উত্তর-পশ্চিম চীনের কান সুন প্রদেশের রাজধানী লান চৌ শহর হল চীনের হান ও থাং রাজবংশের "রেশমি পথের" একটি বিখ্যাত নগর । এখানে প্রাচীনকালে চীন ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ইতিহাস লেখা রয়েছে । যখন পেইচিং অলিম্পিকের মশাল লান চৌ শহরে আসে , তখন অনেক বিদেশি বন্ধুও এ শহরে আসেন এবং মশালবাহক হিসেবে মশাল হস্তান্তরে অংশ নেন । রুশ নাগরিক ইউরি ইয়াখিন তাদের মধ্যে অন্যতম ।
ইউরি চীন সম্পর্কে খুব ভালো জানেন । পেইচিংয়ে তিনি দশ বছর ধরে আছেন । তার চীনা ভাষা ঠিক যেন চীনাদের মত । চীনে থাকা বিদেশিদের জন্য অনুষ্ঠিত পেইচিং অলিম্পিক মশালবাহক নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছেন এবং লান চৌ শহরের মশাল হস্তান্তরে অংশ নিতে পেরেছেন । তিনি চীনা ভাষায় সি আর আইয়ের সংবাদদাতার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন । তিনি বলেন , তার সারা জীবন চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । পেইচিং অলিম্পিকের মশালবাহক হতে পেরেছেন , এটা তার জন্য সর্বোচ্চ একটি গৌরব ।
ইউরি সংবাদদাতাকে জানান , রাশিয়ায় এখন বেশ কয়েকটি কংফুসিয়াস ইন্সটিটিউট আছে । অনেক রাশিয়ান চীনা ভাষা শিখতে খুব আগ্রহী । তিনি বলেন :
এখন রাশিয়ায় চীনা ভাষা শেখা খুব জনপ্রিয় । আমি জানি অনেকেই খুব আগ্রহী । বিশেষ করে তরুণ তরুণীরা । কংফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের বিশ্বে অনেক শাখা স্কুল রয়েছে । তারা আরো বেশি জনগণকে চীনা ভাষা শিখতে ও চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে উত্সাহ দেয় । আমার মেয়েও চীনা ভাষা শিখতে পছন্দ করে । চীনে এসে সে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করে । মস্কোয় ফিরে যাওয়ার পরও তার চীনা ভাষা শেখা বন্ধ হয় নি । তার সহপাঠী তাকে বলে , তুমি চীনা ভাষা শেখো ? চমত্কার ।
৫৩ বছর বয়সী ইউরি গত শতাব্দীর ৮০ দশকে পেইচিং-এ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতার তাস বার্তা সংস্থার সংবাদদাতা ছিলেন । তিনি নিজকে একজন সাধারণ চীনা মানুষের মতই হিসেবে মনে করেন । তার মাতৃভূমি মস্কোর চেয়ে তিনি পেইচিং সম্পর্কে বেশি জানেন । তিনি বলেন :
পেইচিং আমার দ্বিতীয় মাতৃভূমি । প্রায় দশ বছর ধরে আমি পেইচিংয়ে আছি । যদি আমি মস্কোয় ফিরে যাই , আমি জানি না বাসের ভাড়া এবং মাংসের দাম কত । তবে পেইচিংয়ে আমি যেন পেইচিং-এর একজন সাধারণ মানুষের মতই বস করছি ।
ইউরি গত দু'বছরে চীন ও রাশিয়ার তথ্য মাধ্যমের বিনিময়ের ওপর দৃষ্টি রেখেছেন । তিনি বিশেষ করে সি আর আইয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত "চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার" কথা উল্লেখ করেছেন । তিনি মনে করেন এমন বেসরকারী বিনিময় ব্যাপকভাবে দু'দেশের মৈত্রীকে জোরদার করেছে । তিনি বলেন :
চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার প্রভাব ব্যাপক । চীনা সাংবাদিকরা জিপ চালিয়ে সাইবেরিয়া অতিক্রম করে মস্কোয় পৌঁছান । আমি জানি এ যাত্রার অশংগ্রহণকারী চীনারা রাশিয়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে খুব আগ্রহী । রাশিয়ানরাও চীনাদের স্বাগত জানান । চীনাদের গাওয়া রাশিয়ার গান শুনে রাশিয়ানরা কেঁটেছে । তারা খুব মুগ্ধ হয়েছে । তাই তাকে জনগণের কূটনীতি বলা যায় ।
একজন মশালবাহক হিসেবে ইউরি মনে করেন অলিম্পিকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে । তিনি মন থেকেই চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে সাফল্যজনক একটি অলিম্পিক গেমস আয়োজনের শুভকামনা করেন । এ সম্পর্কে ইউরি খুব আস্থাবান । কারণ তিনি গভীরভাবে চীনাদের আতিথেয়তা অনুভব করেছেন ।
|