v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International Tuesday Apr 8th   2025 
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-22 22:21:45    
অলিম্পিক গেমসের আয়োজন শহরের ভাবমূর্তি উন্নয়নে সহায়ক

cri

    ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস হচ্ছে 'আধুনিক অলিম্পিকের জনক' পিয়ের দ্য কুবার্তিনের জন্মভূমি। তাঁর প্রভাবে প্যারিস যথাক্রমে ১৯০০ ও ১৯২৪ সালে দু'বার গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস আয়োজন করে। যদিও এ দুটি অলিম্পিক গেমস ফরাসীদের অতি প্রাচীন স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। তবু প্যারিসের পর্যটন মহল অলিম্পিক গেমস থেকে যে বিপুল সুযোগ তৈরি হয়েছিল তা কোনো দিন ভুলবে না।

    পল রোল হচ্ছেন প্যারিসের পর্যটন ব্যুরোর মহাপরিচালক। তিনি মনে করেন, সমৃদ্ধ পর্যটন সম্পদ হচ্ছে একটি দেশ বা একটি শহরের পর্যটন শিল্পের ভিত্তি। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, বিশেষ করে অলিম্পিক গেমসের মতো বড় ধরনের গেমসের আয়োজন হচ্ছে শহর তথা গোটা দেশের প্রভাব ও শক্তি সম্প্রসারণের শ্রেষ্ঠ উপায়। তিনি বলেন, 'সকল বড় ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্যোক্তা শহরকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার শ্রেষ্ঠ সুযোগ এনে দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও পরস্পরকে জানার ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্বাগতিক শহর ক্রীড়ার বাইরেও নিজের আকর্ষণীয় শক্তি প্রদর্শন করে।'

    রোল বলেন, প্যারিসে দু'বার অলিম্পিক গেমস আয়োজনের যুগে টেলিযোগাযোগ ও গণ মাধ্যম সবই অনুন্নত ছিলো। তখন বেশির ভাগ মানুষ বিদেশ ভ্রমণের মাধ্যমে বহির্বিশ্বকে জানতেন। অলিম্পিক গেমসে অংশ গ্রহণ ভ্রমণের জন্য খুব ভালো উপলক্ষ। ১৯২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক গেমসে পাঁচটি মহাদেশের ৪৪টি দেশ থেকে তিন হাজারেরও বেশি খেলোয়াড় এসেছিলেন। খেলোয়াড়রা স্বদেশ ফিরে যাবার পর প্যারিসে নিজের দেখাও শোনার অভিজ্ঞতা স্বাভাবিকভাবে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকে জানিয়েছিলেন। তারা প্যারিসের প্রচারকে পরিণত হয়েছিলেন। বর্তমানে তথ্য প্রচারের পদ্ধতি যেমন অনেক উন্নত হয়েছে তেমনি প্রচার মাধ্যমের সংখ্যাও বেড়েছে বিপুল পরিমাণে। বিদেশের কিছু কিছু অচেনা ছোট শহরও গণ মাধ্যমের সাহায্যে সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠতে পারে। সারা বিশ্বের তথ্য মাধ্যমের নিবিড় রিপোর্টিংয়ে অলিম্পিক গেমসের আয়োজক শহর সকলের দৃষ্টিতে 'সুপার তারকায়' পরিণত হয়। তিনি বলেন,  'বড় ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা একটি শহর বা একটি দেশের ভাবমূর্তি প্রচারের জন্য অভাবনীয় ভূমিকা পালন করে। বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি মানুষ বিদেশে যেতে পারে এবং বিদেশী পণ্য কিনতে পারে। ফলে অলিম্পিক গেমসের মতো বিশ্ব প্রতিযোগিতার আয়োজক হওয়ার অধিকার পাওয়ার বিশেষ মূল্য রযেছে।'

