v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-16 15:59:35    
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মন কষাকষির নেপথ্যে কি

cri
    সম্প্রতি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এ দুই'প্রতিবেশী দেশের মধ্যে টানপড়েন শুরু হয়েছে । দু'দেশের ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্ক এখন অবনতির দিকে । বিশ্লেষকদের ধারণা , এর প্রধান কারণ হল যুক্তরাষ্ট্রের চাপ , যা থেকে বোঝা যায় আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়া ।

    আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ১৪ জুলাই একটি বিবৃতিতে বলেছেন , সম্প্রতি আফগানিস্তানে যে একের পর এক বোমা হামলা এবং ব্যাপক প্রানহানির ঘটনা ঘটছে তার সবই পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পিত । এ সম্পর্কে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৫ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেছে , আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই-এর অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই । তার লক্ষ্য হল দু'দেশের সম্পর্কে সংকট সৃষ্টি করা এবং নষ্ট করা ।

    পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে মন কষাকষি আগেও ছিল । ১৫ জুন কারজাই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন , আফগানিস্তানের সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানের তালিবান জঙ্গীদের আঘাত হানার অধিকার আছে । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি এ কথার প্রতিক্রিয়ায় বলেন , পাকিস্তান একটি সার্বভৌম দেশ । কাউকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যপারে এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করার অনুমোদন দেওয়া হবে না । ১৬ জুন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তান নিযুক্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূতের কাছে একটি প্রতিবাদ লিপিও দিয়েছে এবং আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে । ৮ জুলাই আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন , বিভিন্ন ঘটনা থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে , আফগানিস্তানে ভারতীয় দূতাবাস কাছের আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনায় ঘটেছে । তথ্য মাধ্যমের ধারণা , মুখপাত্র যে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কথা ইঙ্গিত করেছেন সেটি পাকিস্তানের । গিলানি অবশ্য একথা নাকচ করে দিয়েছেন । জাতিসংঘে দু'দেশের মধ্যে টানাপড়েন বন্ধ হয় নি । ৯ জুলাই দু'দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভাষণ দেয়ার সময় নিজ দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছেন ।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন , আফগানিস্তানের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এত কঠোর মনোভাবের পেছনে নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আছে । যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রতি নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে । মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুঁজি বিনিয়োজিত রান্ড করপোরেশন গত মাসে এক রিপোর্টে বলেছে , পাকিস্তানের কিছু গোয়েন্দা কর্মী ও সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন প্রতিরক্ষা বাহিনী সরাসরি তালিবান ও অন্যান্য জঙ্গীদের সমর্থন দেয় । তা ছাড়া , পাকিস্তানের নতুন সরকার শপথ গ্রহণের পর পরই তালিবানদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে এবং শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে । এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র খুবই অসন্তুষ্ট । এমনকি পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালানোর কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্র । মার্কিন যৌথ বাহিনীর প্রধান মাইক মুল্লেন ২ জুলাই বলেন , তালিবান বা আল-কায়েদার নেতাদের পাকিস্তানে থাকার তথ্য পেলে মার্কিন বাহিনীর পাকিস্তানে প্রবেশ করে সামরিক অভিযান চালানোর অধিকার আছে । তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী গিলানি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার বার বলেছেন যে , বিদেশি বাহিনীকে পাকিস্তানে সন্ত্রাস দমনের অনুমোদন দেওয়া হবে না ।

    তথ্য মাধ্যম লক্ষ্য করেছে যে , প্রতিবার আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির বড় পরিবর্তন ঘটলেই আফগানিস্তান পাকিস্তানকে অভিযোগ করছে । ১৩ জুন কারজাই পাকিস্তান প্রবেশ করে তালিবানদের দমন করার কথা বলার পর এ দিন গভীর রাতে আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে তালিবানরা একটি কারাগারের ওপর বড় আকারের হামলা চালিয়েছে , কিছু পুলিশ এতে নিহত হয়েছে । ১ হাজারেরও বেশি বন্দী পালিয়ে গেছে , তাদের মধ্যে ৪ শ'রও বেশি তালিবান সদস্য । কারজাই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে যে আফগানিস্তানের হামলায় অংশ নেয়ার অভিযোগ তোলার আগে আফগানিস্তানে ধারাবাহিক হামলাও ঘটেছে ।

    তবে তথ্য মাধ্যমের ধারণা , এ দু'দেশের সন্ত্রাস দমনের অভিন্ন স্বার্থ আছে , তাই দু'দেশের সম্পর্কের অবনতি হবে না । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী গিলানি সম্প্রতি আফগানিস্তানকে দর কষাকষি বন্ধ করে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর আহবান জানিয়েছেন । (শুয়েই ফেই ফেই)