v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-15 16:36:34    
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

cri

আপনারা পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন। এখন শুনবেন আজকের প্রতিবেদন, পরিবেশন করছি আমি…

আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে । দু'টি বিষয়ে এই অবনতির লক্ষণ স্পষ্ট। একটি হচ্ছে সশস্ত্র তালিবান যোদ্ধাদের সঙ্গে আফগানিস্তানে বিদেশী সেনাবাহিনী ও আফগান সৈন্যদের গুলি বিনিময় দিন দিন বাড়ছে। অন্যটি হচ্ছে আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরণ । সম্প্রতি ধারাবাহিকভাবে আত্মঘাতি বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং এর ব্যাপকতা অব্যাহতভাবে বাড়ছে । এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে কেবল যে বাইরের বিভিন্ন পক্ষ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন তাই নয়, খোদ মার্কিন সৈন্যরাও আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে পড়েছে।

১৩ জুলাই ছিল আফগানিস্তানের জন্য একটি নিষ্ঠুর দিন। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুনার প্রদেশে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা বাহিনী এদিন ভোরে সশস্ত্র জঙ্গীদের হামলায় শিকার হয়। পুরো একদিন গুলি বিনিময়ের পর সশস্ত্র জঙ্গীরা হটে যায় । তবে এতে ন্যাটোর ৯জন সৈন্য নিহত এবং ১০ জনেরও বেশি আহত হয়। নিহত সৈন্যদের নাগরিকত্ব প্রকাশিত হওয়ার পর ন্যাটোর একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিহতরা সবাই মার্কিন সৈন্য। এটি গত তিন বছরে আফগানিস্তানে কোনো একক হামলার ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মার্কিন সৈন্য হতাহত হওয়ার ঘটনা। এ পর্যন্ত আফগানিস্তানে মোট ৪৭০ জন মার্কিন সৈন্য নিহত হয়েছে । একই দিন আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের উরুজগান প্রদেশে স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে সংঘটিত একটি আত্মঘাতি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ২৪ জন নিহত এবং আরও ৩৫ জন আহত হয় । নিহতের মধ্যে ৫ জন পুলিশ রয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় হেলমান্দ প্রদেশের মারজা অঞ্চলের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ৩০ সশস্ত্র তালিবানের হামলা শিকার হয়। দু'পক্ষের গুলি বিনিময় ১৪ জুলাই ভোর পর্যন্ত চলে। এ ছাড়া, ৭ জুলাই রাজধানি কাবুলে আফগানিস্তানে ভারতের দুতাবাসের কাছে একটি আত্মঘাতি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ৪১জন নিহত এবং এক শ'রও বেশি মানুষ আহত হয়। এটি হচ্ছে ২০০১ সালের পর আফগানিস্তানের রাজধানি কাবুলে সংঘটিত সবচে' ভয়াবহ হামলা।

জনমত রয়েছে যে, আফগানিস্তান মার্কিন ও ন্যাটোর সেনাবাহিনীর ইরাককে চেয়েও বিপদজনক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। গত জুন পর্যন্ত আফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যদের নিহত হওয়ার সংখ্যা পরপর দুই মাস ইরাকে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। গতবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের হামলা ঘটনা ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে , বর্তমানে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা গুরুতর হুমকির মুখে পড়েছে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র জঙ্গীদের হামলা এক বছর আগের চেয়ে অনেক জটিল রূপ নিয়েছে। মার্কিন স্টাফ প্রধানদের যৌথ সম্মেলনের চেয়ারম্যান মাইক মুলেন গত সপ্তাহে কাবুল সফরের সময় হুমকি দিয়েছেন যে, পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় বহু বিদেশী সশস্ত্র জঙ্গী রয়েছে। এর মধ্যে আল কায়েদার সদস্যরাও রয়েছেন। তারা সীমান্ত পার হয়ে মার্কিন ও আফগান সেনাবাহিনীর ওপরে হামলা করবে।

সশস্ত্র জঙ্গীদেরকে মোকাবিলার জন্য আফগানিস্তানে বিদেশী সেনাবাহিনী আক্রমণের শক্তি জোরদার করেছে। হেলমান্দ প্রদেশে ১২ জুলাই সশস্ত্র জঙ্গীদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে নির্মূলীকরণ অভিযান চালায়। এতে ৪০ জনেরও বেশি সশস্ত্র যোদ্ধা নিহত হয়। তবে এতে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি মোটেও ভালোর দিকে মোড় নেয়নি, বরং দিন দিন আরো খারাপ হচ্ছে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে, সেখানে মোতায়েন মার্কিন সৈন্য যথেষ্ট নয়। আফগানিস্তানে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এখন আফগানিস্তানে কমপক্ষে আরও ১০ হাজার মার্কিন সৈন্য দরকার।

আফগানিস্তানের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির আরেকটি লক্ষণ হলো বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়ার ক্রমবর্ধমান সংখ্যা । --ওয়াং হাইমান