    রোল মনে করেন, প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াও শহরের ভাবমূর্তি উন্নত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। কারণ অলিম্পিক গেমসের প্রায় সব স্বত্ত্বই থাকে আয়োজক শহরের। তা ছাড়া শহর নির্মাণেরও সময়সীমা আছে। এর ফলে শহরের উন্নয়ন দ্রুততর হয়। তিনি বলেন,  'অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক শহরের অভ্যর্থনার সামর্থ্যও বাড়ে। যেমন অবকাঠামো ও স্টেডিয়ামগুলোর নির্মাণ কাজ ইত্যাদি। অলিম্পিক গেমস উদ্বোধনের একটি নির্ধারিত সময় আছে বলে সকল প্রস্তুতি কাজ এই নির্ধারিত সময়ের আগে সম্পন্ন করতে হয়। এর ফলে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের সময়ের কার্যকারিতা অনেক বেশি।'

    রোল স্মৃতি চারণ করে বলেন, ১৯২৪ সালের অলিম্পিক প্রস্তুতির সময় প্যারিস অনেক কঠিন সমস্যার মধ্যে পড়েছিল। আর্থিক ঘাটতি ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। ১৯২৩ সালে সেনা নদীতে বন্যা হয়েছিল। অলিম্পিক গেমসের আগে ফ্রান্স সারা দেশের শক্তি প্রয়োগ করে অভূতপূর্ব কার্যকারিতা দেখিয়ে সুষ্ঠুভাবে অলিম্পিক গেমস আয়োজন করে।

    রোল জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্যারিস পর পর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে। যেমন ১৯৯৮ সালের বিশ্ব কাপ ফুটবল, ২০০৩ সালের বিশ্ব ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড চ্যাম্পিয়নশীপ এবং ২০০৭ সালের রাগবি বিশ্ব কাপ। এই প্রতিযোগিতাগুলো থেকে প্যারিস যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, সেটা পেইচিংয়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারে।

   'প্যারিস আইফেল টাওয়ার ও পার্কে বড় স্ক্রীন বসিয়ে ক্রীড়া অনুরাগীদের জন্য একটি বিনিময় প্ল্যাটফর্ম ও বিজয় উদযাপনের মঞ্চ স্থাপন করেছে। এ ধরনের সকল নাগরিকদের অংশগ্রহণ ভিত্তিক তত্পরতা খুব বেশি একটা নেই। পরে প্যারিস পৌর সরকার প্রতিযোগিতার মাঠের বাইরের দর্শকদের জন্যও একটি বিনিময় প্ল্যাটফর্মও নির্মাণ করেছে। এর মাধ্যমে মাঠের ভিতর ও বাইরের দর্শকরা একসাথে প্রতিযোগিতার আনন্দ উপভোগ করতে পারে।'

    রোল বলেন, প্রতিযোগিতার সময় প্যারিসে আসা বিদেশী পর্যটকরা এ পদ্ধতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা এর মাধ্যমে প্যারিসবাসীর সঙ্গে খুব কাছ থেকে যোগাযোগ করতে পেরেছে। যদিও তারা প্যারিসবাসীর মতো ফরাসী দলকে সমর্থন করে না। তবু এটা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে যে উত্সবের আবহ তৈরি হয়, তা নষ্ট করে না।

 'আমরা জরিপ থেকে জেনেছি যে, প্যারিসে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন বা দেখেছেন, এমন পর্যটকদের মধ্যে অধিকাংশই সন্তুষ্ট। কারণ তারা প্রতিযোগিতার জন্য প্রাণবন্ত ও আনন্দময় প্যারিস দেখেছেন। যদিও বিদেশী পর্যটকরা আর প্যারিসবাসীর মধ্যে ভাষার সমস্যা রয়েছে, কিন্তু তাদের অভিন্ন আলোচ্য বিষয় আছে বলে হাতের ভঙ্গী, চেহারার অভিব্যক্তি ও কাগজে খেলোয়াড়দের ছবির সাহায্যে পরস্পরকে বোঝতে পারেন।'

    সাক্ষাত্কার শেষে রোল আমাদের সংবাদদাতার মাধ্যমে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রতি তাঁর শুভ কামনা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'অলিম্পিক গেমসের আয়োজন এক বিরল সুযোগ। চীন বিশ্বের কাছে চীনের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি প্রদর্শন করতে পারবে। আমি বিশ্বাস করি, চীন এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে।' (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China