v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-08-01 18:46:32    
চীনের 'একচেটিয়া বিরোধী আইন'–এর নানা দিক

cri

    চীনের 'অর্থনৈতিক সংবিধান' বলে অভিহিত 'একচেটিয়া বিরোধী আইন' ১ আগস্ট থেকে চালু হয়েছে। এই আইনের মধ্য দিয়ে চীনের একচেটিয়া বিরোধী মৌলিক নীতি ও বিষয়াবলী নির্ধারিত হয়েছে। অর্থনৈতিক একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এই আইনের মাধ্যমে প্রশাসনিক একচেটিয়াকেও স্পষ্টভাবে 'না' বলা হবে। এখন চীনের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ এই আইন কার্যকরের নানা প্রস্তুতির কাজ করছে। দেশি-বিদেশী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও বাস্তব কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে এ আইনকে সমর্থন করছে। 

  'একচেটিয়া বিরোধী আইন' গবেষণা পর্যায় থেকে বাস্তবে কার্যকর হতে ১৪ বছর সময় লেগেছে। এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট, তা হচ্ছে একচেটিয়া কার্যকলাপ প্রতিরোধ ও দমনের মাধ্যমে বাজারে ন্যায়সংগত প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা এবং ভোক্তাদের স্বার্থ এবং সামাজিক গণ স্বার্থ রক্ষা করা। গত বছর আগস্ট মাসে আইনটি প্রকাশের পর জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান উ পাং কুও বলেন, 'চীনের রাষ্ট্রী এবং বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একচেটিয়া বিরোধী কার্যক্রমের কল্যাণকর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতি এবং চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংগতি বিধানের মাধ্যমে 'একচেটিয়া বিরোধী আইনটি তৈরি করা হয়েছে। এটা হচ্ছে একচেটিয়া প্রতিরোধ ও দমন এবং ন্যায়সংগত প্রতিন্দ্বন্দ্বিতাকে উৎসাহিত ও ত্বরান্বিতকরণ বিষয়ক একটি আইন।'

    'একচেটিয়া বিরোধী আইন'-এর দুটি লক্ষণীয় বিষয় আছে। একটা হচ্ছে আইন অনুযায়ী, চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ একচেটিয়া বিরোধী কমিটি ও একচেটিয়া বিরোধী আইন সংক্রান্ত বিশেষ নির্বাহী সংস্থা গঠন করবে। এই দুটি সংস্থা পৃথক পৃথক একচেটিয়া বিরোধী আইনের সমন্বয় ও কার্যকরকরণের কাজ করবে। ইতোমধ্যে চীনের জাতীয় শিল্প ও বাণিজ্য প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা সাধারণ ব্যুরোর অধীনে 'একচেটিয়া বিরোধী ও অসংগত প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা বিষয়ক নির্বাহী ব্যুরো' গঠন করা হয়েছে।

    রাষ্ট্রীয় পরিষদের উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের গত বছরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনের ২৮টি প্রধান শিল্পের মধ্যে ২১টি শিল্পে বিদেশী পুঁজি নিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠানকে একীভূত বা অধিগ্রহণের ভিত্তিতে বিদেশী পুঁজি চীনে প্রবেশ করছে। এর মধ্যে কিছু কিছু বিদেশী শিল্প প্রতিষ্ঠান বাজার দখলের সুবিধা অপব্যবহার করে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে চীনের বিদগ্ধ সমাজ ও বাণিজ্য মহল অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এ কারণে 'একচেটিয়া বিরোধী আইনে' বিদেশী পুঁজির শিল্প প্রতিষ্ঠান চীনের কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হলে কিংবা অধিগ্রহণ করলে একচেটিয়া বিরোধী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উভয় ক্ষেত্রে যাচাই করিয়ে নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। প্রচলিত আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রণীত এই বিধান হচ্ছে চীনের একচেটিয়া বিরোধী আইনের আরেকটি ভালো দিক।

   'একচেটিয়া বিরোধী আইন'-এর ভোক্তাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। চীনে টেলিযোগাযোগ, রেলগাড়ি ও বিদ্যুত্সহ নানা সেবাশিল্পের 'একচেটিয়া দাম' চীনের জনসাধারণের আরেকটি মাথাব্যথার কারণ। পরিকল্পনা অর্থনৈতিক যুগ থেকে চালু থাকা প্রশাসনিক একচেটিয়া মোকাবেলায় 'একচেটিয়া বিরোধী আইনে' বিশেষ করে প্রশাসনিক ক্ষমতা অপব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি পরিচ্ছেদ আছে। রাষ্ট্রীয় পরিষদের আইন কার্যালয়ের পরিচালক ছাও খাং থাই বলেন, 'একচেটিয়া বিরোধী আইন হচ্ছে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে একটি পেশাগত ও মৌলিক আইন। প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে চীনের দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ।'

    আইনটি চালু হওয়ার আগে, চীনের বাণিজ্য মহল আইনটির প্রশংসা করেছে ও স্বীকৃতি দিয়েছে এবং বাস্তব কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। চীনের সেরা বিয়ার শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিংতাও বিয়ারের প্রেসিডেন্ট চিন ছি কুও আমাদের সংবাদদাতাকে বলেন, 'বিশ্বের একের ভেতরে সকল অর্থনীতির উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় একচেটিয়া চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সামর্থ্যকে দুর্বল করবে। একচেটিয়া ব্যবস্থা চালু থাকলে নিজের যেমন লাভ নেই তেমনি অন্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে 'একচেটিয়া বিরোধী আইন' দিয়ে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতার শৃঙ্খলা নিয়মমাফিক করা উচিত। বিশেষ করে আমাদের মতো বিয়ার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিন্দ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে বড় হওয়া উচিত। এতে ভোক্তারাও লাভ পাবে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)