০২. এপ্রিল মাসের শুরুতে আন্তর্জাতিক অ্যান্ডারসন পুরস্কার বিজয়ীর নামতালিকা-২০১৬ ইতালির এক আন্তর্জাতিক শিশুবই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে। চীনা লেখক ছাও ওয়েন স্যুয়ান এ পুরস্কার লাভ করেছেন এবং তিনি চীনের একমাত্র লেখক যিনি এ পুরস্কারটি লাভ করলেন।
এ পুরস্কারের জুরিবোর্ডের চেয়ারম্যান পাচি আদামনা বলেন, লেখক ছাও নরম ও সুন্দর আবেগের মাধ্যমে জীবনের সত্যতা ও দু:খ বর্ণনা করেন তার উপন্যাসে। তার উপন্যাসের বিষয় ও লেখার ধরন অনেক সুন্দর। এতে শিশুদের কঠিন ও জটিল জীবনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে শিশুপাঠকদের কাছে তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ছাও ওয়েন স্যুয়ান ১৯৫৪ সালে চীনের চিয়াংসু প্রদেশের ইয়ানছেং শহরে জন্মগ্রহণ করেন।বর্তমানে তিনি বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার অধ্যাপক। তার অনেক লেখা ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, জাপানি ও কোরিয়ান ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
ছাও ওয়েন স্যুয়ান শিশুসাহিত্য-বিষয়ক শিল্পকলা একাডেমির উপ-পরিচালক চাং জুন থাও মনে করেন, আন্তর্জাতিক অ্যান্ডারসন পুরস্কার বিশ্বের শিশুদের সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। শিশুরা সাহিত্য ও বইয়ের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের শিশুদের জীবনযাপন ও সংস্কৃতি বুঝতে পারবে। নানান জীবনযাপনের পদ্ধতি জানার পাশাপাশি চলমান কিছু কিছু অঞ্চলের দরিদ্রতা ও দুর্বল পরিস্থিতি বুঝতে সক্ষম হবে। মি. ছাও এ পুরস্কার পাওয়ায় চীন সম্পর্কিত গল্প, চিন্তাভাবনা ও জীবনযাপন বিশ্বের শিশুদের কাছে পরিচিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অ্যান্ডারসন পুরস্কার ১৯৫৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড অন বুকস ফর ইয়োং পিপল (আইবিবিওয়াই)-র উদ্যোগে চালু হয়। ডেনমার্কের রূপকথার লেখক হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসনের নামে এই পুরস্কার চালু হয়, যা শিশু সাহিত্যের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার হিসেবে আখ্যায়িত হয় এবং যা বিশ্বের শিশু সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার।
০৩.কেনিয়ার নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে এপ্রিল মাসে চীনা ভাষার শিক্ষক ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ক্লাবের মাধ্যমে স্থানীয় অঞ্চলে চীনা ভাষার প্রশিক্ষণ আরো দ্রুত উন্নত হবে বলে মন্তব্য করেন নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের চীনা প্রধান কুও হোং।
একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেনিয়ায় চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা এ ক্লাবের সদস্য হতে পারবেন। বর্তমানে স্থানীয় অঞ্চলের ১০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাধ্যমিক স্কুলের চীনা ভাষার শিক্ষক এ ক্লাবের সদস্য হয়েছেন।
নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা শিক্ষক রু সি মনে করেন, এ ক্লাবটির প্রতিষ্ঠা পেশাগত তথ্য বিনিময় ও পারস্পরিক অভিজ্ঞতা শেখার জন্য সহায়ক।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা শিক্ষাসম্পর্কিত কয়েকটি খবর শুনলেন। এবার আমরা চীনের ইউনিভার্সিটি অব ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিকস (ইউআইবিই)-র কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
ইউনিভার্সিটি অব ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিকস (ইউআইবিই) ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বেইজিংয়ে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি চীনের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ইউআইবিই'র আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক আইন, আর্থিক বিদ্যা এবং এমবিএসহ বিভিন্ন মেজর চীনে বিখ্যাত ও শীর্ষ স্থান অধিকার করে।
২০১৫ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিলো ১৬ হাজারেরও বেশি। তাদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিলো ৮ হাজারেরও বেশি, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৪৫০০ জনেরও বেশি এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ২৪০০ জনেরও বেশি। চীনে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইউআইবিইতে।
ইউআইবিই'র শিক্ষকদের মধ্যে অনেকে চীন সরকারের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ইউআইবিই'র স্নাতকরা চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈদেশিক বাণিজ্য, আর্থ ও যৌথ পুঁজি বিনিয়োগকারী কোম্পানি বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। তারা চীনের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে ইউআইবিই'র পরিচালক পরিষদ প্রতিষ্ঠা হয়। চীনের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী লি লান ছিং এ পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। চীনের আরেক উপ-প্রধানমন্ত্রী উ ই এ পরিষদের দ্বিতীয় চেয়ারম্যান ছিলেন।
ইউআইবিই দেশ-বিদেশের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্পপতি ও বিশ্বের ৫০০টি শক্তিশালী কোম্পানি ইউআইবিই'কে তহবিল ও বৃত্তি প্রদান করেছে।এ পর্যন্ত ইউআইবিইতে ৩০টিরও বেশি ধরনের বৃত্তি চালু করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, রাশিয়াসহ বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশের ১৬০টিরও বেশি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে ইউআইবিই। আন্তর্জাতিক বিনিময় ও আদান-প্রদানের মাধ্যমে ইউআইবিই'র শিক্ষাদানের মান ও বৈশিষ্ট্য আরো উন্নত হয়েছে।
ইউআইবিই বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য চীনের সরকারি বৃত্তির সুযোগ প্রদান করে। প্রতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দেশ স্থানীয় অঞ্চলের চীনা দূতাবাসের কাছে সরকারি বৃত্তির আবেদনপত্র জমা দেয়।এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিদেশি শিক্ষার্থীরা চীনা ভাষা বা ইংরেজি ভাষায় লেখাপড়া করতে পারেন। বিস্তারিত জানতে সবাই এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন:sie@uibe.edu.cn,uibescholarship@163.com
ওয়েবসাইটের ঠিকানা হলো: http://www.uibe.cn
বন্ধুরা, আগামী সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আমরা ইউআইবিই'র বাংলাদেশি শিক্ষার্থী খায়রুল বাশারের সাক্ষাতকার শোনাবো। তার কাছ থেকে আপনারা এ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য জানতে পারবেন।
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়। কথা বলতে বলতে আমাদের আজকের 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠানের সময়ও ফুরিয়ে এলো। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে এবং সেই সঙ্গে চীনের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কেও আপনাদের কোনো কিছু জানার থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn
রেডিও'র মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে আমাদের বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bengali.cri.cn
এবার তাহলে বিদায়। আসছে সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবারও আপনাদের সঙ্গে কথা হবে।সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। থাকুন সুস্থ ও আনন্দে। চাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)