v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-08-06 16:08:18    
ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রকে থামানোর জন্য রাশিয়ার ভিন্ন কৌশল

cri
৪ আগস্ট রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, কিউবা ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে রাশিয়া তার অবস্থান পুনরুদ্ধার করতে চায়। এটা কিউবা ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে রাশিয়ার অবস্থান নিয়ে রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সর্বশেষ বক্তব্য। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের প্রতিক্রিয়ায় পুতিন এ বক্তব্য দিয়েছেন। এর লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপারে পাল্টা উদ্যোগ গ্রহণ করা।

ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী টানপড়েন শুরু হয়েছে। ২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইরানসহ বিভিন্ন দেশের সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে পোল্যাণ্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ঘাঁটি স্থাপন সংক্রান্ত আলোচনা পুনরায় শুরু করে। রাশিয়া মনে করে, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সামর্থ্য খর্ব করা এবং রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করা। সুতরাং এ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী বিরোধ শুরু হয় এবং দু'দেশের সম্পর্কেও অচলাবস্থা দেখা দেয়।

সম্প্রতি রাশিয়ার পার্লামেন্ট ও সামরিক কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের 'পিছন দিকের উঠোন' হিসেবে খ্যাত কিউবায় তাদের অবস্থান পুনরুদ্ধার করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। সম্প্রতি রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ রাষ্ট্রীয় দুমার আন্তর্জাতিক কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যান্দ্রেই ক্লিমভ বলেন, 'কিউবা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূকৌশলগত জায়গা'। রাশিয়া কিউবাসহ লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক ও সামরিক অবস্থান পুনরুদ্ধার করছে। তিনি আরো বলেন, রাশিয়া কিউবায় পূর্ণ সামরিক শক্তি স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যাতে রাশিয়ার সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের উপযুক্ত জবাব দেয়া যায়। সম্প্রতি রাশিয়ার 'ইজভেস্তিয়া' পত্রিকার খবরে জানা গেছে, রুশ বিমান বাহিনীর কৌশলগত বোমারু বিমান কিউবায় আবার মোতায়েনের সম্ভাবনা আছে। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী 'ইজভেস্তিয়া' পত্রিকার খবরকে বস্তনিষ্ঠ নয় বলে উল্লেখ করলেও রাশিয়া যে সব ব্যবস্থা নিচ্ছে তা যে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা চুক্তির কারণেই তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সম্প্রতি রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আইগোর সেচিন এবং রাশিয়ার ফেডারেল নিরাপত্তা পরিষদের সচিব নিকোলাই পাত্রুশেভের নেতৃত্বে পর পর দুটি প্রতিনিধিদল কিউবা সফর করেছেন এবং কিউবার নেতাদের সঙ্গে দু'দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ঐতিহ্যবাহী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, সম্প্রসারণ এবং গভীরতর করার বিষয়ে আলোচনা করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব অব্যাহতভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। রাশিয়ার কৌশলগত আওতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। শক্তিশালী ন্যাটোর সামনে রাশিয়া এক ধরনের সংকটের মধ্যে আছে। পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে রাশিয়ার অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করা ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সমস্যা মোকাবিলায় উদ্যোগ গ্রহণ বর্তমান রুশ-মার্কিন প্রতিযোগিতার জন্য জরুরী বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাশিয়ার 'কিউবা ও বিশ্বের অন্যান্য এলাকায় অবস্থান পুনরুদ্ধারের ঘোষণা উপযুক্ত এলাকায় সত্যিকারভাবে তাদের সামরিক অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং এর লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের পিছন দিকের উঠোন অরক্ষিত করে দিয়ে নিরাপত্তার ওপর মনোযোগী হতে বাধ্য করা। যাতে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের প্রতিরক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সমস্যা নিয়ে আলোচনায় ট্রাম কার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বর্তমান রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামগ্রিক শক্তির পার্থক্য এতো বেশি যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বৈরীতা রাশিয়ার জন্য সুফল বয়ে আনবে না। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ নিবৃত্ত করা, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সমস্যা মোকাবিলা এবং রুশ-মার্কিন কৌশলগত ভারসাম্যহীনতা কাটিয়ে ওঠাই হয়তো রাশিয়ার আসল লক্ষ্য।