সুপার মার্কেটে যায়, 'বিং থাং হু লু' দেখলে খেতে চেয়ে আমাকে অনুরোধ করে। এ খাবার খুব সস্তা, সাধারণতো দু'এক ইউয়ান দিয়ে একটা কিনতে পওয়া যায়। অতীতে কেবল হর্থন দিয়ে 'বিং থাং হু লু' তৈরি করতো। এখন অনেক ধরনের ফল দিয়েও করা যায়। যেমন স্ট্রবেরি, কমলা, রাভা আলু এবং ছোট টমাটো প্রভৃতি। এ খাবার দেখলে অনেকেই মনে পড়ে যায় নিজের আনন্দময় ছেলেবেলার স্মৃতি।
প্রিয় বন্ধুরা, এবার শুনুন ফেং সিয়াও ছুয়ানের গাওয়া 'বিং থাং হু লু' নামের গানটি। তিনি গেয়েছেন, 'অনেকে বলে, বিং থাং হু লু খেতে টক, তবে টকের মধ্যে মিষ্টিও আছে। থাং হু লু বাঁশের লাঠিতে গেঁথে রাখা। দেখতে খুবই সুন্দর। এটি সুখি ও পুনর্মিলনের প্রতীক'।
শীতকালের খাবার বলতে গেলে চীনের হটপটের কথা না বললে হবে না। চীনে হটপটের ইতিহাস ১,৭০০ বছরেরও বেশি পুরাতন। হটপট প্রধানত পূর্ব এশিয়ায় জনপ্রিয়। সাধারণত ব্রঞ্জের তৈরি এক ধরনের পাত্রে পানি সিদ্ধ করার পর মাংস, সীফুড, শাকসবজি ও নানা ধরনের মাশরুমসহ খাবারগুলো সিদ্ধ করা হয়। তারপর কিছু সস সাথে মিশে এসব সিদ্ধ খাবার খেতে হয়। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে হটপট খাওয়ার পদ্ধতি ভিন্ন রকমের। হটপট চীনের খাবার সংস্কৃতির এক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শাখায় রূপান্তরিত হয়েছে। চীনে অনেক হটপট রেস্তোরাঁও আছে। আপনারা চীনে আসলে অবশ্যই একবার খেয়ে দেখবেন এই আকর্ষণিয় খাবারটি।
হটপট
বন্ধুরা, রুন থু নামে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক 'হাই, হটপট' নামে একটি সংগীতসমৃদ্ধ সিনেমা নির্মান করেন। এ সিনেমা চীনের সিছুয়ান প্রদেশের ছোছিংয়ের হটপটকে ভিত্তি করে নির্মান করা হয়েছে। এ সিনেমা ছোছিং শহরের পরিচয়ে পরিণত হয়েছে। এ গানের কথাও ছোছিংয়ের আঞ্চলিক ভাষা। শুনুন 'হাই , হটপট' নামের এ গানটি। গেয়েছেন রুন থু নিজেই।