20160224yinyue.mp3
|
বন্ধুরা, চীনের বিখ্যাত লোক গীতিকার ওয়াং লো বিন পশ্চিম চীনের লোকসংগীতের প্রসার ও প্রচারে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। এ কারণে তাকে 'উত্তর-পশ্চিমের লোকসংগীতের পিতা' বা 'পশ্চিম চীনের গানের রাজা' বলা হয়। আজকের 'সুর ও বানী' আসরে ওয়াং লো বিনের পরিচয় আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। তার সৃষ্টি কিছু গানও শুনাবো।
ওয়াং লো বিন
ওয়াং লো বিনের আসল নাম ওয়াং রো টিং। ১৯১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে তার জন্ম। ১৯৩৪ সালে তিনি পেইপিং নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করেন। তার পিয়ানো শিক্ষক ছিলেন জার্মান গুবুক। কণ্ঠসংগীত গুরু ছিলেন রাশিয়ার অভিজাত সম্প্রদায়ের হোলোসওয়াট নিকোলাস শাদোফস্কি কাউন্ট। সংগীত কম্পোজের শিক্ষক ছিলেন প্যারিস থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে চীনে ফিরে আসা ওয়াং দে চাও। তাদের কাছ থেকে ক্ল্যাসিকাল সংগীত বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন ওয়াং লো বিন। এ সব গুণি ব্যক্তিরা শিক্ষাদানের মাধ্যমে তার পরবর্তী সফল সংগীতজীবন সৃষ্টির জন্য একটি মজবুত ভিত্তি স্থাপন করে দেন।
গত শতাব্দীর ৩০'র দশকে ওয়াং লো বিন গভীর দেশপ্রেম ও আবেগ নিয়ে জাপানের আগ্রাসনবিরোধী ত্রাণ আন্দোলন ও চীনা জাতির মুক্তির ব্রতে অংশ নেন। ১৯৩৭ সালের ৭ জুলাই লু গো ছিয়াও অভ্যুত্থানের পর তিনি শানশি গিয়ে অষ্টম রুট বাহিনীর 'উত্তর-পশ্চিম যুদ্ধক্ষেত্র সাংস্কৃতিক দল'-এ যোগ দেন। এ সময় তিনি অনেক বিপ্লবী গান সৃষ্টি করেন।
বন্ধুরা, এখন শুনুন ওয়াং লো বিনের অপূর্ব সৃষ্টি 'কাপড় ধোয়ার গান' নামের একটি গান।
১৯৩৯ সালের গ্রীষ্মকালে চীনা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা চাং জু লি'স্বদেশ দীর্ঘজীবী হোক' নামে একটি সিনেমা তৈরির জন্য ফিল্ম ক্রু নিয়ে সিনচিয়াংয়ের চিন ইন থান তৃণভূমিতে যান।
তখন ছিংহাই প্রদেশের সিনিংয়ে শিক্ষাদানকারী ওয়াং লো বিন এ সিনেমায় অভিনয় করার আমন্ত্রণ পান। সেই সুযোগে তিনি অভিনেত্রী সাইয়েজোমার সঙ্গে পরিচিত হন। চিন ইন থানে একটি কথা প্রচলিত ছিলো, 'তৃণভূমিতে সবচেয়ে সুন্দর ফুল হলো গালসাং ফুল।
ছিংহাং হ্রদের তীরের সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে সাইয়েজোমা।' সাইয়েজোমা এ সিনেমায় একজন রাখালকন্যার চরিত্রে অভিনয় করেন। সিনেমায় ওয়াং লো বিন ছিলেন এই রাখালকন্যার একজন সাহায্যকারী।
তিন দিন পর সিনেমার দলটি ওই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ওয়াং লো বিনও উটে চড়ে চিন ইন থান ত্যাগ করেন। তারা অনেক দূরে যাওয়ার পরও সাইয়েজোমা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে ওয়াং লো বিনকে বিদায় জানান। সে দৃশ্য ওয়াং লো বিনের মনে গভীর দাগ কেটে থাকে। তিনি সে স্মৃতি ভুলে যেতে পারেন নি। শিনিংয়ে ফিরে যাওয়ার পথে তিনি তিন রাত ধরে ব্যাপক পরিশ্রম করে অমর সুর 'সেই সুদূরের জায়গায়' নামের গানটি সৃষ্টি করেন। ওয়াং লো বিনের গানগুলোর মধ্যে 'সেই সুদূরের জায়গায়' ব্যাপক সম্প্রচারিত হয়। এ গানটি তার 'পশ্চিম চীনের গানের সম্রাট'-এর ভিত্তি স্থাপন করে। এ গানে সেই সুন্দর রাখালকন্যার কথা নানাভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।