v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-08-02 20:07:08    
চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও বিদেশী তথ্য মাধ্যমগুলোকে যৌথ সাক্ষাত্কার দিয়েছেন(ছবি)

cri

     ১ আগস্ট চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও পেইচিংয়ে ২৫টি বিদেশী তথ্য মাধ্যমকে যৌথ সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। পেইচিং অলিম্পিক গেমস এবং চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

  'পেইচিং অলিম্পিক গেমস চীনা জনগণের এবং একই সঙ্গে তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণেরও। আমি চীন সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বন্ধুদের চীনে এসে পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়া এবং দেখার জন্য স্বাগত জানাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে সাক্ষাত্কার নেয়ার জন্যও স্বাগত জানাই।'

    ১ আগস্ট সকালে বিভিন্ন মহাদেশের সাংবাদিকদের সামনে হু চিন থাও তাঁর উষ্ণতম 'উদ্বোধন বানী' দিয়ে সাক্ষাত্কার অনুষ্ঠান শুরু করেন। এবারের অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক দেশের সর্বোচ্চ নেতা তাঁর আন্তরিক অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, অলিম্পিক গেমস বিশ্বের এক পঞ্চমাংশ জনসংখ্যার অধিকারী দেশ চীনে আয়োজন করা হচ্ছে চীনের ওপর বিশ্বের আস্থা এবং বিশ্বকে চীনের দেয়া অবদানের স্বীকৃতি। ২০০১ সালে চীন অলিম্পিক গেমস আয়োজনের অধিকার পাওয়ার পর থেকে চীন সরকার ও জনগণ সবসময় সুষ্ঠুভাবে নানা ধরণের প্রস্তুতিমূলক কাজ করে আসছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজের দেয়া প্রতিশ্রুতি অর্থাত্ একটি বৈশিষ্ট্যময় ও উচ্চ মানের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

    গত সাত বছর ধরে নানা ক্ষেত্রে পেইচিং যে প্রয়াস চালিয়েছে, তা বিভিন্ন পক্ষের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এখনো কিছু কিছু দেশ রাজনৈতিক বিষয়কে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। ভারতের সংবাদদাতার অলিম্পিক গেমসকে রাজনীতিকরণ করা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে হু চিন থাও বলেন, 'আমরা মনে করি, অলিম্পিক গেমসের রাজনীতিকরণ কেবল সমস্যার সমাধানের জন্য প্রতিকুল নয়, বরং অলিম্পিক চেতনারও লঙ্ঘন, পাশাপাশি তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষাকেও লঙ্ঘন করেছে। এর ফলে অলিম্পিক ক্রীড়ার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। অলিম্পিক গেমস হচ্ছে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের গৌরব ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের খোলা মঞ্চ এবং বিভিন্ন দেশের জনগণের সমঝোতা ও মৈত্রী বাড়ানোর প্লাটফর্ম। আমাদের ইচ্ছা মাত্র একটি, তা হচ্ছে পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে সারা বিশ্বের একটি ক্রীড়া মহা সম্মিলনী হিসেবে ভালোভাবে আয়োজন করবো, বিভিন্ন দেশের জনগণ পাঁচ রিং পতাকার নিচে মিলিত হয়ে অলিম্পিক চেতনাকে আরো সমৃদ্ধ ও উজ্জ্বলতর করবে।'

   'এক বিশ্ব, এক স্বপ্ন' হচ্ছে এবারের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের স্লোগান। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদদাতার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় হু চিন থাও এ স্লোগানের ব্যাখ্যা করে বলেন, 'এ স্লোগান আমাদের আন্তরিক আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ। তা হচ্ছে চীনা জনগণ বিভিন্ন দেশের জনগণের সঙ্গে অলিম্পিক চেতনার আহবান বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করার মধ্য দিয়ে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক ক্রীড়ার নতুন অধ্যায় উন্মোচন এবং মানবজাতির জন্য আরো সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টি করতে ইচ্ছুক।'

     অলিম্পিক গেমস চীনের অর্থনীতির ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, এ বিষয়ও তথ্য মাধ্যমের দৃষ্টি কেড়েছে। তথ্য মাধ্যমগুলো মনে করে, অলিম্পিক গেমস চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু সুযোগ বয়ে আনবে। কিন্তু এ বছর চীনের অর্থনীতি কঠোর চ্যালেঞ্জ ও গুরুতর পরীক্ষা-নীরিক্ষার শিকার হয়েছে। যেমন এ বছরের প্রথম দিকে দক্ষিণ চীনের তুষার ঝড়-ঝন্জা আর সিছুয়ানের ভয়াবহ ভূমিকম্প। চলতি বছরের প্রথমার্ধে চীনের জিডিপি ১০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিবেশে চীনের অভ্যন্তরীন অর্থনীতি আরো বিরাট চ্যালেঞ্জ ও কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। রয়টার্সের সংবাদদাতা প্রশ্ন করেছেন, অলিম্পিক গেমসের পর চীন কীভাবে অভ্যন্তরীন ও বহির্বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে? এ সম্পর্কে হু চিন থাও বলেন, 'নিষ্ঠার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত উন্নয়ন তত্ত্ব কার্যকর, অর্থনীতির স্থিতিশীল ও অপেক্ষাকৃত দ্রুত উন্নয়ন বজায় রাখা এবং পণ্য মূল্যের দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করাকে সামষ্টিক নিয়ন্ত্রণের প্রধান কর্তব্য হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। আমরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটানা সংস্কার আরো গভীরতর করবো। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমরা রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারসহ সার্বিক সংস্কারও ত্বরান্বিত করবো।'

     পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮ উদ্বোধন হতে আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দশ লাখেরও বেশি খেলোয়াড় পেইচিংয়ে সম্মিলিত হয়ে নিজেদের অলিম্পিক স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন। অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক দেশের শীর্ষ নেতা হিসেবে হু চিন থাও বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের শুভ কামনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন,

  'স্বাগতিক দেশ হিসেবে আমরা আন্তরিকভাবে কামনা করি, বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়গণ প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জন করবেন। আমি আশা করি, চীনের খেলোয়াড়গণও বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন। তারা যৌথভাবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট অবদান রাখবেন।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)