v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-24 16:18:21    
নেপালে সরকার গঠন সংকটে গভীর

cri
 ২৩ জুলাই বিকেলে রাম বরণ যাদব নেপালের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। এরপর অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী গিরিজা প্রাসাদ কৈরালা রাম বরণ যাদবের কাছে তার পদত্যাগ পত্র পেশ করেছেন। অস্থায়ী সরকার ইতোমধ্যে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নেপালে দীর্ঘ রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন সরকার গঠনের পথ সুগম হয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাংবিধানিক পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল নেপালের মাওবাদী কমিউনিষ্ট পার্টির প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় তারা নতুন সরকার গঠনে জানিয়েছে এবং এর ফলে দেশটির সরকার গঠন এক গভীর সংকটে পড়েছে।

    শপথ গ্রহণ শেষে যাদব বলেন, তিনি প্রজাতন্ত্রের সাংবিধানিক কাজে আত্মনিয়োগ করবেন, প্রজাতন্ত্রের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করবেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে মতৈক্য প্রতিষ্ঠা, দেশের ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত করা এবং সমাজের শান্তি ও সম্প্রীতিময় উন্নয়ন নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছন।

    অস্থায়ী সরকার ভেঙ্গে দেওয়ার পর নতুন সরকার গঠনের আগে পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রি সভা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। এখন রাম বরণ যাদবের প্রথম কর্তব্য হলো নতুন সরকার গঠন সম্পন্ন করা। কিন্তু নতুন সরকর আদৌ সুষ্ঠুভাবে গঠিত হবে কিনা কিংবা কতোদিন পরে হবে তা এখনও অনিশ্চিত।

    চলতি বছরের ২৮ মের সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত নেপালের সাংবিধানিক পরিষদের প্রথম অধিবেশনে রাজতন্ত্র বাতিল করা এবং নেপালকে ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়। নেপালের মাওবাদী কমিউনিষ্ট পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সাংবিধানিক পার্লামেন্টের বৃহত্তম দলে পরিণত হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাংবিধানিক পরিষদের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বৃহত্তম দল জোটবদ্ধ হয়ে সি পি এন মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করে। ২২ জুলাই সি পি এন'র কেন্দ্রীয় কমিটি একটি সম্মেলনে জানিয়েছে, নেপালী কংগ্রেস এবং অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দল জোট করায় সাংবিধানিক পার্লামেন্টে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন তাদের, তাই সি পি এন নতুন সরকার গঠনে অংশ নেবে না এবং পার্লামেন্টে বিরোধী দল হিসেবে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু তিনটি দলীয় জোট যদি শেষ পর্যন্ত ভেঙ্গে যায়, তাহলে সি পি এন'এর নতুন সরকার গঠনের সম্ভাবনা এখনো বাতিল করে দেওয়া যায় না।

    নেপালের অন্যতম নেপালী কংগ্রেসের উদ্যোগে ২৩ জুলাই একটি রাজনৈতিক সম্মেলনে বর্তমান সংকট সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সরকার গঠন সমস্যা নিয়ে মতৈক্য হয়নি।

    সাংবিধানিক পরিষদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল নেপালী কংগ্রেসের প্রতিনিধি বিমালেন্দ্র নিধি সম্মেলনের পর বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য তিনটি দলীয় জোট গঠন করা হয়। সম্মিলিতভাবে যৌথ সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে জোটে কোনো আলোচনা হয় নি। নেপালী কংগ্রেসের মুখপাত্র অর্জুন নরসিং কে সি বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিন দলীয় জোটের আরেকটি লক্ষ্য হলো সি পি এনকে জানিয়ে দেওয়া যে, রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক নিয়ম ও প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত্। কিন্তু নতুন সরকার গঠন সমস্যায় নেপালী কংগ্রেস সি পি এনকে সম্মান দেখাবে। তিনি আশা করেন, সি পি এন অব্যাহতভাবে নতুন সরকার গঠন ও নেতৃত্ব দেবে। নেপালী কংগ্রেস এই সমস্যায় কোন বাধা সৃষ্টি করবে না।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও সাংবিধানিক পরিষদে তিন ভাগের এক ভাগ আসনে বিজয়ী সি পি এনের অবস্থান নেপালের রাজনৈতিক অঙ্গনে অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সি পি এন বিরোধী দলে পরিণত হলে নেপালের শান্তি প্রক্রিয়া এক ধাপ পিছিয়ে যাবে। ফলে নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো জটিল হবে। কারণ অস্থায়ী সংবিধান অনুযায়ী নতুন সরকারের কার্যমেয়াদ ২০১০ সাল পর্যন্ত। এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো নেপালের নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা। নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার জন্য সাংবিধানিক পরিষদের দুই তৃতীয়াংশের বেশি প্রতিনিধির সমর্থন প্রয়োজন। এর অর্থ হলো, সি পি এন'র সমর্থন ছাড়া নতুন সংবিধান গৃহীত হবে না।

    নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক লোক রাজ বড়াল বলেন, নেপালের শান্তি প্রক্রিয়া সঠিক পথে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে যে কোন উপায়ে সি পি এনকে সরকার গঠনে রাজি করতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতভেদ দিন দিন বাড়ছে। ২০০৫ সালে গঠিত ৮ দলীয় জোট এখন প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে। এই রাজনৈতিক জোট আর পুনরুদ্ধার হবে কিনা এবং দলগুলোর মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠবে কিনা তা নিশ্চিত হতে হলে আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। (লিলি)