v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-08-05 20:26:01    
পেইচিং অলিম্পিক গেমস হবে বিশ্ব তরুণ-তরুণীদের একটি মিলন মেলাঃ জার্মানি রাষ্ট্রদূত

cri

    " পেইচিং অলিম্পিক গেমস সফল হোক!" চীনা ভাষায় কথাটি খুব শুদ্ধভাবে উচ্চারিত না হলেও চীনে জার্মানির রাষ্ট্রদূত মাইকেল স্কায়েফার সম্প্রতি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে এভাবেই পেইচিং অলিম্পিক গেমসের জন্য শুভ কামনা করেছেন ।

    ৫৭ বছর বয়স্ক শি মিং সিয়ান একজন জার্মান মানুষ। ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি পর পর জার্মানির মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়, সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মার্কিন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করেন এবং ১৯৮০ সালে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি পান। ১৯৭৮ সাল থেকে তিনি জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালের আগস্টে তিনি চীনে জার্মানির রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন । তার রাষ্ট্রদূত হওয়ার পর দ্বিতীয় বছরের এ সময়টিতে পেইচিং অলিম্পিক গেমস আয়োজিত হতে যাচ্ছে । চীনে একজন বিদেশী রাষ্ট্রদূত হিসেবে অথবা একজন ক্রীড়া অনুরাগী হিসেবে তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রতীক্ষায় আছেন। তিনি বলেন: " প্রথমতঃ চার বছর একবার করে আয়োজিত অলিম্পিক গেমস হচ্ছে ক্রীড়া ক্ষেত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসম্মেলন। অন্যান্য প্রতিযোগিতাকে অলিম্পিক গেমসের সাথে তুলনা করা যায় না। দ্বিতীয়তঃ অলিম্পিক গেমস স্বাগতিক শহর এবং সেদেশ ও সারা বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া যজ্ঞ। চীনা ও জার্মানী ছাড়া সারা বিশ্বের জনগণও এবারের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রতীক্ষায় আছেন। একটি আনন্দদায়ক, উন্মুক্ত এবং চমত্কার অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে বলে আমি আশাবাদী।"

   পেইচিং অলিম্পিক গেমস আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে চীন সারা বিশ্বের আরো বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করবে । চীনের জন্য এটি সারা বিশ্বের কাছে নিজের পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং নিজের যোগ্যতা প্রমাণের একটি সুযোগ এনে দিয়েছে। চীনে জার্মানির রাষ্ট্রদূত হিসেবে স্কায়েফার পেইচিং অলিম্পিক গেমস যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই সকল চীনার আতিথেয়তা অনুভব করছেন। একই সঙ্গে তিনি আনন্দের সঙ্গে এবারের অলিম্পিক গেমস উপলক্ষ পেইচিং এবং সারা চীনের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখেছেন । সম্প্রতি তিনি অলিম্পিক স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন। এটি তার মনে প্রগাঢ় ছাপ ফেলেছে। তিনি বলেন; " পেইচিং ইতোমধ্যে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছে। বিভিন্ন অলিম্পিক স্টেডিয়ামের নির্মাণও সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। পেইচিং অবকাঠামো ব্যবস্থা এবং রিয়ার সার্ভিস নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। যেমন, জাতীয় ক্রীড়া স্টেডিয়াম " বার্ড নেস্ট" এবং জাতীয় সাঁতার কেন্দ্র " ওয়াটার কিউব" নির্মাণের কাজ খুবই চমত্কার। এ ক্ষেত্রের সফলতা সর্বজন স্বীকৃত।"

    রাষ্ট্রদূত স্কায়েফারের পেইচিংয়ের পরিবেশ রক্ষায় বড় প্রত্যাশা রয়েছে। তিনি বলেন, পেইচিংয়ের বায়ুর মান উন্নত হচ্ছে। এটি পেইচিং অলিম্পিক গেমসের " সবুজ অলিম্পিক" ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ । তিনি আশা প্রকাশ করেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস ও প্রতিবন্ধী গেমস হওয়ার পর এ পরিবর্তন অব্যাহতভাবে বজায় রাখা হবে।

