20160309yinyue.mp3
|
ছিয়োং ইয়াও ১৯৩৮ সালের ২০ এপ্রিল সিছুয়ানের চেংতু শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এখন তাইপেইতে থাকেন। তিনি একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাতা এবং চীনের চলচ্চিত্র সাহিত্য কমিটির সদস্য।
ছিয়োং ইয়াও
ছিয়োং ইয়াও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল পাস করার অল্প কয়েক দিন পরই বিয়ে করেন। কিন্তু মা হওয়ার পাশাপাশি তিনি উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। ২৫ বছর বয়সে আনুষ্ঠানিকভাবে লেখকের পরিচয় পান। এ পর্যন্ত তার লেখা ৬৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রায় প্রতিটি উপন্যাস চলচ্চিত্র বা টিভি নাটকে রূপান্তরিত হয়েছে। তার নাটক ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অনেক অভিনেতা ও অভিনেত্রী জনপ্রিয় তারকায় পরিণত হয়েছেন।
ছিয়োং ইয়াওয়ের 'হুয়ান চু রাজকুমারী' উপন্যাস একই নামের টিভি নাটক হিসেবে ১৯৯৮ সালে প্রচারিত হয়। এ নাটকটি চীনের মূলভূখণ্ডের পপসংস্কৃতির সুপারস্টার যুগ উন্মোচন করে। এ নাটকের প্রধান অভিনেত্রী চাও ওয়েই, লিন সিন রো নাটকটি প্রচারের সাথে সাথে সারা চীন তথা পুরো এশিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এ নাটকটিতে সত্য ও মিথ্যা নামের দু'জন রাজকুমারীর রাজপ্রাসাদে গিয়ে সম্রাট পিতাকে খোঁজার গল্প বর্ণনা করেছে।
এ নাটকের প্রথম পর্ব অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় ১৯৯৯ সালে আবার দ্বিতীয় পর্ব এবং ২০০৩ সালে তৃতীয় পর্ব তৈরি হয়। এটি ছিলো চীনের টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত টিভি নাটক। এ নাটক পুনপ্রচারের সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি।
টিভি নাটক 'হুয়ান চু রাজকুমারী'
বন্ধুরা, এখন শুনুন 'হুয়ান চু রাজকুমারী' নাটকের প্রধান গান। গানে বলা হয়েছে, "পর্বতের শিখর না থাকলে, নদীর পানি প্রবাহিত না হলে, সময় থেমে গেলে, পৃথিবীর সবকিছু বিলীন হলেও আমি তোমার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হবো না। তোমার স্নেহ হলো আমার এ জীবনের প্রত্যাশা। তোমার হাসি আমার এ জীবনের ভালোবাসা।'
গত শতাব্দীর ৭০'র দশকে জন্মগ্রহণকরা নারীরা প্রায় সবাই কমবেশি ছিয়োং ইয়াওয়ের লেখা পড়েছেন। ছিয়োং ইয়াও মূলত প্রেমের গল্প লিখেছেন। তার প্রেমের কাহিনী ২০ বছর ধরে চীনা পাঠকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
ছিয়োং ইয়াও'র উপন্যাস রচনাকে তিনটি যুগে ভাগ করা যায়। ১৯৬৩ সালে তার প্রথম উপন্যাস 'জানালের বাইরে' প্রকাশিত হয়। তখন থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানত চীনের রূপকথা থেকে প্রাচীনকালের প্রেমের ছোট গল্প লিখেন। এরপর উপন্যাস 'সিগালের উড্ডয়ন স্থান' থেকে তার রচনার মধ্য যুগ শুরু হয়। এ সময় তিনি প্রধানত সমকালীন তাইওয়ানের প্রেমের কাহিনী লিখেন। গত শতাব্দীর ৮০'র দশকে তিনি আবার গল্পের পটভূমি প্রাচীনকালে ফিরে আনেন। তিনি পরিবর্তনশীল যুগে নারী ও পুরুষের প্রেমের বোধ ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করেন।
টিভি নাটক 'বৃষ্টিতে রোমান্স'
'বৃষ্টিতে রোমান্স' নামের টিভি নাটক হলো 'হুয়ান চু রাজকুমারী' এর পর ছিয়োং ইয়াও'র আরেকটি উপন্যাস থেকে সৃষ্ট টিভি নাটক। চীনের মূলভূখণ্ড, তাইওয়ান এবং হংকংয়ের অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা একসঙ্গে নাটকটিতে অভিনয় করেন। নাটকটিতে বিংশ শতাব্দীর ৩০'র দশকে শাংহাইয়ের লু নামে এক বড় পরিবারকে কেন্দ্র করে কয়েকজন যুবক ও যুবতীর প্রেমের গল্প বর্ণিত হয়েছে। ২০০১ সালে নাটকটি প্রচারের পর আবার চীনের মূলভূখণ্ডে নাটকটি সে বছর রেটিং চ্যাম্পিয়ন হয় এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত চীনা নাটকে পরিণত হয়।
ছিয়োং ইয়াও'র চলচ্চিত্র বা টিভি নাটকে প্রচারিত সব জনপ্রিয় গানের কথা প্রায়ই তার নিজের লেখা। তিনি প্রতীকের মতো সবসময় পাঠক ও দর্শকদের মনে আছেন। তার লেখা গানের কথাগুলো চীনের প্রাচীন কবিতার মতো মার্জিত। কেউ কেউ বলেন, ছিয়োং ইয়াও উপন্যাস না লিখে কেবল গানের কথা লিখলেও সুনাম অর্জন করতে পারবেন।
বন্ধুরা, এবার শুনুন 'বৃষ্টিতে রোমান্স' নাটকের আরেকটি গান। গানের নাম 'আমি চাই'। গেয়েছেন হংকংয়ের কণ্ঠশিল্পী গু চুই জি। তিনি গেয়েছেন, 'আমি তোমার সঙ্গে থাকতে চাই। তোমার সঙ্গে আকাশের তারা হিসেব করতে চাই। তোমার সঙ্গে বসন্তের বৃষ্টি সংগ্রহ করতে চাই। তোমার কাছ থেকে পুরোনো গল্প শুনতে চাই। তোমার চোখের প্রেম দেখতে চাই।'