সুর ও বাণী: ফুল ফোটার আওয়াজ
  2016-04-13 19:55:14  cri

পিচ ফুল

বন্ধুরা, আপনারা কি জানেন, চীন হচ্ছে পিচ ফুলের জন্মস্থান। খ্রিষ্টপূর্ব দশম শতাব্দীতে চীনের বিভিন্ন কবিতায় 'পিচ বাগান'-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাচীনকালের নানা গ্রন্থে লেখা আছে, প্রাচীনকাল থেকে চীনের হোয়াং হো অববাহিকার বিশাল এলাকাজুড়ে পিচ গাছ চাষ করার প্রথা রয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর পর চীনের পিচ গাছ রেশম পথ দিয়ে কানসু ও সিনচিয়াং পাড় হয়ে মধ্য-এশিয়ার মাধ্যমে ইরান, গ্রিস, রোম এবং ভূমধ্যসাগর বরাবর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যায়। এরপর যথাক্রমে ফ্রান্স, জার্মানী, স্পেন, পর্তুগাল ও বৃটেনেও পিচ গাছ চাষ শুরু হয়। ভারতেও পিচ গাছ চীন থেকে নেওয়া হয়।

আমাদের সিআরআই এর অফিস ভবনের নিচে পাঁচ ছয়টি পিচ গাছ আছে। পিচ ফুল গোলাপি রঙের। এখন সবগুলো গাছে গোলাপী রংয়ের ফুল ফুটে আছে। দেখতে খুব অপূর্ব, মনোরম। আশ্চর্য ব্যাপার, এক সপ্তাহ আগেও আমি জানতাম না, এ ভবনের নিচে পিচ গাছ আছে। এ সপ্তাহে পিচ ফুল দেখে হঠাত্ লক্ষ্য করেছি, সেখানে পিচ গাছ আছে। কবে এ গাছগুলো লাগানো হয়েছে, তাও জানি না! আমাদের জীবন তো এমনই। অনেক ব্যাপার আমাদের আশেপাশে থাকলেও হয়তো কখনো তা চোখে পড়ে না। এর ফলে কত সৌন্দর্য বা আনন্দ অজানায় হারিয়ে যায়। তাই না?

বন্ধুরা, এবার শুনুন 'পিচ ফুল ফুটেছে' নামে একটি গান। মালয়েশিয়ার শিল্পী আনিউ এ গানের কথা লিখেছেন এবং সুর করেছেন। গানে বলা হয়েছে, 'বসন্তের হাওয়া মুখে আসছে, পিছ ফুল ফুটেছে। গাছের ডালে পাখিরা ডানা মেলে খেলছে। প্রেমিক-প্রেমিকাদের মনের ফুলও ফুটেছে। প্রিয়জন, তুমি ফুলের চেয়েও সুন্দর। আমি তোমাকে কখনো ভুলে যাবো না। আমার প্রেম মনে রাখবে। আমি এখানে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। তুমি ফিরে এলে আমরা একসাথে পিচ ফুল দেখবো।'

চেরিফুল

সিআরআই বেইজিং শহরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত। আমাদের এ সংস্থার একটি বড় প্রাঙ্গণ আছে। প্রাঙ্গণের দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় প্রায় ২০০ বর্গমিটারজুড়ে একটি চেরিফুল বাগান আছে। প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে চেরিফুল ফোটার সময় হালকা গোলাপী ফুলে ঢেকে যায় সে প্রাঙ্গণ। হালকা সুগন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের সহকর্মীরা এমন কি বাহির থেকে আসা পথচারীরাও এ চেরি ফুলের ছবি তোলেন। জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে জাপানের নাগানো জেলার শ্রোতা সংঘের শ্রোতারা জাপান থেকে ২০টি চেলিফুলের চারাগাছ চীনে নিয়ে এসে সিআরআইকে উপহার দেন। এ চেরি ফুল সিআরআইয়ের সাথে শ্রোতাদের বন্ধুত্বের প্রমাণ।

বন্ধুরা, এখন শুনুন লি খ্য ছিয়ানের গাওয়া 'চেরিফুল' নামের গানটি। এ গানে বলা হয়েছে, 'প্রতি বছর চেরিফুল দেখি। চেরিফুল ফোটার দিন আমরা সাক্ষাত্ করি। বিদায় নেওয়ার পর আবার পরের বছর সাক্ষাত্ করার জন্য অপেক্ষা করি। আমাদের মন কখনো দূরে যায় নি।'

খুবানি ফুল

খুবানি ফুলও বসন্তের ফুল। চীনে খুবানি ফুল চাষের প্রায় তিন হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে। খুবানি ফুল দেখতে যেমন সুন্দর, খুবানি ফল খেতেও তেমন সুস্বাদু। খুবানি ফুলের রঙ পরিবর্তনশীল। পুষ্পমুকুলের সময় লাল রঙ, ফুলের পাপড়ি খোলার সময় ঘন রঙ থেকে হালকা হয়ে যায়। শেষে ঝরে পড়ার সময় একদম সাদা হয়ে যায়। বন্ধুরা, শুনুন 'খুবানি ফুলের তুষার' নামে একটি গান। গেয়েছেন লিউ জি ফেই।

লাইলাক ফুল

প্রিয় বন্ধুরা, বিভিন্ন ঋতুতে নানা নামের ফুল ফোটে আমাদের দেশে। আমরা প্রকৃতির ভিন্ন ধরনের সৌন্দর্য উপভোগ করি। মে মাসে লাইলাক ফুল ফোটে। চীনে ২৩ ধরনের লাইলাক ফুল আছে। প্রধানত চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চাষ হয় এ ফুল। এ ফুল চীনের খুবই প্রচলিত পরিবেশে সাজানো ফুল। বাগানে, আবাসিক এলাকায়, হাসপাতালে, স্কুল বা কিন্ডারগার্টেনে এ ফুল বেশি দেখা যায়। এ ফুল ঘরের ভিতরেও রাখা যায়। এর হালকা সুগন্ধ রয়েছে।

২০০৪ সালে চীনের শিল্পী থাং লেই 'লাইলাক' নামে একটি গান লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, 'তুমি বলেছো, তুমি লাইলাক ফুল সবচেয়ে পছন্দ করো। তাই, তোমার নামও লাইলাক। তুমি তাড়াহুড়া করে চলে গেলে। এক সুন্দর স্বপ্নের মতো। কিন্তু আমার মনও সাথে নিয়ে গেছো। তোমার কবরের সামনে ফুল ফুটেছে। সারা পাহাড়জুড়ে ফুল ফুটেছে। তোমার তা দেখতে ভালো লাগে, তাই না? তুমি কি এখনো একাকীবোধ করো?' এই গানটি ওয়েবসাইটে দেওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যে দুই কোটি হিট পড়েছে এবং সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখন শুনুন এই ব্যাপক জনপ্রিয় গানটি।

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের 'সুর ও বানী' আসরে আপনাদের বসন্তের গান সম্পর্কিত কয়েকটি গান শুনিয়েছি। গানগুলো আপনাদের কেমন লেগেছে?

আপনাদের কোনো মতামত থাকলে আমাকে লিখে জানাবেন। আমার ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn। অথবা ফেসবুকে আমাকে ম্যাসেজ দিবেন। আমার ফেসবুকের নাম : Anandi Yu।

বন্ধুরা, ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। (ইয়ু/মান্না)


1 2
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040