    তিনি বলেন, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০ বছরে চীনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এবারের পেইচিং অলিম্পিক গেমস আয়োজন চীনের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আরও জোরদার করবে বলে তিনি আস্থাশীল। একই সঙ্গে তিনি আশা করেন যে, এবারের অলিম্পিক গেমসের সুযোগে চীন আরো বেশি উন্মুক্ত হবে। এতে কেবল যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটক এবং খেলোয়াড়রা চীনকে ভালভাবে জানতে পারবেন তা নয়, বরং বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমও চীন সম্পর্কে আরো বেশি প্রচার করতে পারবে । এটি হল পেইচিং অলিম্পিক গেমসের শ্লোগান " এক বিশ্ব এক স্বপ্ন"-এর বিষয়বস্তর সঠিকতা প্রমাণ হবে । স্কায়েফারও এ শ্লোগানের বিপুল প্রশংসা করেন। তিনি বলেন: "শ্লোগানটি খুবই চমত্কার। আধুনিক অলিম্পিকের জনক পিয়েরে দ্য কুবার্তিনের চেতনার সঙ্গে এটি পুরোপুরি মিলে যায় । অলিম্পিক গেমস শুধু মাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়। অলিম্পিক গেমসের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণ-তরুণীরা মিলেমিশে একসাথে উত্সব কাটান। তাদের জন্য অলিম্পিক গেমস একটি আনন্দ-ঘন পার্টি। আমি আশা করি, পেইচিংয়ে এবারের অলিম্পিক গেমস আয়োজনকালে বিভিন্ন দেশের তরুণ-তরুণীরা একসাথে প্রতিযোগিতা উপভোগ করবেন এবং একসাথে আড্ডা দেবেন , যা সকলের জন্য অবিস্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে । কোন দেশ বেশি স্বর্ণপদক পেয়েছে এবং কার অবস্থান কোথায় সেসবই শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে "পেইচিং অলিম্পিক গেমস--২০০৮"-এ চীন নিজের আতিথেয়তা সারা বিশ্বকে দেখাতে পারবে।"

    স্কায়েফার ডেকাথলন ইভেন্ট প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সেজন্য তিনি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অর্থ বেশি বুঝতে পারেন। তিনি বলেন, অলিম্পিক গেমস হচ্ছে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের একটি মিলন মেলা । প্রতিযোগিতায় নিশ্চয় জয়-পরাজয় আছে। প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজের স্বপ্ন নিয়ে অলিম্পিক গেমসে অংশ নেন। তবে চ্যাম্পিয়ন হন মাত্র একজন। সেটা সকল খেলোয়াড়ের জন্য সত্যি সহজ কাজ নয়।

    পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ অনেক জার্মান খেলোয়াড়ের স্বপ্ন। স্কায়েফার বলেন, ৪৫০জন খেলোয়াড়কে নিয়ে গঠিত অলিম্পিক গেমসের জার্মান প্রতিনিধি দল এবং ২০০জন প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়কে নিয়ে গঠিত প্রতিবন্ধী দল পৃথক পৃথকভাবে পেইচিং অলিম্পিক গেমসে এবং প্রতিবন্ধী অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবে। ফিল্ড হকি, নারী ফুটবল, ফেন্সিং, হর্সম্যানশীপ, ইয়টিং , ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড এবং সাঁতারসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় জার্মানি শক্তিশালী। তিনি এবারের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে জার্মান দল যাতে ভাল নৈপুন্য দেখতে পারে সে জন্য শুভ কামনা করেন। তিনি বলেন: " আমি পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রতীক্ষায় আছি। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সকল মানুষের মনে নিশ্চিতভাবে গভীর ছাপ ফেলবে।"--ওয়াং হাইমান