v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-22 20:15:45    
বিদেশি মশালবাহক সি চৌ রেনের কাহিনী

cri

    চীনে এখন পেইচিং অলিম্পিকের মশাল হস্তান্তর চলছে । ফু চিয়া প্রদেশে মশাল হস্তান্তরে ৬২৪ জন মশালবাহক অংশ নিয়েছেন । তাদের মধ্যে একজন বিদেশি প্রবীন সবার দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন । তিনি হলেন এদারল্যান্ডস থেকে আসা একজন চীন বিশেষজ্ঞ , তার চীনা নাম হল সি চৌ রেন । চীনে ৩০ বছর ধরে আছেন সি চৌ রেন । চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বিনিময় ত্বরান্বিত করার জন্য নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি ।

    ১৯৩৪ সালে সি চৌ রেন সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি চীনা সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করতে চীন আসেন । তাও ধর্মের গবেষণা ও ধর্ম এবং মানবজাতি নিয়ে গবেষণা ক্ষেত্রে তিনি খুব বিখ্যাত এবং অভিজ্ঞ । তিনি জানিয়েছেন :

    কারণ আমার নামে চৌ রেন এর অর্থ হল মাঝি , মাঝি যাত্রী পারপার করে । তাই মাঝি হিসেবে দু'পক্ষের সঙ্গে বিনিময় করতে হয় । দু'পক্ষের বিনিময়ের অর্থ এখনই বন্ধ হওয়া নয় । বন্ধু হওয়া নিশ্চয়ই খুব সুন্দর এবং ভালো ব্যাপার। তবে মাঝে মাঝে দু'পক্ষের মধ্যে ঝগড়াও হয়। তারপরও বিভিন্ন সংস্কৃতির বিনিময় মানবজাতিকে সুন্দর ভবিষ্যত এনে দেবে ।

    সি চৌ রেন যে "দু'পক্ষের বিনিময়" -এর কথা উল্লেখ করেছেন , তার অর্থ হল চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বিনিময় । ২৮ বছর বয়সী সি চৌ রেন তার প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রী আর্জন করেন । ফ্রান্সের উচ্চ পর্যায়েররাষ্ট্রীয় একাডেমী থেকে তিনি সাহিত্যে ডক্টরেট ডিগ্রী পান । পরে তিনি ফ্রান্সের ফার ইস্ট একাডেমীর গবেষক , ফ্রান্সের উচ্চ একাডেমীর শীর্ষ পর্যায়ের প্রফেসর , নেজারল্যান্জসের রাষ্ট্রীয় লেইটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ইতিহাসের প্রফেসর ও নেদারল্যান্ডসের রয়্যাল একাডেমীর একাডেমিশিয়ান ছিলেন । সাধারণ মানুষ মনে করে , সি চৌ রেনের ইউরোপে থাকা উচিত । কারণ সেখানকার গবেষণার পরিবেশ ও জীবনযাত্রার মান চীনের চেয়ে ভালো । তবে সি চৌ রেনের মত হচ্ছে , প্রাচীন চীন এবং এর রহস্যময়তা তার কাছে অনেক আকর্ষণীয় । চীনের এই আকর্ষণী শক্তি তার জীবনের পথ পদলে দিয়েছে ।

    আরো বেশি চীনাকে পশ্চিমা দেশগুলোর সংস্কৃতি উপলব্ধি করতে সাহায্য করার জন্য ২০০৩ সালে সি চৌ রেন ফু চৌ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছেন । এ কেন্দ্রে তিনি ও তার চীনা স্ত্রী প্রফেসর ইউয়ান বিং লিং একসঙ্গে চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বিনিময় ত্বরান্বিত করার জন্য কাজ করছেন। সি চৌ রেনের স্ত্রী ইউয়ান বিং লিং সংবাদতাদাকে জানিয়েছেন :

    আমরা যে কাজ করছি , তার উদ্দেশ্য হল সংস্কৃতির শিখা হস্তান্তর করা । আমরা আট , দশ অথবা ডজন খানেক ভাষার মাধ্যমে চীনের সংস্কৃতির শিখা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবো । এ হিসেবে সি চৌ রেন হলেন একজন সাংস্কৃতিক দূত ।

    ২০০৪ সালে সি চৌ রেন চীনের রাষ্ট্রীয় মৈত্রী পুরস্কার পেয়েছেন । এ পুরস্কার হলো চীনে থাকা বিদেশিদের চীন সরকারের জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কার । ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে সি চৌ রেন আজীবন চীনে থাকার অধিকার পেয়েছেন । চীনা সংস্কৃতি প্রেমী এমন একজন বিদেশির জন্য এটা অবশ্য সর্বোচ্চ স্বীকৃতি । চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে তার গবেষণা এর জন্যও আরো দীর্ঘস্থায়ী এবং আরো গভীর হবে । এমন অনুভূতি এবং তার উল্লেখযোগ্য অবদানের কারণে সি চৌ রেন পেইচিং অলিম্পিকের একজন মশালবাহক হওয়ার সম্মান পেয়েছেন । হয়েছেন । এ সম্পর্কে তিনি বলেন :

    এক বিশ্ব , এক স্বপ্ন , এ স্লোগান আমার মনে হয় খুব ভালো । তাই তারা একজন বিদেশি হওয়া সত্বেও আমাকে মশালবাহক হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন এবং আমি সব চীনা বন্ধুর সঙ্গে এ কাজে অংশ নিতে পেরেছি । আমার কাছে এর গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে ।

    আমাদের সংবাদদাতা সি চৌ রেনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি কোন বিশেষ কারণে মশালবাহক হয়েছেন ? সি চৌ রেনের উত্তর তাকে মুগ্ধ করেছে । সি চৌ রেন বলেন :  

    আমি চীনা বন্ধুদের পক্ষ থেকে মশালবাহক হয়েছি এবং মশাল হস্তান্তর করেছি ।

    সাক্ষাত্কার শেষে সি চৌ রেন বিশেষভাবে সি আর আইয়ের মাধ্যমে সব শ্রোতা বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন , তিনি বলেন :  

    সি আর আইয়ের শ্রোতা বন্ধুরা , আপনারা সবাই ভালো আছেন ? আমার নাম সি চৌ রেন , আমি আশা করি আপনারা সবাই আলিম্পিক এ অনুষ্ঠানের ওপর দৃষ্টি রাখবেন । কারণ এটা হল সারা বিশ্বের একটি বিরাট অগ্রগতি ।