১৬ জুলাই চীনে জাতিসংঘের কয়েকটি সংস্থা পেইচিংয়ে চীনের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণে সিছুয়ান প্রদেশের ওয়েন ছুয়ান ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন কাজে সহায়তা বিষয়ে আলোচনা করেছে। সম্মেলনে জাতিসংঘ সংস্থাগুলো বিভিন্ন দেশকে পরবর্তী ছয় মাসে চীনের ওয়েন ছুয়ান ভয়াবহ ভূমিকম্পের পুনর্গঠন কাজে সহায়তার জন্য ৩ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলারের আর্থিক সাহায্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিন অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে চীনে অবস্থিত জাতিসংঘের কয়েকটি সংস্থা চীনের সিছুয়ান ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন কাজের বাজেট প্রকাশ করেছে এবং পরবর্তী ছয় মাসে নয়টি ক্ষেত্রে দুর্গতদের জন্য সার্বিক সাহায্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বসতি স্থানান্তর, পানি ও স্বাস্থ্য, চিকিত্সা,শিক্ষা , সুবিধাপঞ্চিত জন গোষ্ঠীকে সুরক্ষা ,পরিবেশ, সংখ্যালঘু জাতিসহ ৯টি ক্ষেত্র। চীনে ইউনিসেফের প্রতিনিধি ,জাতিসংঘ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের চেয়ারম্যান মাদাম ইন ইন নওয়ে বলেছেন, (১)
৩ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলারের আর্থিক সাহায্য পরবর্তী ছয় মাসে সিছুয়ান ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষের পুনর্বাসন কাজে ব্যয় হবে।এর মধ্যে স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ ৯টি ক্ষেত্র রয়েছে। এটি দুর্গত এলাকায় মাঝারি মেয়াদী সাহায্য এবং দীর্ঘ মেয়াদী সাহায্যের প্রথম ধাপ। এ সাহায্যের আহ্বান জানানোর পর জাতিসংঘ চীন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দুর্গত এলাকার আরো দীর্ঘ মেয়াদী পুনর্গঠন পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।
১২ মে চীনের সিছুয়ান প্রদেশের ওয়েনছুয়ান জেলায় রিখটার স্কেলে আট মাত্রার ভূমিকম্প হয়। বর্তমানে ভূমিকম্পের নিহতের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। এতে প্রায় ৫০ লাখ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ভূমিকম্প দুর্গত এলাকার আয়তন এক লখ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি। এটি হলো ১৯৪৯ সাল নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের সবচেয়ে ভয়াবহ,বৃহত্তম ভূমিকম্প একই সঙ্গে এর উদ্ধার ও ত্রাণ কাজও অত্যন্ত কঠিন ও কষ্টসাধ্য। ভূমিকম্পের পর পুনর্গঠনের কাজ খুব কঠিন। ব্যাপক অর্থ দেয়া ছাড়া বিদেশের শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি ও পরিচালনার অভিজ্ঞতা শেখাও খুবই দরকার।
এ পর্যন্ত জাতিসংঘ চীনে ১ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের সাহায্য দিয়েছে। চীনে অবস্থিত জাতিসংঘের কয়েকটি সংস্থার সমন্বয় কর্মকর্তা মা হো লি বলেছেন, সিছুয়ান প্রদেশের ওয়েন ছুয়ান ভূমিকম্পে চীনের বিপুল মানুষ হতাহত হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জাতিসংঘ দুর্গত এলাকার পুনর্গঠনের জন্য প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা শিক্ষায় সমর্থন করতে আগ্রহী। তিনি বলেন,(২)
চীন সরকার তিন বছরে সিছুয়ান ,কানসু ও শানসিসহ বিভিন্ন ভূমিকম্প এলাকার পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করার কথা ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘ চীনকে প্রযুক্তির যোগান দেয়া ও শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা ও পদ্ধতি ব্যাখ্যা করার জন্য চীনের পুনর্গঠনের কাজে সমন্বয়ের ভূমিকা পালন করতে ইচ্ছুক।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে বিরাট অভিজ্ঞতা রয়েছে। জাতিসংঘ ২০০৫ সালে পাকিস্তানের ভূমিকম্প এবং ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসে উদ্ধার ও ত্রাণের অভিজ্ঞতা চীনের পুনর্গঠন ও নির্মাণ সমন্বয়ের কাজে ব্যবহার করছে। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চীনের সিছুয়ান ভূমিকম্প পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় যোগদানকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
এর আগে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিদের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে বলেছেন, চীন সরকার ভূমিকম্প উদ্ধার ও ত্রাণের প্রক্রিয়ায় মানুষকে প্রাধ্যান্য দেয়া ও বিশ্বমুখীণতাকে বরাবরই সমর্থন দেয়। চীন সারা দেশের জনগণের প্রচেষ্টায় দুর্গতদের জন্য পুনর্গঠনের কাজে সাহায্য দেবে। এর পাশাপাশি চীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পক্ষের সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছে।(লিলু)
|